‘স্বাধীনতা এবং স্বনির্ভরতার নামে কিছু নারী যা করছে তা আমাকে হতবাক করে’

নারী, এক অঙ্গে অনেক রুপ। কন্যা জায়া জননী! একজন নারী হিসেবে পৃথিবীতে পাঠানোর জন্য সৃষ্টিকর্তার নিকট আমি চিরকৃতজ্ঞ।
তবে বর্তমান সময়ের নারীদের নিয়ে কিছু কথা না বললেই নয়। স্বাধীনতা এবং স্বনির্ভরতার নামে বর্তমানে কিছু কিছু নারী যা করছে তা আমাকে হতবাক করে। এটাই কি বেগম রোকেয়া চেয়েছিলেন!? আমি বেগম রোকেয়ার গল্প পড়েছিলাম স্কুলের পাঠ্যবইয়ে। এমন কয়টা বেগম রোকেয়া আছে বর্তমানে? তার যতো উত্তম গুণগুলো আত্মস্থ করার চেষ্টা করেছি, এখনও করে যাচ্ছি।
সেই সময়টাতে মুসলমান মেয়েরা লেখাপড়া করার সুযোগ পেতো না। শুধু পর্দা নষ্ট হবে এই ভয়ে। তিনি সেই সমস্যা দূর করলেন। মুসলিম মেয়েরা পরবর্তী সময়ে বিদ্যার্জন করে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেন, নিজেদের আলাদা একটা ইমেজ তৈরি করেন।
তারই ফলস্বরূপ আমরা পেয়েছিলাম বেগম সুফিয়া কামাল, জাহানারা ইমাম প্রমুখদের মতো মহীয়সী নারীদের। তাদের কথা এই সময়েও চিন্তায় আসলে শ্রদ্ধায় মাথা নত হয়ে আসে।
আমি নিজেও সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে সমাজে পরিবারে আলাদা একটা জায়গা নিজের জন্য করে নিয়েছি। আমি একজন কর্মজীবী নারী, একজন আদর্শ স্ত্রী, একজন স্নেহময়ী মা, তদোপুরি একজন ব্যাক্তিত্ববান নারী হিসেবে নিজেকে তুলে ধরেছি। ঠিক বেগম রোকেয়ার পদাঙ্ক অনুসরণ করে। একটুও এদিক সেদিক গিয়ে নয়।
নারী হতে হবে খোসাসুদ্ধ কলার মতো, আবরণ খুলবেন তো গেলেন। নিজেকে ঠিক সেইভাবেই সকল পরিস্থিতিতে উপস্থাপন করবেন, যতোটা করলে সম্মানহানি না হয়।
নারী, তুমি রজনীগন্ধা, কামিনী ফুল হয়ে দেখাও, যেন দেখলেই পবিত্রতার কথা মনে হয়, নারী৷ তুমি হাসনা হেনার মতো হও, যেন মোহময় সুবাস হিসেবে মানুষের মস্তিষ্কে ঢুকে যাও। নারী তুমি স্নিগ্ধ বকুল হও, যেন শুকিয়ে গেলেও নিজের পরিচয় দিতে পারো।
এবারের নারী দিবসে আমার দেশের সকল নারীকে বকুল কামিনী কিংবা রজনীগন্ধা হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলাম। তবে শুধু নারী দিবসে নয়, সারা বছরই প্রত্যাশা করি, পৃথিবীর সকল নারী নিরাপদে থাকুক। তারা নিজেদের মূল্য বুঝুক।
লেখক: সরকারি চাকরিজীবী

মন্তব্য করুন