১২ বছরে সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত কিছুই হয়নি: অনীক আর হক

গত ১২ বছরে সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্তের কিছুই হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক।
সোমবার বহুল আলোচিত এই সাংবাদিক দম্পতির হত্যা মামলার তদন্ত থেকে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র্যাব) সরিয়ে দিয়ে এ বিষয়ে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন টাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি ফারাহ মাহবুবের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে এ আদেশ দেন।
পরে এ বিষয়ে একটি সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক।
তিনি বলেন, ‘গত ১২ বছরে সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্তের কিছুই হয়নি, কারণ যাদেরকে এই মামলার তদন্তভার দেওয়া হয়েছিল অর্থাৎ র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) তদন্ত করার ক্ষমতা বা তদন্ত করার অভিজ্ঞতা কখনই নেই, র্যাব হচ্ছে একটি অপারেশনাল ফোর্স, তারা আইন প্রয়োগ করতে পারে কিন্তু তারা তদন্তের কাজ করার জন্য মোটেই উপযুক্ত ছিল না। তবে এ বিষয়টি আদালতকে কখনই অবগত করা হয়নি যে র্যাব এই মামলাটি তদন্ত করতে পারবে না। ফলে গত ১২ বছর ধরে মামলাটি এভাবেই ঝুলে ছিল।’
অনীক আর হক আরও বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে কথা বলে আদালতে আর্জি জানিয়েছিলাম, যাতে তদন্তকারী সংস্থা (র্যাব) রয়েছে সেটিকে পরিবর্তন করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দায়িত্ব দেওয়া হয় যে অতি শিগগিরই একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্স গঠন করবে, যেখানে বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা থাকবেন। যারা তদন্ত বা জিজ্ঞাসাবাদে যুক্ত থাকবেন। এছাড়া আমাদের পক্ষ থেকে একটি সময়সীমা নির্ধারণ করে দেওয়ারও আবেদন করি। আদালত আমাদের আবেদন মঞ্জুর করেছেন।’
এর আগে সাগর-রুনি হত্যার ঘটনায় করা মামলার তদন্তে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়। একই সঙ্গে বিভিন্ন বাহিনীর অভিজ্ঞ তদন্ত কর্মকর্তাদের নিয়ে এই টাস্কফোর্স গঠন করতে বলা হয়। টাস্কফোর্স গঠনের পর ৬ মাসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।
এসময় হাইকোর্ট বলেছেন, ‘আশা করি এবার ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে এবং তদন্তের জন্য দেওয়া এবারের ছয় মাস, মানে ছয় মাস।’
তার আগে রবিবার এই মামলায় প্রথমবারের মতো আইনজীবী শিশির মনিরকে নিয়োগ করেন মামলার বাদী ও রুনির ভাই নওশের আলী রোমান।
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকার পশ্চিম রাজাবাজারে ভাড়া বাসায় নির্মমভাবে খুন হন সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনি। পরদিন ভোরে তাদের ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি রুনির ভাই নওশের আলী রোমান বাদী হয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন।
প্রথমে মামলাটির তদন্ত করেন শেরেবাংলা নগর থানার একজন কর্মকর্তা। এরপর ওই বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্ত ভার পড়ে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উত্তরের পুলিশ পরিদর্শক মো. রবিউল আলমের ওপর।
দুই মাস পর হাইকোর্টের আদেশে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র্যাব)। সেই থেকে প্রায় ১২ বছরে ১১১ বার সময় নিয়েও তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি সংস্থাটি।
(ঢাকাটাইমস/৩০সেপ্টেম্বর/এমআর)

মন্তব্য করুন