পরিবেশ রক্ষায় প্রতিবেদন করতে গিয়ে সাংবাদিক আক্রমণের শিকার হলে সুরক্ষা পাবেন: তথ্য প্রতিমন্ত্রী 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ০২ মে ২০২৪, ১৮:০৯ | প্রকাশিত : ০২ মে ২০২৪, ১৮:০৫

পরিবেশ রক্ষায় প্রতিবেদন করতে গিয়ে যদি কোনো সাংবাদিক আক্রমণের শিকার হন তাহলে তাকে সুরক্ষা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর ধানমন্ডি টিআইবি কার্যালয়ে আয়োজিত বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস ২০২৪ উপলক্ষে ‘বর্তমান বৈশ্বিক পরিবেশগত সংকটের প্রেক্ষাপটে মুক্ত গণমাধ্যম এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় গণমাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।

ইউনেস্কো, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এবং আর্টিকেল নাইনটিন যৌথভাবে এই সভার আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রতিমন্ত্রী।

তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী বলেন, পরিবেশ রক্ষায় কোনো প্রতিবেদন করতে গিয়ে যদি কোনো সাংবাদিক আক্রমণের শিকার হয় তাহলে তাকে সুরক্ষা দেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। তবে সেটা যেন সঠিক তথ্য সরবরাহের মাধ্যমে, ডেটা প্রোটেকশন অ্যাক্ট, এআই অ্যাক্ট…কোনো আইনের যেন অপব্যবহার না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। তবে আইনের প্রয়োজনীয়তা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার নামে কেউ যদি এর অপব্যবহার করে সেটা রোধ করতে হবে। আইন যেমন প্রয়োজন ঠিক একইভাবে কোনো আইনের যাতে অপব্যবহার না হয় সেদিকেও নজর রাখতে হবে। কোনো আইনের অপব্যবহার হলে সবার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হবে। তথ্য অধিকার আইনে যেসব তথ্য জনগণের জানার অধিকার রয়েছে সে সব তথ্য সরকারি সংস্থা দিতে বাধ্য।

তিনি আরও বলেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতার নামে যখন এর অপব্যবহার হয় তখন এটার পরিণাম খুবই ভয়াবহ। এক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনা গণমাধ্যমের প্রসার ও এর স্বাধীনতার জন্য ব্যাপক ভূমিকা পালন করছে। সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে। আমার প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ। এ ক্ষেত্রে সবাইকে আমরা স্বাগত জানাই যারা বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত দিয়ে সহযোগিতা করতে চায়। আমরা শুধু উন্নয়নই করতে চাই না আমরা টেকসই উন্নয়ন করতে চাই, যেটা আমাদের পরিবেশকে সুরক্ষা দিবে। পরিবেশ রক্ষায় সরকারকে যে সহযোগিতা করবে তাকে স্বাগত জানাচ্ছি।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, বিদেশি সহযোগিতা গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজের কিছু যায়গা থেকে সিস্টেমেটিক ডিসইনফরমেশন ক্যাম্পেইন করা হয়। সরকারের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে এ ধরনের প্রচারণা চালানো হয়। এটা কেন হয় আমরা জানি। বিদেশি স্পনসরশিপে এটা করা হয় মাঝে মধ্যে। হিল ট্র‍্যাকস, গার্মেন্টস নিয়ে বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্র আছে।

তিনি বলেন, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে অনেক মিথ্যাচার হয়েছে, এর মধ্যে সবচেয়ে বড় মিথ্যা হচ্ছে ভারত নিয়ে মিথ্যাচার। রিপোর্টিংয়ের সত্যতা থাকতে হবে, যে কোনো ধরনের সমালোচনাকে আমরা স্বাগত জানাই, তবে মিথ্যাচারকে নয়। সরকারের কার্যক্রম নিয়ে যে কোনো সমালোচনা যে কেউ করতে পারে। কিন্তু উদ্দেশ্যমূলকভাবে যখন ধারাবাহিক মিথ্যাচার করা হয় তখন প্রশ্ন ওঠে।

রামপাম নিয়ে মিথ্যাচারকে অশুভ প্রচেষ্টা উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সবচেয়ে বড় মিথ্যা হলো এটা বলা হয়েছে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র ভারতে করতে দেওয়া হয়নি। এজন্য বাংলাদেশের পরিবেশের ক্ষতি করে করা হয়েছে। এনটিপিসি যারা আমাদের পার্টনার তাদের কোনো ঠেকায় পড়েনি যে এখানে প্ল্যান্ট করবে। ভারতের নিজেরই প্রচুর জ্বালানি প্রয়োজন। এখানে এনটিমিসির আসার কোনো প্রয়োজন নাই। আমরা নিজের স্বার্থে তাদের এনেছি। এনটিপিসি নিজে ৭০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। ওর আরও ৭০ হাজার উৎপাদন করার সক্ষমতা আছে। ভারতের এক্সিম ব্যাংক থেকে আমরা বিনিয়োগ এনেছি, এনটিপিসির সঙ্গে পার্টনারশিপ করেছি। যেহেতু তাদের বিনিয়োগ ৫০ শতাংশ, অভিজ্ঞতা অর্জনের পাশপাশি ৫০ শতাংশ লাভ নেওয়া যাবে। দিন শেষে এটা ব্যবহার করবে এদেশের মানুষ।

