পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পেলেন জে হপফিল্ড ও জিওফ্রে হিন্টন
কৃত্রিম নিউরাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে মেশিন লার্নিংয়ের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় এ বছর পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন মার্কিন পদার্থবিদ জন জে হপফিল্ড ও ব্রিটিশ-কানাডিয়ান কম্পিউটার বিজ্ঞানী জফ্রি ই হিন্টন। তাদের গবেষণা মেশিন লার্নিং ও এআই, তথা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার বিকাল ৩টা ৩০ মিনিটে সুইডেনের স্টকহোম থেকে এ বছরের পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করে ‘দ্য রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস’।
রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি জানিয়েছে, ‘হপফিল্ড এমন একটি কাঠামো তৈরি করেছেন যা তথ্য সংরক্ষণ এবং পুনর্গঠন করতে পারে। আর হিন্টন এমন একটি পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন যা স্বাধীনভাবে ডেটার বৈশিষ্ট্য আবিষ্কার করতে সক্ষম এবং যা বর্তমানে ব্যবহৃত বৃহৎ নিউরাল নেটওয়ার্কগুলোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।’
জন জে. হপফিল্ড একজন মার্কিন পদার্থবিদ এবং নিউরোসায়েন্টিস্ট। তিনি ১৯৮২ সালে হপফিল্ড নেটওয়ার্ক নামে পরিচিত কৃত্রিম নিউরাল নেটওয়ার্কের ধারণা প্রবর্তন করেন, যা তথ্য সংরক্ষণ এবং পুনর্গঠনের জন্য ব্যবহৃত হয়।
অপরদিকে জিওফ্রে ই. হিন্টন একজন ব্রিটিশ-কানাডিয়ান কম্পিউটার বিজ্ঞানী এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার গবেষক। তিনি নিউরাল নেটওয়ার্ক এবং ডিপ লার্নিংয়ের ক্ষেত্রে তার যুগান্তকারী কাজের জন্য বিশ্বব্যাপী পরিচিত। হিন্টন ১৯৮৬ সালে ব্যাকপ্রোপাগেশন অ্যালগরিদম উন্নয়ন করেন, যা নিউরাল নেটওয়ার্কের শিক্ষণ পদ্ধতি পরিবর্তন করে দিয়েছে।
নোবেলজয়ী এই দুই বিজ্ঞানী পাবেন একটি করে নোবেল মেডেল, একটি সনদপত্র এবং মোট ১১ মিলিয়ন বা এক কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১২ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
২০২৩ সালে পদার্থবিদ্যায় যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পান আমেরিকার পিয়ের অগস্টিনি, হাঙ্গেরির ফেরেঙ্ক ক্রাউৎজ এবং ফ্রান্সের অ্যানে এলহুইলার। এই তিন বিজ্ঞানীরই গবেষণার বিষয় অভিন্ন- ইলেকট্রন গতিবিদ্যা। গবেষণার মাধ্যমে আলোর অ্যাটোসেকেন্ড স্পন্দন সৃষ্টিতে সফল হয়েছেন তারা। অতি অল্প সময়ের এই স্পন্দনের মাধ্যমে ইলেকট্রনের দ্রুত গতিবিধির ছবি তোলা সম্ভব। রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি জানিয়েছে, ‘তিন নোবেলজয়ী তাঁদের পরীক্ষা-নিরীক্ষায় অণু-পরমাণুর অন্দরে ইলেকট্রনের জগৎ অন্বেষণের জন্য নতুন হাতিয়ার দিয়েছেন।’
আগামী ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা হবে। পুরস্কার ঘোষণার সবকিছু নোবেল প্রাইজ নামের একটি ওয়েবসাইট থেকে সরাসরি প্রকাশ করা হবে।
সোমবার ২০২৪ সালে যৌথভাবে চিকিৎসাশাস্ত্রের নোবেল পুরস্কার জিতেছেন দুই মার্কিন বিজ্ঞানী ভিক্টর অ্যামব্রোস ও গ্যারি রাভকান।
অন্যান্য নোবেল পুরস্কার ঘোষণার দিনক্ষণ:
১০ অক্টোবর: এদিন স্থানীয় সময় বিকাল ১টায় (বাংলাদেশ সময় বিকাল ৫টা) ঘোষণা করা তবে সাহিত্য ক্যাটাগরির পুরস্কার।
১১ অক্টোবর: নোবেলের সবচেয়ে আকর্ষণীয় শান্তি পুরস্কার বিজয়ীর নাম জানা যাবে এদিন। স্থানীয় সময় বেলা ১১টায় (বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩টা) বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে নরওয়ের নোবেল ইনস্টিটিউট থেকে।
১৪ অক্টোবর: ছয় নম্বর এবং সর্বশেষ অর্থনীতি ক্যাটাগরির পুরস্কার ঘোষণা করা হবে এদিন। এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে এ বছরের নোবেল পুরস্কার ঘোষণা শেষ হবে। স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩টা ৪৫ মিনিট) অর্থনীতিতে নোবেল বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে।
উল্লেখ্য, নোবেল পুরস্কারের জন্য প্রতিবছর ৩০০ জনের একটি তালিকা তৈরি করা হয়। এরপর যাচাই বাছাই শেষে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে এক বা একাধিক ব্যক্তিকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়।
(ঢাকাটাইমস/০৮অক্টোবর/এমআর)