স্মাইল ডিজাইনিং: দাঁতের সৌন্দর্য বৃদ্ধির চিকিৎসা

মানুষের সুস্থ সুন্দর দাঁত এবং হাসি সৌন্দর্যের আকর্ষণীয়তা বৃদ্ধি করে। সুন্দর হাসি দিয়ে মন জয় করা যায়। আমাদের মধ্যে অনেকেই হাসি লুকিয়ে রাখে। সৌন্দর্য ও ব্যক্তিত্ব প্রকাশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হলো হাসি। হাসিকে সুন্দর ও আকর্ষণীয় করতে অর্থোডেন্টিস্টের পাশাপাশি কসমেটিক বা এস্থেটিক ডেন্টিস্টরাও এখন উন্নত বিশ্ব সমমানের। দাঁতের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি হচ্ছে স্মাইল ডিজাইনিং। এই পদ্ধতিতে দাঁতের সৌন্দর্য কয়েক গুণ বৃদ্ধি করা সম্ভব। স্মাইল ডিজাইনিংয়ের মাধ্যমে আমাদের আত্মবিশ্বাসকে কয়েক গুণ বৃদ্ধি করতে পারি।
স্মাইল ডিজাইনিং বা কসমেটিক ডেনটিসট্রির মাধ্যমে দাঁত ও হাসির সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনে। স্মাইল ডিজাইনিংয়ের মাধ্যমে দাঁতের স্বাভাবিক সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনা হয়। দাঁতের রং হলুদ দেখা দিলে, দাঁত ক্ষয় হয়ে গেলে, দাঁত ভেঙ্গে গেলে, দাঁত না থাকলে স্মাইল ডিজাইনিংয়ের মাধ্যমে দাঁতের সৌন্দর্য বৃদ্ধির চিকিৎসার মাধ্যমে দাঁত ও হাসির সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনা হয়।
ওরাল সার্জারি, অর্থোডোনসিয়া, কনসারভেটিভ ডেনটিসট্রি, প্রসথোডনটিকস-এগুলো সবই স্মাইল ডিজাইনিং বা কসমেটিক ডেনটিসট্রির আওতায় পড়ে। মনে করেন দাঁত আঁকাবাকা হলো, অথবা চোয়ালটা সামনের দিকে এগিয়ে এলো, তাহলে তো দেখতে সুন্দর লাগবে না। দাঁতগুলো ফাঁকা, দাঁতে হয়তো কোনো দাগ লেগে গেছে, অথবা দাঁতের গঠনই হয়তো ছোট হয়ে গেছে- এগুলোকে পুনর্গঠন করে সুন্দরভাবে আবার সঠিক অবস্থানে এনে যেভাবে হওয়া উচিত, সেভাবে করা হয়। হাসির ডিজাইনকে পরিবর্তন করার জন্য যত খারাপ দাঁতই হোক, তাকে সুন্দর করা সম্ভব। জেনে নিন স্মাইল ডিজাইনিংয়ের মাধ্যমে যেভাবে দাঁতের সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনবেন-
দাঁতের স্বাভাবিক সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে
স্মাইল ডিজাইনিং বর্তমান সময়ে একটি আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি। অনেকেরই দেখা যায় বিভিন্ন বদভ্যাসের কারণে দাঁতের সৌন্দর্য প্রায় নষ্ট করে ফেলে। দীর্ঘদিন পান খাওয়া দাঁতের যত্ন না নেওয়া, নিয়মিত ব্রাশ না করা, দাঁত দিয়ে অতিরিক্ত শক্ত খাবার চাবানো, এছাড়াও আরো অনেক কারণ আছে যে সকল কারণে দাঁতের সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যেতে পারে। স্মাইল ডিজাইনিং করার মাধ্যমে দাঁতের এই সকল সমস্যাগুলো সমাধান করা হয় এবং দাঁতের সৌন্দর্য স্বাভাবিক করা হয়।
দাঁতের রং হলুদ হলে
