রক্তে অর্জিত ভাষাকে বিদেশি আগ্রাসন থেকে রক্ষা করতে হবে: শিবির সভাপতি

​​​​​​​নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২০:১৫

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা মহান শহীদ দিবস উপলক্ষে রাজধানীসহ সারা দেশে আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল, ক্রীড়া প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে ইসলামী ছাত্রশিবির। রক্তে অর্জিত বাংলা ভাষাকে বিকৃতি ও বিদেশি আগ্রাসনের হাত থেকে

বুধবার বিকালে ছাত্রশিবির চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর শাখার উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, প্রিয় মাতৃভাষা বাংলা জাতির জন্য মহাগৌরবের। কেননা বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে মাতৃভাষার অধিকার আদায় করেছে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানরা। পৃথিবীর ইতিহাসে ভাষার জন্য জীবন দিয়ে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে শুধু বাংলাদেশেই। এই ত্যাগ বিশ্বজুড়ে স্বীকৃতি লাভ করেছে। ফলে শুধু বাংলাদেশ নয় বরং সারা বিশ্বে আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সমাদৃত।

ছাত্রশিবির সভাপতি বলেন, বাংলা এখন পৃথিবীর ষষ্ঠ বৃহত্তম ভাষা। অন্যদিকে ভাষাকে কেন্দ্র করে বিশ্বের মানচিত্রে একটি জাতির অভ্যুদয় হয়েছে, সেই দেশটিও বাংলাদেশ। ভাষা আন্দোলন অর্জন বিশ্ব দরবারে জাতিকে সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে গেছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে এই অর্জন আজ নানা কারণে ম্লান হয়ে যাচ্ছে। আর তা হচ্ছে এ দেশের মানুষ দ্বারাই।

মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, ভাষা আন্দোলনের শীর্ষনেতা ভাষা সৈনিক অধ্যাপক গোলাম আযমকে রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্র করে হেনস্থা করা হয়েছে। অন্যান্য ভাষা সৈনিক, ভাষা শহীদের পরিবারের প্রতিও দারুন অবহেলা করা হচ্ছে। ভাষা সৈনিকদের আহ্বান দাবিকে অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে। অন্য দিকে রাষ্ট্রীয় পৃষ্টপোষকতায় বিজাতীয় সংস্কৃতির আমদানি প্রসার করে বাংলা ভাষাকে প্রতিনিয়ত অপমান করা হচ্ছে। বিকৃতিকারীরা জেনে বুঝে পরিকল্পিতভাবে ভিনদেশি ভাষার সঙ্গে আমার মায়ের ভাষার সংমিশ্রণ ঘটিয়ে একটি জগাখিচুড়ি ভাষার জন্ম দেওয়ার অপচেষ্টা করছে।

শিবিরের এই শীর্ষনেতা বলেন, নাটক, সিনেমা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে বাংলা ভাষাকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। বিদেশি সংস্কৃতির প্রভাবে আগামী প্রজন্মের বিরাট একটি অংশ আজ হিন্দি ভাষায় কথা বলা চালচলনে অভ্যস্ত হয়ে উঠছে। এটা জাতির জন্য অশনির সংকেত। এভাবে অপসংস্কৃতির জোয়ার বইতে থাকলে অচিরেই জাতি সত্তার মূল চেতনা হারিয়ে ফেলবে।

বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষায় গুরুত্ব দিয়ে মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, কিছু নির্দিষ্ট আনুষ্ঠানিকতা পালন করে ভাষার প্রতি রাষ্ট্র তার দায়িত্ব শেষ করতে পারে না। অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। পরিপূর্ণ ভাষানীতি ভাষা আইন প্রণয়ণ করা সময়ের দাবি। সর্বক্ষেত্রে বাংলা ভাষা শুদ্ধভাবে শেখা বলার জন্য নীতিমালা প্রণয়ন বাস্তবায়ন করতে হবে। সরকারি-বেসরকারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পণ্যের বিজ্ঞাপনে ভাষা প্রয়োগের ক্ষেত্রে অসচেতনতা কিংবা ইচ্ছা করে ভাষার অপপ্রয়োগ পরিহার করতে হবে।

‘ভাষা প্রতিযোগিতা আয়োজন করার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ভাষার শুদ্ধ প্রয়োগে অভ্যস্ত করে গড়ে তুলতে হবে। একইভাবে যার যার অবস্থান থেকে বিজাতীয় সংস্কৃতিকে প্রত্যাখ্যান করতে হবে। আত্মসম্মান রক্ষায় ইসলামী মূল্যবোধের ভিত্তিতে সংস্কৃতির লালন বিকাশ ঘটাতে হবে। তাহলেই শহীদের আত্মত্যাগ পূর্ণতা পাবে।’, বলেন শিবির সভাপতি।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে কর্মসূচি পালন করে ছাত্রশিবির। ঢাকা মহানগর পূর্ব, খুলনা মহানগর, কুমিল্লা মহানগর, সিলেট মহানগরসহ বিভিন্ন শহর জেলা শাখা আলোচনা সভা দোয়া মাহফিল, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, ফ্রি-ব্লাড গ্রুপিং ক্যাম্পেইন, পথশিশুদের মাঝে প্রাথমিক শিক্ষার বই উপহার প্রদানসহ বিভিন্ন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

(ঢাকাটাইমস/২১ফেব্রুয়ারি/জেবি/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :