রান্নার জন্যে কোন তেল স্বাস্থ্যকর, জেনে নিন

বাঙালির রান্না তেল ছাড়া হয় না। স্বাস্থ্যের দিক বিবেচনা করে সিদ্ধ খাবার খেলেও তার মধ্যে তেলের ছোঁয়া থাকে। অনেকে সালাদের ড্রেসিংয়েও তেল ছড়িয়ে নেন। বিশেষ করে ভাজাভাজির জন্যে চাই স্বাস্থ্যকর তেল। অস্বাস্থ্যকর তেল ব্যবহারে নানা রকম স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে। বর্তমানে ভেজাল তেলের বাজারে স্বাস্থ্যকর ভোজ্য তেল খোঁজা এক বিরাট ঝক্কির ব্যাপার। জীবনের তাগিদে অপেক্ষাকৃত কম ক্ষতিকর তেলটিই কিনতে চান স্বাস্থ্যসচেতন ক্রেতারা।
ভাজা বা রান্নার জন্য বেশি তাপমাত্রা (১৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা কাছাকাছি তাপমাত্রায়) ব্যবহার করলে, তেলের স্বাভাবিক কাঠামো পরিবর্তিত হয়ে যায়। এ প্রক্রিয়াকে বলা হয় অক্সিডেশন বা বাতাসের অক্সিজেনের সঙ্গে বিক্রিয়া। অক্সিজেনের সঙ্গে ফ্যাটি অ্যাসিড পুড়ে তৈরি হয় অ্যালডিহাইড এবং লিপিড পার অক্সাইড। ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রাতেও একই ধরনের ঘটনা ঘটে। তবে খুব ধীরে ধীরে। লিপিড পচে যাওয়ার সময়ও অক্সিজেনের সঙ্গে বিক্রিয়া হয়।
যেকোনো অ্যালডিহাইড খুব সামান্য পরিমাণে খেয়ে ফেললে বা নিঃশ্বাসের সঙ্গে গ্রহণ করলে, তা ভয়াবহ স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। হৃদরোগ বা ক্যানসারের মতো রোগও হতে পারে অ্যালিডিহাইউ থেকে।
তবে হার্ট ভাল রাখতে আজকাল সরিষার তেল ছেড়ে অনেকেই অলিভ অয়েলে রান্না করে থাকেন। তবে পুষ্টিবিদেরা বলেছেন, শরীর ভাল রাখতে রান্নায় যে তেলই ব্যবহার করুন না কেন, তার মধ্যে স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং ট্রান্স ফ্যাটের পরিমাণ যেন কম হয়। কারণ, রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল এবং শর্করা বাড়িয়ে তোলার পিছনে ওই দু’টি উপাদানের হাত আছে। সর্ষের তেল, অলিভ অয়েলে স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং ট্রান্স ফ্যাটের পরিমাণ কম। কিন্তু এমন অনেক তেলই রয়েছে, যেগুলি নিত্য দিনের রান্নায় ব্যবহার করা শরীরের জন্য আদৌ ভাল নয়।
পুষ্টিবিদদের মতে, তেলের চর্বি মানব দেহের জন্য বেশি ভালো না। মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর চর্বি এলডিএল-এর মাত্রা বৃদ্ধি করে স্যাচুরেটেড ফ্যাট। অনেক সময় তেল ব্যবহারে ক্ষেত্রে স্মোক পয়েন্ট না জানার কারণেও স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে। সুস্থ হৃদ্যন্ত্রের জন্য সঠিক তেল নির্বাচন করা জরুরি। স্বাস্থ্যকর রান্নার তেলে পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড এবং মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। মূলত এই উপাদানগুলোর উপস্থিতি–অনুপস্থিতির হারের ওপরই নির্ভর করে তেল কতটা স্বাস্থ্যকর। একই সঙ্গে কত ডিগ্রি তাপমাত্রায় রান্না করা হচ্ছে, তার ওপরও তেলের পুষ্টিগুণ অটুট থাকা না–থাকা নির্ভর করে।