সভায় ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবির) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশ বৈশ্বিক উষ্ণায়ন মোকাবিলায় প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করেছে। ক্রমবর্ধমান ভূমি দস্যুতা, উন্ননয়নের নামে জীব বৈচিত্র ধ্বংস করা, নগরায়নের নামে জবর দখল এখন স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় পরিণত হয়েছে। পরিবেশের ওপর এমন আগ্রাসনে ক্ষমতাসীনদের একাংশ লাভবান হচ্ছে বিধায় এদের সুরক্ষা দিচ্ছে তারা। এসব নিয়ে যারা কাজ করবে গণমাধ্যমসহ সুশীল সমাজ সেই পরিবেশ দিন দিন সংকুচিত হচ্ছে। আইনের মধ্যেও দুর্বলতা রয়েছে। যাদের আইন প্রয়োগ করার কথা, জবাবদিহীতা নিশ্চিত করার কথা তাদের ও যোগ সাজোশ রয়েছে। সম্প্রতিক বছরগুলোতে ২৩টি নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে, ৪৩ জন সাংবাদিক হামলা মামলার শিকার হয়েছে এই কাজ করতে গিয়ে। বিভিন্ন সংস্থার ফান্ড বন্ধ করে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে, হামলার ঘটনা ঘটেছে, তৃণমূলে দখলটা বেশি এসব এলাকায় ঝুঁকিটা বেশি, যদি আমরা এই চ্যালেঞ্জকে মোকাবিলা করতে না পারি।

তিনি আরও বলেন, কোনোভাবেই মিডিয়া এবং সিভিল সোসাইটির স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করা যাবে না। এর জন্য ভয়াবহ পরিণতি হবে। ক্ষমতার অপব্যবহারের সঙ্গে আন্তর্জাতিক যোগসাজসেও পরিবেশ ধ্বংস করা হয়, এর বড় উদাহরণ সুন্দরবন ধ্বংস করে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এর প্রতিবাদ করায় কিছু পরিবেশ বাদী নেতার ভারত ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছিলো।

ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট ফোরাম এর সভাপতি ও মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক রেজওয়ানুল হক বলেন, সাংবাদিকতা সারা বিশ্বেই চ্যালেঞ্জের মুখে। পরিবেশ বিষয়ক সাংবাদিকতা একটু বেশি চ্যালেঞ্জিং। বালু মহল, পাহাড় কেটে লেক। এসবের পেছনে অনেক ক্ষমতাধর ব্যক্তিরা জড়িত। তাদের বাধার মুখে পড়তে হয়। টিভি সাংবাদিকদের দেখার কেউ নাই। ঝুঁকি নিয়ে সাংবাদিকরা কোনো একটা কাজ করতে গেলে বিপদে পড়লে কেউ পাশে থাকে না।

(ঢাকাটাইমস/০২মে/এমআই/ইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

টুরিস্ট ভিসায় বাংলাদেশিদের ভারত ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি

‘শিল্পের মাধ্যমে পরিবেশের সচেতনতা বৃদ্ধিতে তরুণদের ভূমিকা রাখার আহ্বান’

এআই মানুষের জীবনধারাকে সহজ করলেও এটি সভ্যতার জন্য ঝুঁকি: পলক

স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে মন্দির, গির্জা-প্যাগোডায় বিশেষ প্রার্থনা

বঙ্গবন্ধুকন্যা হওয়ায় শেখ হাসিনার কাছে মানুষের প্রত্যাশা বেশি: ড. আনোয়ার

১০ হাজারের বেশি অবৈধ বাংলাদেশিকে দ্রুত ফেরত পাঠাবে যুক্তরাজ্য

বাসাবোতে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে যাওয়া আরও এক শ্রমিকের মৃত্যু

নিষেধাজ্ঞা পাল্টা নিষেধাজ্ঞা না থাকলে বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যেত: প্রধানমন্ত্রী

র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিষয়ে যা বলল যুক্তরাষ্ট্র

হজ পালনে সৌদি আরব গেছেন ২৪ হাজার ২৩৬ জন বাংলাদেশি

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :