ইফতার পার্টিতে আল্লাহ-রাসুলের নাম না নিয়ে আ.লীগের গিবত গায়: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ১৮ মার্চ ২০২৪, ১৬:০৭ | প্রকাশিত : ১৮ মার্চ ২০২৪, ১৪:৪৫

বিএনপিসহ সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা প্রতিনিয়ত বলে আওয়ামী লীগকে হটাবে, নির্বাচন হতে দেবে না, মানুষ খুন করে, আগুন সন্ত্রাস করে, তারা কিন্তু মানুষকে ইফতার দেয় না। ওই ইফতার পার্টিতে আল্লাহ-রাসুলের নাম নেই, আওয়ামী লীগের গিবত গায়।

সোমবার রাজধানীর তেজগাওঁ ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালায়ে বঙ্গবন্ধুর ১০৪জন্মদিন উপলক্ষে আলোচনায় সভায় একথা বলেন তিনি। আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, করোনা অতিমারি, এরপরেই রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ। এসবের ফলে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে স্যাংশন কাউন্টার স্যাংশন। এসবের ফলে প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। গম তেল জ্বালানি তেল সারসহ প্রতিটা জিনিসেরই দাম বেড়েছে। এছাড়া পরিবহন খরচ বেড়েছে। যার ফলে মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে। যেটা আমরাই কমিয়ে এনেছিলাম, এখন আবার বেড়েছে।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি হওয়ার কারণে এটা বেড়েছে। এর জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছি কোনো ইফতার পার্টি নয় বরং আমরা ইফতার বিতরণ করব। করোনা অতিমারির সময় যেমন সবাই মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে বিভিন্নভাবে সাহায্য সহযোগিতা করে ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দিয়েছেন, এবারও ইফতার পার্টি না করে সেই খাবার মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দিতে হবে, সেটা অনেকে করছেনও।

বিরোধীদের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটা কী করে ভুলে যায় আওয়ামী লীগ মানুষের পাশে আছে। আওয়ামী লীগকে উৎখাত করতে চায় আওয়ামী লীগের অপরাধ কী? দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করেছে দেশ উন্নত করেছে, মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে এটা কি আওয়ামী লীগের অপরাধ। এটা তারা বলুক আওয়ামী লীগের কী অপরাধ। তারা গণতন্ত্রের কথা বলে। আওয়ামী লীগই এদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছে। যারা বঙ্গবন্ধু হত্যায় জড়িত খুনি রশিদ ডালিম যারা মত দিয়েছে তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ক্ষমতা দখল করেছে।’

প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন রেখে বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পরে ক্ষমতা দখল করে সেই ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে যে দলের সৃষ্টি, সে দল আবার কীভাবে গণতন্ত্র দিয়ে সৃষ্টি হয়েছে? যাদের সৃষ্টি ক্ষমতা দখল করে, তারা গণতন্ত্র ভাষা বুঝে কি না, গণতন্ত্রের অর্থ বুঝে কি না, গণতন্ত্র বানান করতে পারে কি না সেটি এখন আমার প্রশ্ন। এদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছে আওয়ামী লীগ। গণতন্ত্র চর্চা করে আওয়ামী লীগ। মানুষের জন্য গণতন্ত্র সৃষ্টি করেছে আওয়ামী লীগ। গণতন্ত্র আছে বলেই মানুষ কথা বলতে পারে। তারা তোতা পাখির মতো বলে যাচ্ছে।

সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা আমার মায়ের হাতে খাবার খেত, তারাই ঘাতক হিসেবে আবির্ভূত হলো। এই ঘাতকরাই সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে। এমনকি তারা ছোট ভাই রাসেলকে হত্যা করে।

তিনি বলেন, সব যন্ত্রণা নিয়ে বেঁচে আছি বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরির্বতন করার জন্য। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে। আমার পরিবারের সবাইকে হারিয়ে বেঁচে আছি। এই বেঁচে থাকা যে কত যন্ত্রণার।

