ডেটা সেন্টারে আগুন নয়, পলকের মৌখিক নির্দেশেই বন্ধ হয় ইন্টারনেট: মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সারা দেশে ইন্টারনেট বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল সরকারি দুই সংস্থা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ও ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি)। তৎকালীন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক সরাসরি ফোন কল করে ইন্টারনেট বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তার মৌখিক নির্দেশে বন্ধ হয় ইন্টারনেট। এছাড়া ডেটা সেন্টারে আগুন লাগার সঙ্গে ইন্টারনেট বন্ধের কোনো সম্পর্ক ছিল না।
ইন্টারনেট বন্ধ নিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে এ সব তথ্য জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিষয়টি গণমাধ্যমে জানানো হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে একাধিকবার দেশব্যাপী মোবাইল ইন্টারনেট ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধ হয়। এতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়, তথ্যপ্রবাহ বন্ধের কারণে ভীতি ছড়িয়ে পড়ে এবং বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়। দেশব্যাপী মোবাইল ইন্টারনেট ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট শাটডাউনের কারণ এবং সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের নির্দেশে সোমবার সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি প্রাথমিক প্রতিবেদন দাখিল করেছে।
সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রথম দফায় গত ১৫ ও ১৬ জুলাই মোবাইল ফোনের ইন্টারনেট এবং গত ১৮ থেকে ২৩ জুলাই ও ৫ আগস্ট ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধ ছিল। এ সময় ইন্টারনেট বন্ধ ও চালু করার বিষয়টি ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রশাসনিক অনুমোদন ছাড়াই ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের মৌখিক নির্দেশক্রমে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন আহমেদের নির্দেশনায় সম্পন্ন করা হয়। অন্যদিকে, ১৭ থেকে ২৮ জুলাই পর্যন্ত এবং ৫ আগস্ট মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ ও চালু করার বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) নির্দেশনায় সম্পন্ন করা হয়।
প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ডেটা সেন্টারে আগুন লাগার সঙ্গে ইন্টারনেট বন্ধের কোনো সম্পর্ক ছিল না। ইন্টারনেট বন্ধের সঙ্গে ডেটা সেন্টার আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি সম্পৃক্ত করে প্রচারণার মাধ্যমে সাবেক প্রতিমন্ত্রী পলক জাতির সঙ্গে মিথ্যাচার ও প্রতারণা করেছেন।
ডাক ও রেলযোগাযোগ বিভাগের জনসংযোগ কর্মকর্তা শেফায়েত হোসেন জানিয়েছেন, ইন্টারনেট বন্ধের বিষয়ে প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর বর্তমানে অধিকতর তদন্ত চলমান রয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/১৩আগস্ট/কেএ/কেএম)