মা ও শিশুর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: স্বাস্থ্যপ্রতিমন্ত্রী
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা বলেছেন, “দেশের সব মা ও শিশুর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সব মা ও শিশুর স্বাস্থ্য ও মঙ্গল নিশ্চিতকরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
বুধবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে জনসংখ্যা ও উন্নয়ন কমিশনের ৫৭তম অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।
প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা মাতৃ ও নবজাতকের স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা এবং কৈশোর স্বাস্থ্য ও কল্যাণ নিশ্চিতকরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক গৃহীত নানাবিধ পদক্ষেপ ও কর্মসূচির কথা তুলে ধরে বলেন, “আমাদের দেশের প্রতিটি মা ও শিশুর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য আমরা ইউনিয়ন পর্যায়ে ৫৫০০টি স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্র স্থাপন করেছি এবং সার্বক্ষণিক পরিষেবা প্রদানের জন্য প্রতিটি কেন্দ্রে ৪ জন করে ধাত্রী নিয়োগের পরিকল্পনা করছি। আগামী ২ বছরের মধ্যে ২০ হাজার ধাত্রী নিয়োগ করা সম্ভব হবে বলে আমি আশা প্রকাশ করছি।”
প্রতিমন্ত্রী তার বক্তব্যে বাংলাদেশে জাতীয় কৈশোর স্বাস্থ্যবিষয়ক কৌশলপত্র (২০১৭-২০৩০) এবং এর বাস্তবায়নে গৃহীত জাতীয় কর্মপরিকল্পনার বিষয়টি উল্লেখ করেন। তিনি আরও বলেন, “আমরা বাল্যবিবাহ এবং নারী ও কন্যা শিশুর বিরুদ্ধে সংহিসতা রোধে কাজ করে যাচ্ছি। এছাড়া ৬ষ্ঠ থেকে ১২তম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত প্রায় ৫ মিলিয়ন কিশোরীকে সরকার বিনামূল্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন বিতরণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলেও তিনি বক্তব্যে উল্লেখ করেন।
প্রতিমন্ত্রী মাতৃমৃত্যু ও জন্মহার হ্রাস, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ও অবকাঠামো উন্নয়নসহ স্বাস্থ্য তথ্য ব্যবস্থার ডিজিটালাইজেশন, ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সংখ্যা ও পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধিসহ স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশের বিভিন্ন অর্জন তুলে ধরেন। তিনি উন্নয়নশীল দেশগুলোর সক্ষমতার ঘাটতি মেটাতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও অংশীদারিত্ব বৃদ্ধিরও আহ্বান জানান।
মূল অধিবেশনের সাইড লাইনে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের মাতৃমৃত্যুবিষয়ক সিগনেচার সাইড ইভেন্টে অংশগ্রহণ করেন প্রতিমন্ত্রী। সেখানে তিনি দেশের প্রতিটি প্রান্তে পর্যাপ্ত ও প্রশিক্ষিত ধাত্রী নিয়োগের মাধ্যমে মাতৃমৃত্যু হাসে বাংলাদেশের সাফল্য বর্ণনা করেন। এছাড়া তিনি দক্ষিণ আফ্রিকা, ইউএনএফপিএ এবং পিপিডি আয়োজিত আইসিপিডি কর্মসূচি বাস্তবায়নে দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতার গুরুত্ব বিষয়ক আরেকটি সাইড ইভেন্টে অংশগ্রহণ করেন। এসব আয়োজনে অংশগ্রহণের পাশাপাশি স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী যুক্তরাজ্যের ভাইস মিনিস্টার ফর ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন ও ইউএনএফপিএ-এর এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের আঞ্চলিক প্রতিনিধির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন এবং নেদারল্যান্ডসের ভাইস মিনিস্টার আয়োজিত আইসিপিডি-৩০ গ্লোবাল ডায়ালগ শীর্ষক একটি গোলটেবিল বৈঠকে যোগ দেন।
২৯ এপ্রিল শুরু হওয়া জনসংখ্যা ও উন্নয়ন কমিশনের ৫৭তম অধিবেশন ৩ মে শেষ হবে। "আইসিপিডি পিওএ বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা এবং এ সংক্রান্ত ডিক্যাড অব অ্যাকশন চলাকালে এজেন্ডা ২০৩০ এর অর্জন মূল্যায়ন ও টেকসই উন্নয়নে আইসিপিডি পিওএ’র ভূমিকা’ হলো এ বছরের অধিবেশনের মূল প্রতিপাদ্য।
উল্লেখ্য, আইসিপিডি পিওএ-এর ৩০তম বার্ষিকী উদযাপনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ১৫-১৬ মে ঢাকায় ডেমোগ্রাফিক ডাইভারসিটি অ্যান্ড সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট বিষয়ে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করছে।
(ঢাকাটাইমস/০২মে/টিআই/এফএ)