নেতাদের উদ্দেশ্যে করে আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, ক্ষমতা কোনো ভোগের বস্তু নয়। সবাইকে মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষিক লীগ সবাইকে মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। ইফতার পার্টি না করে এসব টাকা মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দিতে হবে। অতীতে যেমন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সংগঠন কৃষকের ধান কেটে দিয়েছে তেমনি এবার ইফতার পার্টি না করে দেশের মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার একটি উদ্দেশ্য ছিল, যাতে আওয়ামী লীগ আর কোনোদিন ক্ষমতায় আসতে না পারে। এটাই ছিল ঘাতকদের প্রচেষ্টা। আমি আর আমার ছোট বোন রেহেনা বিদেশে থাকায় বেঁচে গিয়েছিলাম। এই বাঁচা যে কত কষ্টের। তখন ভেবেছিলাম আমার বাবা দেশের মানুষের জন্য জীবন দিয়ে গিয়েছেন সে আদর্শ চেতনা মানুষের জন্য বাস্তবায়ন করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর যে আত্মত্যাগ এটাতো বৃথা যেতে পারে না। ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণ দিয়েছিলেন যার যা আছে তাই নিয়ে যুদ্ধ করতে হবে। মানুষ তাই করেছে, অকাতরে নিজের জীবন দিয়েছে।

‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ চেতনা বৃথা যেতে পারে না। তার চিন্তা চেতনা ছিল দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন উন্নয়ন করবেন। তাই সব যন্ত্রণা নিয়েও মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন ও পরিবর্তন এ কাজ করে যাচ্ছি। বাবা-মাকে হারিয়ে যখন এই দেশে ফিরে আসি দেশের মানুষের ভালোবাসা পেয়েছিলাম। মানুষের আশীর্বাদ পেয়েছিলাম। সে আদর্শ ভালোবাসা নিয়ে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন কাজ শুরু করি’—যোগ করেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের অগণিত নেতাকর্মী পাকিস্তানের নির্যাতনে মৃত্যুবরণ করেছেন। দিনের পর দিন না খেয়ে রয়েছেন। অত্যাচারিত হয়েছেন। এইসব তথ্য ইন্টেলিজেন্স বই পড়লেই পাবেন। এত আত্মত্যাগ কখনো ব্যর্থ হতে পারে না।

বাংলাদেশের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, আমি দেশের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই, কারণ আওয়ামী লীগ ৭৫ এর পরে ক্ষমতায় আসবে এবং টানা চারবার ক্ষমতায়। মনে রাখতে হবে ক্ষমতা ভোগের বস্তু নয়। কোনো দায়িত্ববান নেতার কাছে ক্ষমতা হলো জনগণের দায়িত্ব কর্তব্য পালন করার।

ঢাকাটাইমস/১৮মার্চ/জেএ/ইএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

ফারাক্কা দিবসের অঙ্গীকার- যৌথ নদী রক্ষায় সোচ্চার হোন: বাংলাদেশ ন্যাপ

অসুস্থ তাঁতীদল নেতা রেজাউল করিমকে দেখতে গেলেন কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ

শেখ হাসিনার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে ছাত্রলীগের কর্মসূচি

জাপাকে বিক্রি করে নেতাকর্মীদের ক্রীতদাস বানানোর চেষ্টা হয়েছে: কাজী মামুন

আ.লীগই ষড়যন্ত্র করে: সালাম

দেশে গণতন্ত্র, আইনের শাসন এবং মানবাধিকারের কিছুই অবশিষ্ট নেই: জামায়াত

ডোনাল্ড লু প্রসঙ্গে বেশি কথা বলতে চান না মির্জা ফখরুল

বিএনপির আরও পাঁচ নেতা বহিষ্কার

ইসরায়েলি লবির সঙ্গে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে বিএনপি: হাছান মাহমুদ

ডোনাল্ড লু'র আগমনে সরকার ভীত: ববি হাজ্জাজ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :