দেশ এখন বহুমুখী সংকটে: নুর

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২১:৫৯ | প্রকাশিত : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২১:৪৫

গণতন্ত্র-ভোটাধিকার, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ভিনদেশি আধিপত্য ও আগ্রাসন বিরোধী সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে গণঅধিকার পরিষদ।

শুক্রবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে শেষে বিক্ষোভ মিছিলটি প্রেসক্লাবের সামনে থেকে শুরু হয়ে পল্টন মোড়, দৈনিক বাংলা মোড়, ফকিরাপুল, নয়াপল্টন ও নাইটিংগেল মোড় ঘুরে বিজয়নগর পানির ট্যাংকির মোড়ে এসে হয়।

সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুলহক নুর বলেন, বাংলাদেশ এখন বহুমুখী সংকটে পতিত। একদিকে দীর্ঘদিনের ভারতীয় আগ্রাসন। এদেশে কারা সরকারে থাকবে, বিরোধী দল কারা হবে। কে এমপি-মন্ত্রী হবে, কে প্রশাসনের শীর্ষ পদে নিয়োগ পাবে, তা ঠিক করে দেয় ভারত। আজ সর্বত্র ভারতীয় আধিপত্য। ভারতীয় আগ্রাসন থেকে দেশকে রক্ষায় ভারতীয় পণ্য বর্জনের যে আন্দোলন চলছে, তা শহর থেকে গ্রাম, পাড়া-মহল্লা সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে হবে। পাশাপাশি এদেশের সবচেয়ে বড় ভারতীয় প্রডাক্ট আওয়ামী লীগকে বর্জন করতে হবে। বাংলাদেশে থাকা ভারতীয় এজেন্টদের চিহ্নিত করতে হবে।

নুর দাবি করেন, দেশে ১০ লাখের বেশি অবৈধ ভারতীয় লোক রয়েছে, তাদেরকে চিহ্নিত করতে হবে। ভারতের পাশাপাশি এখন সমস্যা তৈরি করছে চীন। রাখাইনে চীন-ভারত বিনিয়োগ করেছে। তারা জান্তা সরকারকে সহযোগিতা করছে, বিদ্রোহীদের সাথেও যোগাযোগ রাখছে। অথচ রোহিঙ্গা প্রত্যাবসনে বাংলাদেশকে কোনো সহযোগিতা করছে না।

গণঅধিকার পরিষদ নেতা আরও বলেন, সরকারের নৈতিক ভিত্তি না থাকায় অন্য দেশগুলো পাত্তা দিচ্ছে না বরং তাদের স্বার্থে ব্যবহার করছে। ভারত তাদের স্বার্থে বিনা ভোটের জনবিচ্ছিন্ন এই সরকারকে সমর্থন দিচ্ছে। বাংলাদেশকে নিরাপত্তা ঝুঁকিতে ফেলে নামমাত্র ফিতে ট্রানজিট নিয়ে ভারত তার পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোয় পণ্য পরিবহন করছে। কোনো দেশপ্রেমিক মানুষ এভাবে দেশকে ঝুঁকিতে ফেলে অন্য দেশকে সুবিধা দেবে না। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকতে ভারতকে সব দিচ্ছে। জাফরুল্লাহ চৌধুরী অনেক আগেই বলেছিলো বাংলাদেশের উচিত হবে রোহিঙ্গাদের অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের দেশে পাঠানো। এখন মনে হচ্ছে সেটাই সঠিক।

নুর বলেন, ১৫ বছর টানা ক্ষমতায় থাকার পর এখন প্রধানমন্ত্রীও বলছেন, চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে। চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা কারা করছে? সরকারি দলের নেতা-কর্মী ও স্থানীয় প্রশাসন। মাদক যুব সমাজকে গ্রাস করছে। ১৫- ২৫ বছরের ৪১% তরুণ পড়াশোনা বা চাকরিতে নেই, অর্থনৈতিক সংকট থেকে দেশকে উত্তরণ, ইউরোপ-আমেরিকার পোশাকের ক্রেতা কমছে, নতুন বাজার খোঁজা, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি, এগুলো নিয়ে সংসদে আলোচনা হয় না। সংসদ এখন ভোটডাকাতদের ক্লাবে পরিণত হয়েছে। জনগণকে নিয়ে তাদের ভাবনা নেই। তারা আছে টাকা-পয়সা কামানোর ধান্দায়।

দলের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন বলেন, আজকাল সরকার জনগণকে কথায় কথায় হাইকোর্ট দেখায়। কিন্তু হাইকোর্ট দেখিয়ে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখা যাবে না। সবকিছুর শেষ আছে, ফেরাউন- হিটলারেরও পতন হয়েছে। সুতরাং আপনাদেরও বিদায় নিতে হবে। বিদেশি প্রভূরা আপনাদের রক্ষা করতে পারবে না। আওয়ামী লীগের ভারতীয় তাবেদারগিরির কারণে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব আজ হুমকির মুখে। সুতরাং দেশের সকল দেশপ্রেমিক জনগণের উচিত ভারতীয় তাবেদার মুক্ত বাংলাদেশ গড়া। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্যাম্পেইন চলছে, ভারতীয় পণ্য বর্জন করুন। যাদের মধ্যে দেশপ্রেম আছে, তারা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে শামিল হতে অবশ্যই ভারতীয় পণ্য বর্জন করবে। আমরা পাকিস্তানকে শত্রু মনে করি, আর ভারতকে বন্ধু মনে করি। কিন্তু আসল শত্রুকে চিহ্নিত করার সময় এসেছে। ভারত চায় না বাংলাদেশ এগিয়ে যাক, যেকারণে বাংলাদেশকে ব্যর্থ ও পঙ্গু রাষ্ট্র বানানোর সমস্ত নীলনকশা আওয়ামী লীগের মাধ্যমে করছে। কিন্তু দেশপ্রেমিক জনগণ তা বুঝতে পেরেছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের পরে যখন থেকে আমাদের রাজনৈতিক সংগ্রাম শুরু হয়েছে, আমরা ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার আছি। ভারতের জনগণের এনআরসি ও সিএএ বিরোধী আন্দোলনের সময় আমরা সংহতি জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আন্দোলন শুরু করলে, এদেশীয় ভারতীয় এজেন্টরা আমাদের হত্যার চেষ্টা করে। আজকে অলিতে গলিতে ভারতীয় এজেন্ট। লাখ লাখ ভারতীয়রা টুরিস্ট ভিসায় এসে অবৈধভাবে চাকরি করে কোটি কোটি ডলার নিয়ে যাচ্ছে। একারণে প্রেসক্লাবে একটি সচেতন মহল, যেখানে সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা ও আইনজীবীরা রয়েছেন; তারা ভারত খেদাও, বাংলাদেশ বাঁচাও আন্দোলন শুরু করেছে। ভারতকে বলবো, আওয়ামী লীগের সাথে একপাক্ষিক সম্পর্ক না করে এই দেশের জনগণের সাথে সম্পর্ক করুন। অন্যথায় ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জনগণের আন্দোলন থামাতে পারবেন না।

গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রবিউল হাসানের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন দলের উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, শহিদুল ইসলাম ফাহিম, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক তোফাজ্জাল হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি নাজিম উদ্দিন, উত্তরের সভাপতি মিজানুর রহমান, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন, সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসান, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান, ছাত্র অধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তারিকুল ইসলাম প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/১৬ফেব্রুয়ারি/জেবি/এসআইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

ভাগ-ভাটোয়ারার গণ্ডগোলে বেনজীরের দুর্নীতি সামনে এসেছে: রিজভী

বিএনপিকে ধ্বংস করতে গিয়ে আ.লীগই শেষ হয়ে যাচ্ছে: সালাম

দুর্নীতি নিয়ে সরকারদলীয় লোকদের ওপর ঢালাও অভিযোগ করার সুযোগ নেই: হানিফ

স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির সঙ্গে বিএনপির গভীর আঁতাত রয়েছে: ওবায়দুল কাদের

বিএনপি ক্ষমতায় এলে আ.লীগের একটা লোকও মারা যাবে না: গয়েশ্বর

আমরা বঙ্গবন্ধুর অবদানকে কখনো অস্বীকার করি না: মির্জা ফখরুল

ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা প্রদর্শনে যাচ্ছে বিএনপি 

জিয়ার শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে উত্তরা পশ্চিম থানা বিএনপির কাপড় বিতরণ

আগ্রাসন ও গণতন্ত্র হত্যার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষ রুখে দাঁড়াচ্ছে: ১২ দলীয় জোট

কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া ও দেবিদ্বার উপজেলায় ফের নির্বাচন চান পরাজিত ৩ প্রার্থী

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :