ছয় ঘণ্টার বৃষ্টিতে ফের তলিয়ে গেছে সিলেট নগরী
টানা দুই দিন সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও ছয় ঘণ্টার টানা বৃষ্টিতে ফের তলিয়ে গেছে নগরী। এতে বিপাকে পড়েছেন নগরবাসী। বিশেষ করে নিচু এলাকার বাসিন্দারা চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন। অনেকের বাসা-বাড়িতে হাঁটু থেকে কোমর সমান পানি দেখা গেছে।
সিলেট আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, রবিবার সকাল ৬টা থেকে সোমবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে ২২৬ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রবিবার রাত ১২টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। রাত ১২টার পর থেকে শুরু হয় বৃষ্টিপাত, যা একটানা ছয় ঘণ্টা চলে।
গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে সৃষ্ট বন্যা সিলেটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত অবস্থায় রয়েছে। তবে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় গত দুই দিন থেকে নদ-নদীর পানি কিছুটা কমতে শুরু করে। যার ফলে সার্বিক পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতির দিকে ছিল। তবে রবিবার রাত থেকে বৃষ্টিপাতের কারণে ফের পানিতে তলিয়ে যায় নতুন নতুন এলাকা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরীর সোবহানীঘাট, উপশহর, তালতলা, জামতলা, শেখঘাট, ঘাসিটুলা, বেতের বাজার, শামীমাবাদ, বাগবাড়ি, ছড়ারপাড়সহ অধিকাংশ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে।
টানা বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে সুরমা নদীর পানি উপচে নগরীতে প্রবেশ করায় এ পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।
এদিকে মধ্যরাতে বাসাবাড়িতে পানি প্রবেশ করায় চরম বিপাকে পড়েন নগরীর বাসিন্দারা। অনেকেই নিরাপদ আশ্রয়ে গেলেও ঘরের আসবাবপত্রসহ জিনিস রক্ষা করতে পারেননি। এতে বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন নগরবাসী।
নগরীর শামীমাবাদ এলাকার বাসিন্দা জাহিদুল হক বলেন, মধ্যরাতে বাসার মধ্যে পানি ঢুকে পড়ে। এতে ঘরের সব আসবাবপত্র ডুবে যায়। খাটের ওপর বসে সারা রাত কাটাতে হয়েছে।
নগরীর বাগবাড়ি এলাকার বাসিন্দা আবু সাদাত মাহি বলেন, বর্ষা মৌসুম আসলেই বিপদ মাথার ওপর চেপে বসে। রাত ১২টা পর্যন্ত সবকিছু স্বাভাবিক ছিল। এরপর বৃষ্টি শুরু হলে পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকে। রাত তিনটার সময় বাসায় কোমর সমান পানি ঢুকে যায়।
তিনি বলেন, স্ত্রী-সন্তানদের অন্য বাসায় নিরাপদে পৌঁছাতে পারলেও ঘরের কোনো আসবাবপত্র রক্ষা করা যায়নি। সবকিছু পানিতে ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসেন বলেন, সিলেটে আজ সোমবারও বৃষ্টিপাতের আভাস রয়েছে।
সিলেট জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, বন্যায় সিলেট সিটি করপোরেশনের ৯টি ওয়ার্ডসহ ৬৮ ওয়ার্ড প্লাবিত হয়েছে। এতে ৭ শতাধিক গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। রবিবার পর্যন্ত বন্যা আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ছিল ৬ লাখেরও বেশি।
(ঢাকাটাইমস/০৩জুন/ইএস)