নয়াদিল্লি রেল স্টেশনে পদদলিত হয়ে তিন শিশুসহ ১৮ জন নিহত

ভারতের নয়াদিল্লি রেল স্টেশনে যাত্রীদের অতিরিক্ত ভিড় ও ধাক্কাধাক্কির মধ্যে পড়ে পদদলিত হয়ে তিন শিশুসহ অন্তত ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে অনেকে।
জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে শনিবার রাত ১১টার দিকে ধাক্কাধাক্কির মধ্যে পড়ে চারজন নারী অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া যায়। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের উদ্ধার করে কাছার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, নয়াদিল্লি রেলস্টেশন চত্বরে পরিস্থিতি সামাল দিতে পরে দমকলের চারটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এর কিছুক্ষণ পরে হতাহতের খবর আসে। প্রথমে ১৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেলেও পরে দিল্লি পুলিশ ১৮ জনের প্রাণ হারানোর খবর নিশ্চিত করেছে।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাতে নয়াদিল্লি স্টেশনের ১৩ ও ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে কুম্ভমেলার পুণ্যার্থীদের ভিড় ছিল। ওই দুই প্ল্যাটফর্মে ট্রেন আসতে দেরি হচ্ছিল বলেও অভিযোগ করেন যাত্রীরা। দুটি ট্রেন বাতিল হয়ে গেছে, ফলে ভিড়ের মধ্যে দমবন্ধকর পরিস্থিতি তৈরি হয় বলে কেউ কেউ দাবি করেন। অনেকে দাবি করেন, ওই দুই প্ল্যাটফর্মে পদপিষ্টের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। তবে রেলের দাবি, এই সবই গুজব।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন। পদপিষ্ট হয়ে যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে এক্স হ্যান্ডলে মোদি লেখেন, “আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করি। ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে আছে প্রশাসন।”
এ ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবও। তিনি উচ্চপর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ শোক প্রকাশ করে এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, “স্টেশনে পদপিষ্টের ফলে অনেকে প্রাণ হারিয়েছেন। আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করি।”
পাশাপাশি, তিনি মৃত পরিবারদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন।
দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, “দিল্লি স্টেশনে পদপিষ্টের ঘটনায় মৃত ও আহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই। মুখ্যসচিব ও পুলিশ কমিশনারকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
যদিও উত্তর রেলের মুখ্য জনসংযোগ কর্মকর্তা এএনআইকে বলেছেন, “নয়াদিল্লি স্টেশনে কোনো পদপিষ্টের ঘটনা ঘটেনি। গুজব ছড়ানোর কারণেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।”
রেলের ওই কর্মকর্তা জানান, প্রয়াগরাজে যাওয়ার জন্য দু’টি স্পেশাল ট্রেন চালানো হচ্ছে।
রেল মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, রেল পুলিশ এবং দিল্লি পুলিশের দল নয়াদিল্লি স্টেশনে পৌঁছেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে দাবি তাদের। এই ভিড়ের মধ্যে পড়ে আহত যাত্রীদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানায় রেল মন্ত্রণালয়।
রেল পুলিশের ডিসি বলেন, “প্রয়াগরাজ এক্সপ্রেস ১৪ নম্বর স্টেশনে দাঁড়িয়ে ছিল। সেই সময়ে স্টেশনে প্রচুর মানুষের ভিড় ছিল। স্বতন্ত্র সেনানি এক্সপ্রেস এবং ভুবনেশ্বর রাজধানী এক্সপ্রেস দেরি করছিল। তাই ওই দুই ট্রেনের যাত্রীরাও ১২, ১৩ এবং ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে অপেক্ষা করছিলেন। ১৫০০ জেনারেল টিকিট বিক্রি হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। সেই কারণেই ভিড় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল।”
(ঢাকাটাইমস/১৬ফেব্রুয়ারি/এফএ)

মন্তব্য করুন