প্রতারক, মামলাবাজ সিকদার লিটনের গ্রেপ্তারের খবরে আলফাডাঙ্গায় সর্বস্তরে স্বস্তি

ফরিদপুর প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ০৬ মার্চ ২০২৫, ১৪:২১| আপডেট : ০৬ মার্চ ২০২৫, ১৪:৫২
অ- অ+

ভয়ংকর প্রতারক ও বহু মামলার আসামি সিকদার লিটনকে গ্রেপ্তারের খবরে এলাকাবাসী স্বস্তি প্রকাশ করেছে। একইসঙ্গে এই প্রতারকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও করেছেন তারা।

প্রতারণায় সিদ্ধহস্ত ও মামলাবাজ সিকদার লিটনকে বুধবার দুপুরে ফরিদপুর থেকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরে তাকে আলফাডাঙ্গা থানায় নেওয়া হয়। তার বিরুদ্ধে থাকা একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতে নিয়েছে পুলিশ। আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন অর রশিদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আরও পড়ুন>> মামলাবাজ সিকদার লিটন: ৩ মাসে শুধু বিকাশেই লেনদেন সাড়ে ২২ লাখ, প্রতারণার টাকায় মানিলন্ডারিং!

এদিকে ডিবির হাতে প্রতারক সিকদার লিটন গ্রেপ্তারের খবরে বুধবার দুপুর থেকে আলফাডাঙ্গার সাধারণ মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে। উপজেলার বিভিন্ন মোড়, বাজারঘাটে সর্বত্র প্রতারককে নিয়ে আলোচনা চলছে। তাদের একটাই দাবি, লিটনকে এমন শাস্তির আওতায় আনা হোক, যাতে নতুন করে এলাকার মানুষকে নিয়ে মামলা বাণিজ্য বা মিথ্যা মামলায় ফাঁসাতে না পারে।

গোপালপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার টিটন মোল্লা বলেন, “সিকদার লিটন নামের এই প্রতারক মানুষকে ব্লাকমেইল করে, মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে এবং টাকা ইনকাম করে। এভাবে মাত্র তিন মাসে ১৮ লাখ টাকা ইনকাম করছে। তার শাস্তি হওয়া দরকার। পাশাপাশি এসব প্রতারকের ইন্ধনদাতাদেরও আইনের আওতায় আনা উচিত।”

আলফাডাঙ্গার কামারগ্রাম এলাকার বাসিন্দা হোসেন মিয়া বলেন, “এ ধরনের লোক যেকোনো এলাকার জন্য কলঙ্কজনক। এর আগেও প্রতারণা করে সে গ্রেপ্তার হয়েছিল। কিছুদিন আগে জেল থেকে বের হয়ে আবারও একই কাজ শুরু করেছে। এবার তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেখার জন্য এলাকাবাসী অপেক্ষা করছে।”

এই প্রতারক যাতে আইনের ফাঁক গলে বের না হতে পারে সেই দাবি জানান তিনি।

আলফাডাঙ্গা বাজারের ব্যবসায়ী মো. শাখাওয়াত হোসেন বলেন, “এলাকার উচ্ছৃঙ্খল ও চিটার লিটনকে ধরার জন্য পুলিশকে ধন্যবাদ। এখন আলফাডাঙ্গার পরিবেশ খুব ভালো হবে আশা করি।”

তিনি আরও বলেন, “এই প্রতারক এমনই জঘন্য যে, গ্রেপ্তারের পর তার পরিবারের সদস্যরাও থানায় দেখতে পর্যন্ত আসেনি।”

আলফাডাঙ্গা বাজারের অটোরিকশা চালক রবিউল ইসলাম বলেন, “মানুষের হয়রানি করে টাকা ইনকাম করা ছিল লিটনের কাজ। ধনী-গরিব সবাইকে সে কষ্ট দিত। চাকরি দেওয়ার নামে এলাকায় অনেক মানুষের কাছ থেকে সে টাকা নিয়েছে। টাকা চাইতে গেলে উল্টো হয়রানি করত।”

জানা গেছে, ২০২০ সালের অক্টোবরে র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয় সিকদার লিটন। এরপর প্রায় চার বছর কারাগারে ছিল। এর আগেও বিভিন্ন মামলায় কারাবন্দি ছিল সে। আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এই প্রতারক কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে শুরু করেছিল মামলা বাণিজ্য। সমাজের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, স্বনামধন্য ব্যক্তিকে মামলার ভয় দেখিয়ে নিয়েছে মোটা অঙ্কের অর্থ। সর্বশেষ তিন মাসে তার বিকাশ অ্যাকাউন্টে সাড়ে ২২ লাখ টাকা লেনদেনের তথ্য জানিয়েছে পুলিশ। যার বেশির ভাগ অর্থই মামলার ভয় দেখিয়ে উপার্জন করা।

এদিকে লিটনের বিরুদ্ধে রাজধানীর ভাটারা থানায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হওয়া হত্যা মামলা আছে। এছাড়া মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যাচেষ্টার মামলা রয়েছে।

ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শৈলেন চাকমা জানান, সিকদার লিটনের ক্রিমিনাল ডাটা ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম বা সিডিএমএসে ১৩টির বেশি মামলার তথ্য রয়েছে। একই সঙ্গে অনেকগুলো সাধারণ ডায়েরি আছে তার বিরুদ্ধে। ভয়ংকর এই প্রতারককে গ্রেপ্তারের পর আদালতে পাঠিয়েছে আলফাডাঙ্গা থানা পুলিশ।

পাঁচ আগস্ট সরকার পতনের দিন কারাগারে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান জাবেদ নামে একজন যুবক। নিহতের পরিবারের সঙ্গে লিটনের কোনো সম্পর্ক না থাকলেও খালাতো ভাই দাবি করে কেরানীগঞ্জ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করে লিটন সিকদার৷ এই মামলায় আসামি করার ভয় দেখিয়ে অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে সে। ঘটনা জানাজানি হলে নিহত জাবেদের ভাই মাইনুদ্দীন মোহাম্মদপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।

(ঢাকাটাইমস/০৬মার্চ/এফএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
নিরাপদ স্থান ছাড়াই চার লাখ ২৩ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি আবারও বাস্তুচ্যুত: জাতিসংঘ
শোবিজ তারকারা ব্যাট-বল নিয়ে আবারও মাঠে নামছেন  
এপ্রিলে রাজনৈতিক দলের মধ্যে বিএনপিকে জড়িয়ে সবচেয়ে বেশি অপতথ্য প্রচার
গাজাজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় ৩১ জন নিহত
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা