ড্রেনের মধ্যে বোতল-চিপসের প্যাকেট: নাগরিকদের সচেতন হতে বললেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী

বোতল-চিপসের প্যাকেটসহ যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে ড্রেনেজ সিস্টেম ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় জানিয়ে এ ব্যাপারে নাগরিকদের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
তিনি বলেন, সরকারের পাশাপাশি নাগরিকরা নিজ দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করলে অনেক সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
বুধবার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) নগর ভবনের সম্মুখে সপ্তাহব্যাপী চলমান বর্জ্য প্রদর্শনী পরিদর্শন শেষে তিনি একথা বলেন।
মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, আপনারা জানেন যে অল্প বৃষ্টি হলেই অনেক সময় বিভিন্ন রাস্তায় পানি জমে যায়। আমার এলাকার আশেপাশে এধরনের অভিযোগ আমরা পাই এবং ভিডিও করেও আমাদের কাছে পাঠিয়ে দেয়। আমরা ওই এলাকাগুলোতে গিয়ে দেখেছি ড্রেনেজ লাইনের মধ্য বিভিন্ন ধরনের বোতল, চিপসের প্যাকেট পড়ে থাকে। পানির মধ্যে বড় বড় জিনিসপত্র জাজিম, সোফা, ফ্রিজ ফেলে রাখা হয়।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, মূলত বিষয়টা হচ্ছে যে সরকার তার কাজ করবে কিন্তু নাগরিকদের দায়িত্বের জায়গা থেকে, নাগরিকদের অধিকার যেমন তার সংরক্ষণের বিষয় আছে তেমন দায়িত্ব পালনেরও বিষয়টা থাকে। নাগরিক তার দায়িত্বের জায়গা থেকে নিজ দায়িত্বটুকু পালন করলে তখনই সরকার ও নাগরিকদের মধ্যে একটা পার্টনারশিপ তৈরি হয় তখনই সমস্যাগুলো অনেক সহজেই দূর হয়। কিন্তু সারাক্ষণই যদি পরিষ্কার করতে থাকে সিটি করপোরেশন কিন্তু অন্যদিক থেকে একই সাথে আপনারা নোংরা করতে থাকেন, সিস্টেমিক নিয়মের মধ্যে না থাকেন তাহলে তো এই সমস্যা কোনোদিনও সমাধান হবে না।
এসময় তিনি ডিএনসিসি মেয়রকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এই বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করার জন্য একটি চমৎকার উদ্যোগ নিয়েছে। আমি মেয়র মহোদয়কে ধন্যবাদ জানাতে চাই এই উদ্যোগের জন্য।
আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, সব বালা-মুসিবত শুধু সিটি করপোরেশন দূর করবে তা নয়, এখানে নাগরিকদেরও দায়িত্ব রয়েছে।
বর্জ্য প্রদর্শনী সম্পর্কে তিনি বলেন, আমাদের সকলের জন্য সামগ্রিকভাবে লজ্জার এটি। কারণ প্রদর্শনীটি হচ্ছে আমাদের দায়িত্বহীনতা ও অপরাধের। আমরা একজন নাগরিক ও মানুষ হিসাবে এই পৃথিবীর বিরুদ্ধে কী ধরনের অপরাধ করে যাচ্ছি, নগরবাসীর সুযোগ-সুবিধায় কীভাবে আমরা বাধা সৃষ্টি করছি তার একটি প্রদর্শনী দেখলাম। এখানে নাগরিকদেরও দায়িত্ব রয়েছে।
তিনি বলেন, আজকে জলাবদ্ধতা-ডেঙ্গু নিয়ে কথা হচ্ছে। এখানে পরিদর্শনে এলে যে কোনো মানুষ মনে করবে সব দায় সরকারের নয়। সব অপরাধ সিটি করপোরেশনের নয়।
‘নগরবাসী হিসেবে যে সেবা আমাদের গ্রহণ করার কথা, সে সেবা আমরা নিজেরাই বন্ধ করে দিচ্ছি। আমরা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছি প্রতিনিয়ত। প্রদর্শনীতে দেখা গেল যে একটি পরিবারের যা যা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দরকার তা ব্যবহার শেষে আমরা নিকটবর্তী খালে বা নালায় ফেলে দিচ্ছি। সেখানে স্বাভাবিক জলপ্রবাহ বন্ধ হচ্ছে একই সাথে ডেঙ্গুর লার্ভা সৃষ্টি হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমরা অনেক কথা বলি, ভ্যানিস ও অন্যান্য বিদেশে অন্য শহর অনেক সুন্দর। সেখানে খাল-নদী রয়েছে, সে খানের সরকার ও জনগণ মিলে প্রাকৃতিকভাবে টিকিয়ে রাখার ব্যবস্থা করছে। আমরা ঢাকা শহরে খাল ও জলাশয় ধ্বংস করছি। আগে ঢাকা শহরে জলাশয় সংখ্যা ছিল ৭০টি৷ আমাদের অপরাধের কারণে তা কমতে-কমতে ২০ থেকে ২৫ টিতে দাঁড়িয়েছে।
এসময় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি গাজী মেজবাহুল হোসেন সাচ্চুসহ ডিএনসিসির বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।
(ঢাকাটাইমস/১৫মে/এমআই/ইএস)

মন্তব্য করুন