অতিরিক্ত চা কফি বা ওয়াইন কোলা বা অন্যান্য পানীয় অতিরিক্ত খেলে বা অতিরিক্ত ধূমপান করলেও দাঁতের রং হলুদ হয়ে যেতে পারে বা অস্বাভাবিক কালার হয়ে যেতে পারে। জন্মগতভাবে দাঁতের উপরের স্তর বা এনামেলের কালার অস্বাভাবিক হতে পারে। তবে এসব ক্ষেত্রে সাধারণ কিছু চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে যেগুলো নিলে এই সমস্যার সমাধান হয়ে যায় তবে যাদের সাধারণ চিকিৎসা নেওয়ার পরেও এই সমস্যাগুলো না যাবে সেক্ষেত্রে তারা চাইলে স্মাইল ডিজাইনিং করার মাধ্যমে এই সমস্যাগুলো সমাধান করতে পারে।
দাঁত ক্ষয় হয়ে গেলে
বর্তমান সময়ে একটি কমন সমস্যা দন্ত ক্ষয়। বিভিন্ন কারণে দন্ত ক্ষয় হতে পারে এর মধ্যে প্রধান কারণ হচ্ছে ব্যাকটেরিয়া। এছাড়াও চোয়ালের অস্বাভাবিক আকৃতির কারণে দন্ত ক্ষয় হতে পারে। এমন অনেকেই আছে যাদের দেখা যায় সামনের দাঁতের উপর থেকে এনামেল ক্ষয় হয়ে ডেন্টিন বা হলুদ একটি লেয়ার বের হয়ে যায়। এছাড়া এমনও দেখা যায় যে ক্ষয় হয়ে সামনের দাঁত ছোট হয়ে গিয়েছে অথবা দাঁতের বিভিন্ন জায়গায় গর্ত হয়ে গিয়েছে। বর্তমান সময়ে এই ধরনের সমস্যাগুলো খুব সুন্দর ভাবে স্মাইল ডিজাইনিং করার মাধ্যমে সমাধান করা হচ্ছে। যাদের দাঁতের উপরের স্তর নষ্ট হয়ে গিয়েছে তারা চাইলে তাদের দাঁতের উপরে আলাদা করে স্তর তৈরি করে নিতে পারেন এছাড়াও ক্ষয় হয়ে ছোট হয়ে যাওয়া দাঁত চাইলে বড় করে নিতে পারেন স্মাইল ডিজাইনিং করার মাধ্যমে।
দাঁত ভেঙে গেলে
বিভিন্ন কারণে দাঁত ভেঙে যেতে পারে । বর্তমান সময়ে দেখা যাচ্ছে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অ্যাক্সিডেন্ট করার কারণে দাঁত ভেঙে যাচ্ছে অথবা টিউবয়েলের হাতলের চাপ লেগে দাঁত ভেঙে যাচ্ছে। দেখা যাচ্ছে অতিরিক্ত শক্ত খাবার খাওয়ার ফলে দাঁত ভেঙে যাচ্ছে। অনেকই চিন্তায় পড়ে যায় এই ধরনের সমস্যা নিয়ে এবং অনেকেই আছে এই ধরনের সমস্যা হলে কিছু ভুল চিকিৎসা নিয়ে ফেলে। এই ধরনের সমস্যা হলে স্মাইল ডিজাইনিং করার মাধ্যমে এই সমস্যা খুব সুন্দরভাবে সমাধান করা সম্ভব মাত্র ১ থেকে ২ ঘন্টায়।
দাঁত না থাকলে
অনেকেই আছে যাদের দেখা যায় সামনের একটি দাঁত বিভিন্ন কারণে নষ্ট হয়ে গিয়েছে এবং ওই দাঁত তুলে ফেলতে হয়েছে। বর্তমান সময়ে পাশের দুই দাঁত না কেটে আধুনিক পদ্ধতিতে দাঁত লাগানোর নতুন একটি চিকিৎসা পদ্ধতি হচ্ছে ফাইবারব ব্রিজ। এই পদ্ধতিতে ন্যাচারাল দাঁতের কোনো ক্ষতি ছাড়া বা কোন প্রকার রুট ক্যানেল বা ক্যাপ করা ছাড়াই দাঁত তৈরি করে দেওয়া হয়। এটি ২ থেকে ৩ ঘন্টার চিকিৎসা প্রক্রিয়া।
সুস্থ দাঁত আমাদের খাবারকে চর্বণের মাধ্যমে হজমের উপযোগী করে তোলে, মুখের আকৃতি ও সৌন্দর্য ধরে রেখে ব্যক্তিত্বকে আকর্ষণীয় করে। সুস্থ দাঁত মস্তিষ্ককে পর্যাপ্ত রক্ত সঞ্চালনের মাধ্যমে আমাদের প্রাণচঞ্চল রাখে, স্মৃতিশক্তি স্বাভাবিক রাখে ও কাজে উৎসাহ জোগায়। সুস্বাস্থ্যের জন্য সুন্দর দাঁত সুস্থ হাসির ভূমিকা রাখে। দাঁতের সমস্যা অনুযায়ী রোগের শুরুতেই একজন অনুমোদিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। যত রোগ পুষে রাখবেন, তার চিকিৎসা পদ্ধতিও হবে জটিল, সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল।
(ঢাকাটাইমস/২৮ আগস্ট/আরজেড)

মন্তব্য করুন