রান্নায় যত ডিগ্রি তাপমাত্রায় তেলের গুণ নষ্ট হওয়া শুরু হয়, সেটিই স্মোকিং পয়েন্ট। একটা নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় তেলের স্মোক পয়েন্ট থেকে নীলাভ ধোঁয়া বের হতে শুরু করে। এই ধাপে চর্বি ভেঙ্গে অক্সিডাইজ হয়, ফলে ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিকেল উৎপাদিত হয়। ফ্রি র্যাডিকেল শরীরে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। যেসব তেলের স্মোক পয়েন্ট যত বেশী সেসব তেল দিয়ে তত বেশী উচ্চ তাপমাত্রায় রান্না করা যায়। নিম্ন মাত্রার স্মোক পয়েন্ট থাকলে সেই তেল দিয়ে খুব সাবধানতার সাথে অল্প তাপে রান্না করতে হবে। তেল স্মোক পয়েন্ট অতিক্রম করলে সেই তেল হয়ে পড়ে স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর, এমনকি সেটা যদি স্বাস্থ্যকর অলিভ অয়েল হয়, তবুও। তাই সেই তেল ফেলে দিয়ে নতুন তেল দিয়ে রান্না করতে হবে।
স্যাচুরেটেড ফ্যাট (সম্পৃক্ত চর্বি) চর্বি ২৫° সেন্টিগ্রেডে বা কক্ষ তাপমাত্রায় কঠিন অবস্থায় অবস্হায় থাকে। এই চর্বি মানব দেহের জন্য বেশি ভালো না। মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর চর্বি এলডিএল-এর মাত্রা বৃদ্ধি করে স্যাচুরেটেড ফ্যাট।
আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট (অসম্পৃক্ত চর্বি) ২৫°সেন্টিগ্রেডে বা কক্ষ তাপমাত্রায় তরল অবস্থায় থাকে। এই চর্বি মানব দেহের জন্য উপকারী। এটি মানব দেহের জন্যে উপকারী এলডিএল-এর চর্বির পরিমাণ বৃদ্ধি করে। আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট দুই ধরনের যথা ১. পলি আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট ২. মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট।
স্বাস্থ্যের জন্যে কোন তেল ভালো তা নিয়ে নানা মুনির নানা মত প্রচলিত আছে। কেউ বলে সরিষার তেল স্বাস্থ্যকর তেল আবার কেউ বলে সয়াবিন তেল ভালো কেউ আবার জোরগলায় বলে রাইসব্রান তেল সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর তেল। সব মতবাদ ছুঁড়ে ফেলে নিজেই গুণাগুণ যাচাই করে বুঝে নিন কোন তেল আপনার মুখের স্বাদ মেটানোর পাশাপাশি স্বাস্থ্যের জন্যও ভালো।
সরিষার তেল
রান্নায় সরিষার তেল আদিম কাল থেকে ব্যবহার হয়ে আসছে। সরিষা গাছের বীজ থেকে এই তেল সংগ্রহ করা হয়। সরিষার তেলের স্মোকিং পয়েন্ট বেশি তাই ডিপ ফ্রাই করতে এই স্বাস্থ্যকর তেল ব্যবহার করা হয়। সরিষার তেলে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে যা মানব দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। পেটে জীবাণুর সংক্রমণ বন্ধ করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে সরিষার তেল। দেহের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করতে এই তেল বেশ শক্ত ভূমিকা রাখে। সরিষার তেলে স্যাচুরেটেড ফ্যাট (সম্পৃক্ত চর্বি) খুব কম থাকে ফলে এই তেল হার্টের জন্যে খুব ভালো। সরিষার তেলে প্রচুর পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে এই ফ্যাটগুলো হার্ট এটাকের ঝুঁকি কমায়। সরিষার তেলে ওমেগা-৩ ও ওমেগা-৬ ফ্যাট থাকে এই ভালো ফ্যাটগুলো মস্তিষ্কে এবং হার্টে শক্তি যোগান দেয়।
