তানভির ইমামের নেতৃত্বে স্কুলের ১১ কোটি টাকা লোপাট

নিজস্ব প্রতিবেদক, উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ)
 | প্রকাশিত : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৯:৪৩

সিরাজগঞ্জ-৪ (উল্লাপাড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য তানভির ইমামের নেতৃত্বে দলীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে গত সাত বছরে উল্লাপাড়ার স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মোমেনা আলী বিজ্ঞান স্কুলের প্রায় ১১ কোটি আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে স্কুল কমিটির দুই সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

জানা গেছে, আওয়ামী লীগের শাসনামলে দলীয় ক্ষমতাকে পুঁজি করে সাবেক সংসদ সদস্য তানভির ইমামের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়টি নিজেদের কুক্ষিগত করে রাখা বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন ও প্রতিষ্ঠাতাকে দাতা সদস্য থেকে বহিষ্কারের চেষ্টা, বিদ্যালয়ের ভবন বিক্রি ছাড়াও নানান অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। সলপ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী এহসানুল হক সন্টু, তানভির ইমামের ব্যক্তিগত সহকারী মীর আরিফুল ইসলাম উজ্জলের যোগসাজশে এসব অনিয়ম-দুর্নীতিতে সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন তাদের মনোনীত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রকিবুল ইসলাম।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রথমে সাবেক সংসদ সদস্য তানভির ইমাম নিয়ম বহির্ভূত ভাবে নিজেই মোমেনা আলী বিজ্ঞান স্কুলের এডহক কমিটির সভাপতি হন। এ সময় তিনি প্রতিষ্ঠাতা আকবর ও তার স্ত্রী মোমেনা আলীকে বিদ্যালয়ে প্রবেশে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। এরপর থেকে শুরু হয় স্কুলে তানভির ইমাম ও তার বাহিনীর একক আধিপত্য। এর ছয়মাস পর তার ব্যক্তিগত সহকারী শওকাত ওসমানকে সভাপতি করেন। দুই বছর পর কাজী এহসানুল হক সন্টু ও মীর আরিফুল ইসলাম উজ্জলকে বিদ্যালয়ের সভাপতির চেয়ারে বসান। উপজেলা সদরের এ স্কুলটি তারা পুরোপুরি দখলে নেন। বিদ্যালয়টি মনগড়া ভাবে পরিচালনা করতে প্রধান শিক্ষককে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নিজেদের পছন্দের রকিবুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেন। নামমাত্র প্রধান শিক্ষক হিসেবে রকিবুলকে দিয়ে বিদ্যালয়ের অর্থ তছরুপ স্বেচ্ছাচারিতাসহ নানান দুর্নীতি শুরু করেন তারা। নিজেদের ইচ্ছামতো স্কুলের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ উত্তোলনসহ ভর্তি বাণিজ্যের মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন।

এছাড়া তানভির কমিটিকে দিয়ে বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে মোমেনা আলী বিজ্ঞান স্কুলের পরিবর্তে তার মা ইসমতারার নামে ‘ইসমতারা বিজ্ঞান’ স্কুল করার চেষ্টা করেন। ২০১৪-২৩ সাল পর্যন্ত বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি ফি, বেতন ও অন্যান্য আদায়ের হিসাবে ব্যাপক গরমিল রয়েছে। ২০১৬ থেকে ২০২৩ এ সাত বছরে বিদ্যালয়ের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট প্রায় ২১ কোটি টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। এর ১০ কোটি বিভিন্ন খাতে ব্যয় দেখানো হলেও বাকি ১১ কোটি টাকার কোন হিসাব দেখাতে পারেনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রকিবুল ইসলাম।

স্কুলটির এমন অবস্থার কারণে উপজেলার সচেতন মহলের লোকজন উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। শিক্ষার মান ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি অনেকের। মোমেনা আলী বিজ্ঞান স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মজিদ বলেন, স্কুলের পক্ষ থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রকিবুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং শিক্ষার মান উন্নয়নে যথাযথ চেষ্টা করা হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা সুলতানা বলেন, এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এখনো কোন অভিযোগ পাইনি।

(ঢাকাটাইমস/১১সেপ্টেম্বর/এমআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :