উল্লাপাড়ায় সরিষা ফুলের মধুর অপার সম্ভাবনা

চলনবিল অধ্যুষিত সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার মোহনপুর, বড়পাঙ্গাসী, উধুনিয়া, বাঙ্গালা রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ফসলের মাঠ এখন হলুদ রঙে সয়লাব। যত দূর চোখ যায় হলুদ আর হলুদ। এই হলুদ ফুলে সুশোভিত মাঠে পাখা মেলেছে মৌমাছি-ভ্রমর। তাদের গুঞ্জনে কৃষকের মনও আনন্দিত। আর এই বিস্তীর্ণ হলুদ মাঠে মৌকুলের আনাগোনায় অপার সম্ভাবনা দেখছেন মৌ খামারিরা।
প্রতি বছরের মতো এবারও এ অঞ্চলের সরিষা ফুলকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মধু সংগ্রহের জন্য এসেছেন মধু চাষিরা। তারা মধু সংগ্রহের মহোৎসবে মেতে উঠেছেন। শত শত মৌ-বাক্স বসিয়ে মধু সংগ্রহ করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।
মধু সংগ্রহের পাশাপাশি খামারিরা সরাসরি খামার থেকে মধু বিক্রিও শুরু করেছেন। সরিষা খেত ঘিরে লাভের স্বপ্ন বুনছেন কৃষক ও মৌ খামারিরা।
উল্লাপাড়া উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, এ বছর উল্লাপাড়া উপজেলায় রেকর্ড পরিমাণ সরিষা চাষ হয়েছে। সরিষার ফুল ফোটার শুরুতেই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসতে শুরু করেন মৌ খামারিরা। গত বছর ১২৫টি মৌ-খামার বসলেও এবার বিভিন্ন মাঠে দুই হাজারের বেশি খামারি মৌ-বাক্স বসিয়েছেন। উল্লাপাড়া উপজেলা থেকে ১ লাখ ৮৪ হাজার ২৫৫ কেজি মধু সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এবার।
সরেজমিন দেখা যায়, উল্লাপাড়ার বিভিন্ন মাঠে মৌ খামারিরা বাক্স বসিয়ে মধু সংগ্রহ করছেন। মৌ খামারিরা সবচেয়ে বেশি ঘাঁটি গেড়েছেন উপজেলার পশ্চিম উত্তরের কয়েকটি ইউনিয়নে । গাইবান্ধা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, মাদারীপুরসহ বিভিন্ন জেলার মধু সংগ্রহকারীরা এ উপজেলায় মৌ বাক্স নিয়ে এসেছেন। সরিষার ফুল ঝরে যাওয়া পর্যন্ত বাক্স পেতে মধু সংগ্রহ করবেন তারা।
প্রতি বছর এ উপজেলা থেকে বেশি মধু উৎপাদন করে লাভবান হওয়ায় এবারও তারা মৌ-বাক্স বসিয়েছেন বলে জানান মৌ খামারিরা। তারা আশা করছেন, আবহাওয়া ভালো থাকলে গত বছরের তুলনায় এবার বেশি মধু সংগ্রহ করতে পারবেন তারা।
উধুনিয়া সরিষা মাঠে এবার প্রথম মৌ বাক্স বসান একই এলাকার তরুণ উদ্যোক্তা হারুন উর রশিদ। তিনি বলেন, ‘আমাদের উপজেলায় অধিক পরিমাণ সরিষা চাষ হওয়ায় প্রতি বছর বিভিন্ন জেলার মৌ খামারিরা এখানে বাক্স বসিয়ে মধু সংগ্রহ করেন। তাদের দেখাদেখি আমি এবার ছোট ভাইকে সাথে নিয়ে বাক্স বসিয়ে মধু সংগ্রহ শুরু করেছি।’
(ঢাকাটাইমস/২২ডিসেম্বর/মোআ

মন্তব্য করুন