দুধমুখা নার্সারিতে বাহারি রঙের ফুলের হাসি

মোকাররম হোসেন পিয়াস, (দাগনভূঞা) ফেনী
  প্রকাশিত : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৯:৫৫| আপডেট : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১১:১৭
অ- অ+

ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার দুধমুখা নার্সারিতে গোলাপ, গাঁদা, ডালিয়া, কসমস, পিটুনিয়া, সেলফিয়া, পিঞ্জি, চন্দ্রমল্লিকা, স্নোবল, ডানিংটাচ, সূর্যমুখী, কোটালিকা, ল্যান্টানা, নয়নতারা, পঞ্চটিয়া, লিলিয়ানসহ বাহারি রঙের ফুল ফুটেছে। এরমধ্যে রয়েছে লাল, হলুদ, বেগুনি, সাদা, গোলাপি রঙের ফুল।

শীতের দেশি-বিদেশি ফুলগুলোর নামের মতোই তাদের রং-রূপও আলাদা। শৌখিন ক্রেতারা ফুলের চারা নিয়ে যাচ্ছেন নিজবাড়িতে। ঘরের শোভা বাড়াতে শৌখিন মানুষ আসছেন ফুলের চারা কিনতে। এ যেন নার্সারি নয়, ফুলের বাগান।

নার্সারির মালিক হুমায়ুন কবির জানান, ২০২২ সালের মার্চে ১৪ লাখ টাকা পুঁজি দিয়ে ১০ শতাংশ জায়গার লিজ নিয়ে এই নার্সারি গড়ে তোলেন। ফুল ফোটা ৮০০ টব ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে এখানে।

দুধমুখা নার্সারিতে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের গাছ ও চারা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, পিটুনিয়া, ইনকা গাঁদা, সেলফিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, পয়েন সুর্চিয়া, কাটা মুকুট, মালা গাঁদা, কালার বাগানবিলাস, চায়না টগর, কাঠগোলাপ, থাই জবা, চায়না রঙ্গন, জাপানি রঙ্গন, বিভিন্ন জাতের গোলাপ, জুঁই, বেলী, কাশ, গাঁদা, পদ্ম, এস্টার, কম্বেশান, রাঁধাচূড়া, কসমস, পিঞ্জি, স্নোবল, ডানিংটাচ, কোটালিকা, ল্যান্টানা, নয়নতারা, পঞ্চটিয়া, লিলিয়ান।

ফলের চারার মধ্যে রয়েছে, মিয়াজাকি আম, কিউজাই আম, বুনাই কিং, থাই কচমিচা, ব্যাল্কস্টোন, আম্রপলি, ব্যানানা মাংগো, বারি-৪, বারি-১, ভিয়েতনাম মাল্টা, পয়সা মাল্টা, থাই জাম্বুরা, থাই পেয়ারা, কাজী পেয়ারা, মাধুরী পেয়ারা, আপেল কুল, থাই কুল, গ্লোবেল কুল, থাই তেঁতুল, থাই আমড়া, মিষ্টি করমচা, চাইনিজ পেয়ারা, থাই আতা, থাই কাঁঠাল, থাই সফেদা, স্ট্রবেরি পেয়ারা, অ্যাবাকাডো, লংগান, থাই আমলকি, স্টার আপেল।

নার্সারিতে ঢুকতেই দোকানি বলে যাচ্ছিলেন বিভিন্ন ফুল ও ফলের নাম। শীতের ফুল দেখে ক্রেতার মুখে হাসি দেখা দিলেও তা নার্সারির মালিক ও শ্রমিকদের মুখে হাসি ফোটাতে পারছে না। ফুলগুলোকে সুন্দর দেখাতে নিয়মিত পানি দিতে হয়। যত্ন করতে হয়। একবার ফুল ঝরে গেলে তখন সেই চারা বিক্রি হয় না। আবার ফুল ফোটার জন্য অপেক্ষা করতে হয়। কেন না গাছে ফুল না দেখলে ক্রেতাদের মন ভরে না। এত সব করার পরও যে পরিমাণ বিক্রি হয়, তাতে লাভ বেশি থাকে না। শীতের নির্দিষ্ট ফুলগুলোর দেখা মেলে না শীতের পরে। অথচ অন্যান্য চারা সারা বছর বিক্রি করা যায়। তাই পুরোটাই ‘লস প্রজেক্ট’। এসব চারা ছোট পলিপ্যাকে এবং ফুল ফোটাগুলো পাওয়া যায় টবে।

বিক্রেতা জানালেন, পলিপ্যাকের চারার গড়পড়তা দাম প্রতিটি ২৫ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে। বড় চারার দাম ফুল ও ফলের জাত, আকার আকৃতির ওপর নির্ভর করে।

দুধমুখা নার্সারির শ্রমিক আবুল হোসেন জানালেন, পঞ্চটিয়া দামি ফুল। সবুজ পাতার ওপরেই লাল রঙের এই ফুল ৫-৭শ’ টাকাতেও বিক্রি হয় অনেক সময়। এ ছাড়া শীতের সময় গোলাপ, ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা বেশ বিক্রি হয়।

তিনিও কিছুটা আক্ষেপ নিয়েই বললেন, শীতে ব্যবসা ডাউন থাকে। যা বিক্রি করি, তা শ্রমিকদের খরচসহ অন্যান্য খরচ মেটাতেই চলে যায়।

নার্সারি দেখতে আসা দাগনভূঞা উজ্জীবক আর্ট স্কুলের প্রশিক্ষক গিয়াস উদ্দিন ভূঁঞা বলেন, আমি প্রতিদিন বাড়িতে যাওয়া-আসার পথে বেশ কয়েক বার আসি। এখানে আসলে মনটা ভালো হয়ে যায়।

নার্সারি থেকে ফুল গাছ কিনতে আসা শারমিন আক্তার বলেন, আমাদের বাড়ি পার্শ্ববর্তী উপজেলা কোম্পানীগঞ্জ। আমরা ফুল দেখতে এসেছি যাওয়ার সময় পছন্দমত কিনে নিয়ে যাবো।

নার্সারি থেকে ফুলের চারার পাশাপাশি মরিচ, লেটুসপাতা, বেগুন, কমলা, মালটা, পেঁপেসহ বিভিন্ন চারা কিনেও বাড়ি ফিরছেন অনেকে।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল-মারুফ জানান, বাংলাদেশের অন্য কোথাও এরকম ফুলে চোখ জুড়ানো নার্সারি আছে কি না আমার জানা নেই। তবে এই উপজেলার অন্য কোথাও কেউ যদি এরকম নার্সারি স্থাপন করতে চান, তাদেরকে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/১৪ফেব্রুয়ারি/প্রতিনিধি/জেডএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ঢাকার যেসব মার্কেট ও দোকানপাট বন্ধ থাকবে আজ
ঢালিউডের ‘মহানায়ক’ মান্নাকে হারানোর ১৭ বছর
মানুষের কিছু ভুলে বাড়ছে অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসার! জানুন, সাবধান হোন
ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে ঘন কুয়াশায় পাঁচ গাড়ির সংঘর্ষ, আহত ২০
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা