রাজধানীর রেস্তোরাঁগুলোতে নজর রাখা হচ্ছে: ডিবি
রাজধানীর বেইলি রোডে বহুতল ভবনে থাকা রেস্তোরাঁয় আগুন লেগে ৪৬ জনের মৃত্যুর পর নগরের আনাচে-কানাচে গড়ে ওঠা প্রতিটি রেস্তোরাঁয় নজরদারি শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। থানা পুলিশের পাশাপাশি কাজ করছে গোয়েন্দা পুলিশও। যথাযথ অগ্নি নিরাপত্তা ও জরুরি মুহূর্তে নিরাপদ বহির্গমনের পথ আছে তা দেখা হচ্ছে।
সোমবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, একটা ঘটনা ঘটার পরে আমরা শোক করি, জ্ঞান দেই। কিন্তু দায়িত্বরত সকল সংস্থা নিজেদের কাজ করলে আগুনে বেইল রোডসহ অতীতে যে সকল প্রাণহানি ঘটেছে সেগুলো দেখতে হচ্ছে না। তাই এবার ডিএমপির থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশ রাজধানীর বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় নজর রাখছে যথাযথ অগ্নি নিরাপত্তা ও দুর্ঘটনা ঘটলে জরুরি বের হওয়ার রাস্তা আছে কি না।'
বেইল রোডের ঘটনা উল্লেখ করে অতিরিক্ত কমিশনার হারুন বলেন, গ্রিন কোজি কটেজে আগুনের ঘটনায় আমাদের একজন পুলিশ কর্মকর্তার মেয়ে যিনি বুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন; সেসহ ৪৬ জন নিহত হয়েছে। এই এক আগুনে কত মায়ের কোল খালি হয়েছে। যার সন্তান মারা যায় সে শোক বোঝে। আমরা মারা যাওয়ার পরে শোক করি, কান্না করি। জ্ঞান দিই। আসলে আমাদের প্রতিটি সংস্থার যে দায়িত্ব আছে সেগুলো আমরা যদি পালন করতাম তাহলে আমার মনে হয় এমন ঘটনা হয় তো আর ঘটতো না। তাই এখন আমরা প্রতিটি রেস্তোরাঁয় খোঁজ খবর নিচ্ছি। ঢাকা শহরে এমন কোনো রেস্তোরাঁ আছে কি না যেগুলোতে অগ্নি নিরাপত্তা মানা হচ্ছে না। দ্রুত বের হওয়ার রাস্তা আছে কি না। বাতাস চলাচলের রাস্তা আছে কি না আমরা খোঁজ খবর নিচ্ছে। কোনো অনিয়ম পেলে আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করব।'
হারুন বলেন, এমন দুর্ঘটনার পেছনে তো গাফিলতি থাকেই। তবে কোনো ঘটনা ঘটার পরে আমরা সেটা (গাফিলতি) খুঁজি। নিয়মকানুন না মেনে যত্রতত্রভাবে ভবন বানানো হচ্ছে। এই সব ভবনের খোঁজ খবর যদি আগে থেকে নিয়ে রাখা হতো তাহলে এমন ঘটনা ঘটতো না। বঙ্গবাজার, নীমতলি, বনানীর এফ আর টাওয়ারে মতো এমন ঘটনা বারবার ঘটতো না।
কাচ্চি ভাই রেস্তোরাঁর বিষয়ে ডিবিপ্রধান বলেন, বেইল রোডে এই ভবনে এতোগুলো রেস্তোরাঁ চালানোর অনুমোদন ছিলো কি না। যে দোকনটিতে ২০ জন মানুষ বসার সুযোগ নেই অথচ সেখানে ৫০ জনকে ২০৫ ছাড় দিয়ে খাওয়ানো হচ্ছে। এখানে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে মানুষগুলো কীভাবে বের হবে। সিঁড়িতে গ্যাস সিলিন্ডার রাখা ছিলো। এই সব রেস্তোরাঁর অনুমোদন ছিলো কি না, ফায়ার সার্ভিস ঠিক মতো তদারকি করেছে কি না আমার জানা নেই। আর রুমগুলো এমনভাবে সাজিয়েছে যে বাতাস যাওয়ার সুযোগ ছিলো না। বাতাস চলাচলের রাস্তা থাকলে এতো প্রাণহানি হয়তো হতো না। এমন কি দুর্ঘটনা ঘটলে ছাদে গিয়ে মানুষ বাঁচবে সেখানেও যাওয়ার রাস্তা নেই, অথচ রেস্তোরাঁ বানিয়ে রেখেছে। এমন ভবন তো ঢাকা শহরে আরও আছে। এসব দেখার জন্য ঢাকা শহরে আরও অনেক সংস্থা আছে। ভবন ম্যানেজার আছেন। তারা কী খোঁজ খবর রাখছেন সেটাও আমরা জানি না।
ঢাকাটাইমস/০৪মার্চ/এসএস/ইএস