আলো থেকে পানি বাষ্পীভবনের প্রক্রিয়া আবিষ্কার

তথ‌্যপ্রযু‌ক্তি ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৫:৪১| আপডেট : ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৬:১৭
অ- অ+

শক্তির যেমন কোনো ধ্বংস বা বিনাশ নাই তেমনি পানি ব্যবহারে ও পানির কোনো কমতি বা বাড়তি নাই । আদিকালে পানির পরিমাণ যা ছিল এখনো তাই আছে । শুধু ভূপৃষ্ঠ থেকে বায়ুমন্ডলে কিছু পানি যায় আবার বৃষ্টিরুপে ভূপৃষ্ঠে ফিরে আসে । বাষ্পীভবন প্রক্রিয়ায় পানিকে তাপের মাধ্যমে বাষ্পে পরিণত করা হয়। এ কাজের জন্য সূর্যের আলো বিরাট ভূমিকা রাখে। পানি বাষ্পীভূত হলে চারপাশ শীতল হয় । আবার একই ভাবে বায়ুমন্ডলে জলীয়বাষ্পের ঘনত্ব বাড়লে চারপাশের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। পানিচক্র সংঘটিত করে মূলত সৌর শক্তি। পৃথিবীতে বাষ্পীভূত হওয়া পানির ৮৬ শতাংশই সমুদ্রের পানি, যা পৃথিবীর তাপমাত্রা শীতল রাখতে অবদান রাখে।

সম্প্রতি ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির (এমআইটি) একদল বিজ্ঞানী আবিষ্কার করেছেন, কোনো রকম তাপ ছাড়াই শুধু আলো ব্যবহার করে পানি বাষ্পীভবন করা সম্ভব। এই প্রক্রিয়াটির নাম ‘ফটোমোলিকুলার ইফেক্ট’। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ইনডিপেনডেন্ট এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, মেঘ কীভাবে সূর্যের কাছ থেকে বেশি আলো শোষণ করে, তা নিয়ে বহু বছর ধরে বিভ্রান্তিতে রয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এই নতুন আবিষ্কারের ফলে প্রায় ৮০ বছরের পুরনো একটি রহস্যের সমাধান হতে পারে।

পারডু ইউনিভার্সিটির মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপক শিউলিন রুয়ান বলেন, তাপের পরিবর্তে আলোর মাধ্যমে পানির বাষ্পীভবন হওয়ার প্রক্রিয়াটি পানি ও আলোর মিথস্ক্রিয়া সম্পর্কে আমাদের নতুন জ্ঞানের সন্ধান দেবে। এই আবিষ্কার সত্যিই অসাধারণ। সূর্যের আলো কীভাবে মেঘ, কুয়াশা, সাগর, মহাসাগর ও অন্যান্য জলাশয়ের পানির ও আবহাওয়াকে প্রভাবিত করে, তা সুনির্দিষ্টভাবে জানতে এই আবিষ্কার সহায়তা করবে।’

গবেষকেরা জানিয়েছেন, এই আবিষ্কার জলবায়ু পরিবর্তন, আবহাওয়ার পূর্বাভাস, বিশুদ্ধ পানির প্রাকৃতিক উপাদান ইত্যাদি বিষয়ে জানতে নতুন দুয়ার উন্মোচন করবে।

গবেষণার সঙ্গে জড়িত এমআইটি অধ্যাপক গ্যাং চেন বলেন, ‘আমরা এই গবেষণার বিভিন্ন দিক নিয়ে ভেবেছি। এটি নিঃসন্দেহে মৌলিক বিজ্ঞানকে প্রভাবিত করবে। এর মাধ্যমে জলবায়ুর ওপর মেঘের প্রভাব সম্পর্কে বিশদ জানা যাবে।’

‘ফটোমোলিকুলার ইফেক্ট: ভিজিবল লাইট ইন্টারফেস উইথ এয়ার-ওয়াটার ইন্টারফেস’ শীর্ষক গবেষণা প্রবন্ধটি ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেসে (পিএনএএস) প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণা প্রবন্ধটিতে বলা হয়েছে, বিজ্ঞানীরা এই গবেষণার জন্য ১৪টি সুনির্দিষ্ট বিষয়ে শ্রমসাধ্য পরীক্ষা–নিরীক্ষা চালিয়েছেন। এরপর নিশ্চিত হয়েছেন যে, দৃশ্যমান আলোর বর্ণালী থেকে ফোটনগুলো বাতাসের সংস্পর্শে আসা পানির ক্লাস্টারগুলোকে ‘ছিন্ন’ করতে পারে।

গবেষণায় বিভিন্ন পরিস্থিতিতে চারটি ভিন্ন ধরনের পরীক্ষায় ধারাবাহিকভাবে প্রদর্শিত হয়েছিল, তা হল দৃশ্যমান আলোর অধীনে একটি পরীক্ষার পাত্র থেকে পানি বাষ্পীভূত হতে শুরু করার সাথে সাথে, পানির পৃষ্ঠের উপরে পরিমাপ করা বাতাসের তাপমাত্রা ঠান্ডা হয়ে যায় এবং তারপরে সমান হয়ে যায়, যা দেখায় যে তাপ শক্তি প্রভাবের পিছনে চালিকা শক্তি ছিল না।

বিস্ময়কর নতুন আবিষ্কারে বছরের পর বছর ধরে সূর্যের আলো কীভাবে মেঘকে প্রভাবিত করে তার রহস্যময় পরিমাপ ব্যাখ্যা করতে সাহায্য করতে পারে। তবে এটি মেঘের আবরণ এবং বৃষ্টিপাতের উপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের গণনাকে প্রভাবিত করে। সৌর-চালিত ডিস্যালিনেশন বা উপকরণ শুকানোর মতো শিল্প প্রক্রিয়াগুলো ডিজাইন করার নতুন উপায়ের দিকে নিয়ে যেতে পারে।

(ঢাকাটাইমস/২৭ এপ্রিল/আরজেড)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
উত্তরায় প্রাইভেটকারসহ দুই অপহরণকারী গ্রেপ্তার
প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে নতুন ঘর পেল চার জেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৩০০ পরিবার
ঈদের আগেই আসছে নতুন নোট, নকশায় থাকছে জুলাই অভ্যুত্থানের গ্রাফিতি
টাঙ্গাইলে ৫ বছরেও অসমাপ্ত ব্রিজের নির্মাণকাজ! ঠিকাদার লাপাত্তা ৬ মাস 
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা