ওয়াকফ আইন পশ্চিমবঙ্গে বলবৎ হবে না: মমতা

বিতর্কিত ওয়াকফ বিল নিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদসহ একাধিক জায়গায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। কোথাও কোথাও পুলিশ ও সাধারণ মানুষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যবাসীর উদ্দেশে শান্তিরক্ষার বার্তা দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শনিবার দুপুরে মমতা নিজের এক্স হ্যান্ডেলে পোস্টে বলেন, ‘স্পষ্ট ভাবেই বলা হয়েছে, ওয়াকফ আইনকে রাজ্য সরকার সমর্থন করে না। বাংলায় তা বলবৎও হবে না। তা হলে হিংসা কেন?’ একইসঙ্গে সহিংসতায় যারা উস্কানি দিচ্ছেন, তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা।
পোস্টে তিনি আরও লিখেছেন, ‘সেই আইনটি (ওয়াকফ) কিন্তু আমরা করিনি। আইনটি কেন্দ্রীয় সরকার করেছে। তাই উত্তর যা চাওয়ার কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে চাইতে হবে।’
রাজনৈতিক দলের চক্রান্তের কথাও উল্লেখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি লিখেছেন, ‘কিছু রাজনৈতিক দল ধর্মকে অপব্যবহার করে রাজনৈতিক সুবিধা নিতে চাইছে। তাদের প্ররোচনায় পা দেবেন না। আমি মনে করি, ধর্ম মানে মানবিকতা, সহৃদয়তা, সভ্যতা ও সম্প্রীতি। সকলে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখুন— এই আমার আবেদন।’
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে ভারতের লোকসভায় ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল-২০২৫ পাস হয়। পরে গত ৫ এপ্রিল দেশটির রাষ্ট্রপতি এতে সম্মতি দেন এবং এরপর বিলটি আইনে পরিণত হয়। এর পর থেকেই ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বিলটিকে ‘অসাংবিধানিক’ ঘোষণা করে এটি বাতিলের দাবিতে রাস্তায় নামে সাধারণ মুসলিমরা।
ওয়াকফ আইনের সবচেয়ে বিতর্কিত ধারাগুলোর একটি হলো এখানে একজন অমুসলিমকে ওয়াকফ বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বিতর্কিত ধারা অনুযায়ী, রাজ্যগুলোর ওয়াকফ বোর্ডে নিজ নিজ রাজ্য সরকার অন্তত দুজন অমুসলিমকে নিয়োগ দিতে পারবে। একজন জেলা প্রশাসক (ডিসি) বিতর্কিত সম্পত্তিকে ওয়াক্ফ হিসেবে নির্ধারণ বা সরকারের মালিকানায় হস্তান্তর করার ক্ষমতা পাবেন।
পুরোনো আইন অনুযায়ী, কোনো সম্পত্তি ওয়াকফ ঘোষণার একমাত্র অধিকারী ছিল ওয়াকফ বোর্ড। নতুন আইনে সেই অধিকার দেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসক বা সমপদমর্যাদার কোনো সরকারি কর্মকর্তাকে।
(ঢাকাটাইমস/১২এপ্রিল/এমআর)

মন্তব্য করুন