ভালো গুণের পাশাপাশি সরিষার তেলের একটি খারাপ গুণ আছে তা হলো এই তেলে ৩৫-৪৮% ইউরিক এসিড আছে। ইউরিক এসিড কিডনির জন্যে ক্ষতিকর। আমেরিকা সহ ইউরোপের অনেক দেশে এই তেল ব্যবহার নিষিদ্ধ।
জলপাই তেল
জলপাই তেল বা অলিভ অয়েল জলপাই গাছের ফল থেকে সংগ্রহ করা হয়। এর আর একটি তেল এক্সট্রাভার্জিন ওলিভ ওয়েল। সৌখিন রান্নার জন্যে এশিয়ার দেশগুলোতে জলপাই তেল স্বাস্থ্যকর তেল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তবে ইউরোপ মহাদেশে এই তেল ব্যাপক ব্যবহৃত হয়।
স্বাস্থ্যর জন্য জলপাই তেল বেশ ভালো। স্বাস্থ্যকর জলপাই তেলে প্রচুর মনোআনস্যাচুরেটেড এবং পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট আছে তাই হার্টের জন্য এই তেল বেশ ভালো। ওজন কমানোর পর ফিটনেস ধরে রাখতে রান্নায় এই স্বাস্থ্যকর তেল ব্যবহার করা হয়। স্যাচুরেটেড ফ্যাট জলপাইয়ের তেলে খুব কম মাত্রায় থাকে। জলপাই তেলের স্মোকিং পয়েন্ট বেশ উচ্চ মানের।
সয়াবিন তেল
পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই রান্নার জন্য কমবেশি যে তেল ব্যবহৃত হয় তা হলো সয়াবিন তেল। সয়াবিনের বীজ থেকে এই তেল সংগ্রহ করা হয়। সয়াবিন তেলে স্যাচুরেটেড ফ্যাট সরিষার তেলের চাইতে বেশি থাকে। তাই এই তেল স্বাস্থ্যের জন্যে খুব ভালো নয়। সয়াবিন তেলে মনোআনস্যাচুরেটেড ও পলিআনস্যাচুরেটেডসরিষার তেলের তুলনায় কম আছে। তাই বলা যায় এটা হার্টের জন্যে খুব বেশি স্বাস্থ্যকর তেল না। সয়াবিন তেলের স্মোকিং পয়েন্ট সরিষার তেলের স্মোকিং পয়েন্ট থেকে কম।
সয়াবিন তেলে ভিটামিন এ ও ডি রয়েছে। অল্পমাত্রায় ওমেগা-৩ ফ্যাট থাকে। এই তেলে কোন ইউরিক এসিড নেই। তাই বলা যায় সরিষার তেলের তুলনায় সয়াবিন তেলে উপকারী উপাদান কিছুটা কম থাকলেও কোন অপকারী উপদান নেই। সুতরাং রান্নার কাজে সবসময় সরিষার তেল অপেক্ষা সয়াবিন তেল ব্যবহার করাই বেশি ভালো।
পাম তেল
পাম গাছের ফল থেকে তৈরি হয় পাম তেল। পাম তেল দামে সস্তা হওয়ায় নিম্নবিত্ত মানুষেরা এটা বেশি ব্যবহার করে। এই তেলে স্যাচুরেটেড ফ্যাট অনেক বেশি থাকে। তাই এই তেলে ভাজা খাবার সুস্বাদু হয়। পাম তেল অস্বাস্থ্যকর তেল। হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য এই তেল ভালো নয়।
পাম তেলে ভিটামিন থাকে। পলিআনস্যাচুরেটেড ও মনোআনস্যাচুরেটেড এই তেলে কম থাকে। এই তেলের স্মোকিং পয়েন্ট কম তাই খুব কম সময়ে তেলের আসল রং পরিবর্তন হয়।
ক্যানোলা তেল
ইউরোপ ও আমেরিকা মহাদেশে সরিষার ফুল ও বীজ সদৃশ্য উদ্ভিদ ক্যানোলার বীজ থেকে ক্যানোলা তেল সংগ্রহ করা হয়। ক্যানোলা তেলের পুষ্টিগুণ সয়াবিন তেলের চেয়ে বেশি। সয়াবিন তেলের প্রধান বিকল্প হলো ক্যানোলা তেল। স্যাচুরেটেড ফ্যাট এই তেলে খুব কম। পলি আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট ও মনো স্যাচুরেটেড ফ্যাট এই তেলে বেশি। ওমেগা-৩ ফ্যাট এই তেলে বেশ ভালো মাত্রায় থাকে। হার্টের স্বাস্থ্যের জন্যে এই তেল বেশ ভালো। এই তেলের স্মোকিং পয়েন্ট মধ্যম মানের।
তিলের তেল
তিলের বীজ থেকে এই তেল সংগ্রহ করা হয়। হালকা সুগন্ধ থাকার জন্য এই তেল মধ্যপ্রাচ্য সহ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে খুব বেশি ব্যবহৃত হয়, বিশেষ করে ম্যারিনেট করার কাজে। তিল তেলের স্মোকিং পয়েন্ট উচ্চমাত্রার তাই ডিপফ্রাই করার জন্য তিল তেল বেশ জনপ্রিয়।
তিলের তেলে স্যাচুরেটেড ফ্যাট কম মাত্রায় এবং মনোআনস্যাচুরেটেড ও পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট বেশিমাত্রায় থাকে। এছাড়াও এই তেলে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় ম্যাগনেসিয়াম, কপার, ক্যালসিয়াম, আয়রন এবং ভিটামিন বি৬ থাকে। হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য এই তেল ভালো।
বাদাম তেল
বিভিন্ন বাদামের বীজ থেকে সংগ্রহ করা হয় বাদাম তেল। সৌখিন রান্না ছাড়া বাদাম তেল খুব একটা ব্যবহার হয় না। সয়াবিন তেলের বিকল্প হতে পারে বাদামের তেল। বাদাম তেলে প্রচুর ভিটামিন থাকে।
বাদাম তেলে মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি বেশি থাকে। যা আমাদের রক্তের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল ট্রাইগ্লিসারাইড নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে এবং শরীরের জন্য উপকারী এইচডিএল অর্থাৎ ভালো কোলেস্টেরল বাড়াতে সাহায্য করে। যা করোনারি হার্ট ডিজিজ, ব্লাড প্রেসার কন্ট্রোল সাহায্য করে থাকে। হার্ট, ত্বক চুল ছাড়াও বাদাম তেল ডায়াবেটিসের সমস্যায় একটি কার্যকরী সমাধান। এটি রক্তের অতিরিক্ত সুগার লেবেলকে কম করে। ডায়াবেটিস ছাড়াও কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হবার হাত থেকে বাঁচায়। এই ক্যান্সারের ক্ষেত্রে ওষুধ হিসাবে কাজ করে। এছাড়াও বেদনা নাশক হিসাবেও কাজ করে বাদাম তেল। ব্যাথার জায়গায় বাদাম তেল মালিশ করলে
নারিকেল তেল
নারিকেল তেল এখন আর শুধুই চুলের পরিচর্যার অনুষঙ্গ নয়। কিটো ডায়েটের জন্য রান্নায় নারিকেল তেলের ব্যবহারের প্রচলন ও চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে অনেকটা। ৯০ শতাংশ স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও প্রাকৃতিক মিডিয়াম-চেইন ট্রাইগ্লিসারাইড পাওয়া যাবে বিশুদ্ধ নারিকেল তেল থেকে। বেশ কিছু গবেষণা থেকে দেখা গেছে, নারিকেল তেল রক্তের খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধিতে কাজ করে। বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর অধিকাংশ দেশে নারিকেল তেল চুলে লাগানো হয় কিন্তু শ্রীলংকা সহ কিছু সমুদ্র উপকূলীয় দেশে নারিকেল তেল রান্নার তেল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। প্রচুর স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকার করণে এই তেল ব্যবহার করা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়।
সূর্যমুখী তেল/সানফ্লাওয়ার তেল
সূর্যমুখী গাছের বীজ থেকে এই তেল প্রস্তুত করা হয়। এই তেলের স্মোকিং পয়েন্ট বেশ উচ্চমানের। ডিপ ফ্রাই করতে এই স্বাস্থ্যকর তেল বেশি ব্যবহৃত হয়। ভারতীয় উপমহাদেশে এবং এশিয়ার অধিকাংশ দেশে সানফ্লাওয়ার তেল সয়াবিনের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সানফ্লাওয়ার তেলে স্যাচুরেটেড ফ্যাট কম পলিআনস্যাচুরেটেড এবং মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট বেশি। সূর্যমুখীর তেল হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য বেশ ভালো। এই তেলের পুষ্টিগুণ প্রায় সরিষার তেলের কাছাকাছি।
পুষ্টিবিদরা প্রতিদিনের রান্নার কাজে সানফ্লাওয়ার তেল ব্যবহারের উপদেশ দেয়। তবে ডায়াবেটিক রোগীদের ব্লাড স্যুগার লেভেল হাই করতে পারে সানফ্লাওয়ার তেল তাই ডায়াবেটিক রোগীদের এই তেল থেকে দূরে থাকাই ভালো।
রাইসব্রান তেল
ধানের তুষ থেকে তৈরি হয় রাইসব্রান তেল। রাইস ব্রান অয়েল সয়াবিন তেলের মতো একটি ভোজ্য তেল কোলেস্ট্রেরলমুক্ত ও প্রাকৃতিক ভিটামিন ও খনিজ উপাদানে সমৃদ্ধ। খুব নিম্নমাত্রার স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং খুব উচ্চমাত্রার পলিআনস্যাচুরেটেড ও মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট পাশাপাশি ওমেগা-৩ ফ্যাট বেশি থাকার জন্য এই তেল কে হার্টের জন্য উৎকৃষ্ট তেল হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ওরিজনল নামে উপাদান এই তেলে আছে, যা হার্ট ব্লোক, হার্ট এটাক, স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। রাইসব্রান তেলের স্মোকিং পয়েন্ট খুবই উচ্চ মানের। রাইসব্রান তেলের স্মোকিং পয়েন্ট ৪৯০ ডিগ্রি ফারেনহাইট।
পুষ্টিবিদদের মতে, হৃদ্স্বাস্থ্য ভালো রাখতে একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের দৈনিক খাদ্য তালিকায় ২০ গ্রাম তেল থাকা উচিত। হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমাতে রান্নায় যেমন স্বাস্থ্যকর তেল ব্যবহার করতে হবে, একইভাবে তেলের পরিমাণও সীমিত করতে হবে। খাবারকে যথাসম্ভব কম ভাজতে চেষ্টা করুন। উচ্চ তাপমাত্রা পরিত্যাজ্য। যদি ভাজতেই হয়, তবে যথাসাধ্য কম তেল ব্যবহার করুন। সম্ভব হলে টিস্যু বা শোষক কাগজ দিয়ে ভাজা খাবারের বাইরে সেঁটে থাকা তেল মুছে নিন। তেল সবসময় আলমারিতে অন্ধকারে রাখুন। কোনো তেলই দ্বিতীয়বার ব্যবহারের চেষ্টা করবেন না। কারণ নতুন বিক্রিয়ায় তাতে আরো বহু নোংরা বিষাক্ত উপাদান তৈরি হয়।
(ঢাকাটাইমস/২০ মার্চ/আরজেড)

মন্তব্য করুন