বিডিবিএল-সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে খোলা চিঠি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ২৩:০১
অ- অ+

দেশের দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ইতিমধ্যে স্বেচ্ছায় একীভূত হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেসরকারি খাতের এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে ধুঁকতে থাকা পদ্মা ব্যাংক। আরও বেশ কয়েকটি ব্যাংক একীভূত করার চূড়ান্ত একটি লিস্ট তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বরাবর খোলা চিঠি দিয়েছে বিডিবিএল অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন।

চিঠিতে বলা হয়েছে, বর্তমানে ব্যাংকিং খাতে মার্জার ইফেক্ট ব্যাংক পাড়ায় সেই সাথে দেশের অর্থনীতিতে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করেছে। ব্যাংকের আমানতকারী গ্রাহকরা অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। আমানতকারীরা আমানত তুলে নিচ্ছে। গ্রাহকরা নতুন করে আমানত রাখতে ভয় পাচ্ছে। ঋণ গ্রহিতারা ঋণ পরিশোধে বিলম্ব করছে। এছাড়াও ব্যাংক কর্মকর্তারাও এক ধরনের অস্থিরতার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এর প্রভাব দেশের অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদী হতে পারে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভাজন অনুযায়ী দুর্বল ব্যাংককে সবল ব্যাংকের সাথে মার্জ করার কথা থাকলেও বিষয়ে আরো বিশ্লেষণ পরিকল্পনার প্রয়োজন আছে। কিছু কিছু ব্যাংক আছে, যারা নিজেদের অতীতের দুর্দশা কাটিয়ে ভালো অবস্থায় ফিরতে শুরু করেছে। তারা নিজেদের নিয়ে আশাবাদী। এসব ব্যাংককে হঠাৎ করে অন্য একটি ব্যাংকের সাথে মার্জ করে দিলে কর্মীদের কর্মস্পৃহা থাকেনা, আমানতকারীরা দ্বিধাদ্বন্দে পড়ে যায়, উভয় ব্যাংকের পরিবেশ ভিন্ন হওয়ায়, কাজের ধরন ভিন্ন হওয়ায় কাগজে-কলমে একিভূত হলেও, নিজেরা সহজে একীভূত হতে পারে না।

বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক পিএলসি. এর একটি বাদে সকল ইন্ডিকেটরে ভালো থাকা সত্ত্বেও বিডিবিএল কে সোনালী ব্যাংকের সাথে মার্জের প্রক্রিয়া চলছে। বিডিবিএল এর ঋণ খেলাপির পরিমাণ একটু বেশি। তবে সেই ঋণগুলোর বেশিরভাগই সাবেক বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংক বাংলাদেশ শিল্প ঋণ সংস্থার আমলের। ২০১০ সালে (বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংক বাংলাদেশ শিল্প ঋণ সংস্থাকে মার্জ করে প্রতিষ্ঠিত হয় বিডিবিএল) প্রতিষ্ঠালগ্নে ঋণখেলাপির হার ছিল ৬০ শতাংশেরও কাছাকাছি। যা বর্তমানে প্রায় ৩৪ শতাংশ। আগামী এক থেকে দুই বছরের মাথায় এই ঋণ খেলাপির হার ১৫ শতাংশের নিচে আসবে বলে বিডিবিএলের সকল কর্মকর্তা কর্মচারীরা মনে করেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিডিবিএল কোন বছরই লোকসানের মুখ দেখেনি। টানা ১২ বছর সামান্য হলেও লাভ করা একটি ব্যাংককে দূর্বল ব্যাংক বলা যায় না। এই লাভ দেখাতে হিসাব বিজ্ঞানের কোন মারপ্যাচ লাগেনি। শতভাগ একচুয়াল লাভ। বিডিবিএলের কোন প্রভিশন ঘাটতি নেই। অন্যান্য রেশিওগুলোও ভালো। কোন তারল্য সংকট নেই।অন্যান্য সরকারী ব্যাংকের মত বিডিবিএল এর মূলধন ঘাটতি নেই, বরং প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশিই আছে। বিডিবিএল পরিচালনার জন্য সরকারকে কোন ভর্তুকি দিতে হয় না, উল্টো প্রতিবছরই লাভের একটি বড় অংশ সরকারী কোষাগারে জমা দেয়া হয়।

চিঠিতে আরও বলা হয়, বিডিবিএল গঠন হওয়ার পরে অর্গানোগ্রামের ৪৫% জনবল নিয়ে আজ পর্যন্ত টিকে আছে এবং বার্ষিক লাভ নিয়েই টিকে আছে, যা প্রশংসার যোগ্য।

চিঠিতে জানানো হয়, অপরদিকে বিডিবিএলের সম্পদের পরিমাণ অনেক বেশি। ঢাকা, চট্টগ্রাম খুলনা শহরের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বিডিবিএল এর টি বহুতল ভবন (একসময়ে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ভবনসহ), টি সিকিউরিটি হাউজ, আইসিবি ২৫% মালিকানা এবং অন্যান্য সম্পত্তির কারণে অনেক বড় ব্যাংকই বিডিবিএল কে তাদের সাথে মার্জ করে নিতে চায়। কিন্তু বড়দের অযৌক্তিক চাওয়া কি সব সময় পূরণ করতে হয়?

মার্জ করতে হলে একই মালিকানাধীন অনেকগুলি ব্যাংক রয়েছে। সেই প্রাইভেট ব্যাংকগুলিকে একত্রিত করে একটি ব্যাংকে পরিণত করলে ব্যাংকের সংখ্যা অনেক কমে যায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভাজন অনুযায়ী সরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক পিএলসি. এর অবস্থান জনতা ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংকের থেকে ভালো। তাহলে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক পিএলসি. কেই কেন মার্জ করতে হবে, এটা একটু ভেবে দেখা উচিত। এই বিষয়ে আপনার সদয় দৃষ্টি কামনা করছি। একটি দেশের অর্থনীতির চাকা বলা হয় ব্যাংকিং খাতকে। ব্যাংকিং খাতকে ঠিক করতে হলে আরো সময় নিয়ে, পরিকল্পনা মাফিক বিচার বিশ্লেষণ করে ব্যবস্থা নেয়া উচিত। ঋণ খেলাপি হওয়ার কারণ খুঁজে বের করে এর পিছনে কারা রয়েছে তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনতে পারলে ব্যাংকিং খাত অনেকটাই স্থিতিশীল হয়ে যাবে বলে অনেক অর্থনীতিবিদ মনে করেন। -বিজ্ঞপ্তি

(ঢাকাটাইমস/১৯এপ্রিল/এমআই/কেএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
রেললাইনে ভিডিও করতে গিয়ে ফটোগ্রাফারের মর্মান্তিক মৃত্যু
‘সাময়িকভাবে’ ফ্লাইট বন্ধ করলো নভোএয়ার
সিরাজগঞ্জে নেশার টাকা না দেওয়ায় ছেলের মারধরে প্রাণ গেল বাবার, মা আহত
আফতাবনগরে পশুর হাট না বসানোর দাবিতে মানববন্ধন
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা