ডাকাতির টাকা ভাগাভাগি নিয়ে খুন, ছয় বছর পর দলের সর্দার ‘টেক্কা’ গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ১০ জুন ২০২৪, ১৫:৪০
অ- অ+

ঘটনাটি ২০১৮ সালের। সাভার এবং আশুলিয়া এলাকাধীন তুরাগ নদীতে দীর্ঘদিন যাবৎ একটি দল সংঘবদ্ধভাবে ডাকাতি করে আসছিল। দলের সর্দার মো. মজিবর আকন ওরফে টেক্কার (৪৯) নেতৃত্বে দলে আরও ছিলেন রুহুল আমিন ওরফে লেদু (৪৩), মো. সামিম হোসেন (৩৩) আজাহার ওরফে আজাদ (৩৩)

ডাকাতির টাকা ভাগাভাগি নিয়ে ওই বছরের ১৪ ডিসেম্বর টেক্কা তার সহযোগীরা খুন করেন আজাদকে। হত্যার পরে লাশ তুরাগ নদীতে ফেলে দেন তারা। দীর্ঘ ছয় বছর পরে এই ঘটনায় জড়িত টেক্কা তার এক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের বিশেষ শাখা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)

সোমবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পিবিআই ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. কুদরত--খুদা।

পিবিআই পুলিশ সুপার বলেন, ২০১৮ সালে সাভার এবং আশুলিয়া এলাকায় তুরাগ নদে দীর্ঘদিন ধরে ডাকাতি করে আসছিলো মজিবর ওরফে টেক্কার (৪৯) নেত্বতে দলে আরও ছিলেন রুহুল আমিন ওরফে লেদু (৪৩), শামিম হোসেন (৩৩) এবং আজাহার ওরফে আজাদ (৩৩) একই বছরের ১৪ ডিসেম্বর আশুলিয়া ডাকাতি করতে যাওয়ার পথে টাকার ভাগাভাগির দ্বন্দে খুন হন আজাদ। পেছন থেকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আজাদকে হত্যা করেন লেদুসহ অন্যরা। মৃত্যু নিশ্চিত করতে চাপাতি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে মরদেহ ফেলে দেওয়া হয় তুরাগ নদে।

এই ঘটনায় নিহতের ভাই বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় একটি মামলা করেন। ২০১৯ সালে মামলার তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই ঢাকা জেলা। হত্যার ছয় বছর পর হত্যায় জড়িত ডাকাত সরদার টেক্কা তার সহযোগী শামিম হোসেনকে গ্রপ্তার করা হয়। রবিবার রাজধানীর মিরপুর গাজীপুরে অভিযানে তারা ধরা পড়েন।

কুদরত--খুদা বলেন, বরগুনার তালতলীর গাববাড়ীয়া এলাকার বাসিন্দা মজিবর আকন ওরফে টেক্কা তার ভাই আনোয়ার হোসেন শামীম দরিদ্র পরিবারের সন্তান ছিল। তাদের আর্থিক অবস্থা ছিল খুবই শোচনীয়। জীবিকার তাগিদে টেক্কা ঢাকায় এসে দিনমুজর শুরু করেন। কিন্তু বেশি আয়ের লোভে ডাকাত চক্র গড়ে তোলেন। তবে এলাকায় প্রচার করতেন তিনি বালুর ব্যবসা করেন। তার ট্রলার বালুর জাহাজ আছে। এসব তথ্য প্রচার করলেও এর আাড়লে ডাকাতি চাঁদাবাজিই ছিলো তার মূল পেশা। ডাকাতির টাকায় নিজ গ্রামে গড়ে তুলছেন সাম্রাজ্য। দুই ভাই মিলে নির্মাণ করছেন ডুপ্লেক্স বাড়ি। বিশাল মাছের খামার।

গ্রেপ্তারের পর আদালতে আসামিরা হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। আদালতে জবানবন্দিতে আসামিরা জানায়, সাভার আশুলিয়া থানার তুরাগ নদীতে ডাকাতি, চাঁদাবাজি করে আসছিলো।

২০১৮ সালের ১৪ ডিসেম্বর নিহত আজাহার আজাদও (৩৩) ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য ছিল। ঘটনার দিন ডাকাতির উদ্দেশ্যে আশুলিয়া যাওয়ার পথে আজাদের সঙ্গে টেক্কা (৪৯) তার দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড লেদুর সঙ্গে টাকার ভাগাভাগি নিয়ে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতি হলে লেদু ধারালো অস্ত্র দিয়ে পেছন থেকে আজাদের মাথায় তিনটি কোপ দেয়। পরে চাপাতি দিয়ে আজাদের বুকে একটি কোপ দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরবর্তীতে আজাদের মরদেহ তুরাগ নদীতে ফেলে দেয়। আজাদের পরিবার জানত সে গাবতলী এলাকায় চাকরি করে। তবে চাকরির আড়ালে টেক্কার দলে ডাকাতি করত। এই দলের ক্যাশিয়ার ছিলো আজাদ।

পিবিআইয়ের এই কর্মকর্তা রও বলেন, ব্যক্তিগত জীবনে টেক্কা দুটি বিয়ে করেছেন। তার প্রথম স্ত্রী মিরপুরে থাকে। আর দ্বিতীয় স্ত্রী গাজীপুর। গাবতলী আমির বাজার এলাকায় আত্মগোপন করতেন। টেক্কা তার দল সাভার, আশুলিয়া গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় মালবাহী ট্রলার, বালুবাহী ভলগেটসহ বিভিন্ন নৌযানে ডাকাতি চাঁবাবাজি করতেন। টেক্কার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় হত্যা, ডাকাতিসহ বিভিন্ন গটনায় নয়টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া তার সেকেন্ড ইন কমান্ড রুহুল আমিন ওরফে লেদুর বিরুদ্ধে তিনটি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে।

(ঢাকাটাইমস/১০জুন/এলএম/কেএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
আজ দেশে ফিরছেন খালেদা জিয়া, পথে পথে অভ্যর্থনা জানাবেন নেতাকর্মীরা
হিরো আলমের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও গর্ভপাত ঘটানোর অভিযোগে মামলা
প্যাথলজিক্যাল নমুনা বিদেশে পাঠাতে অনুমতি লাগবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের
বেইলি রোডে ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টারে আগুনের সূত্রপাত নিয়ে যা জানা গেল 
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা