এনজিওকর্মী হত্যা: দুই জনের মৃত্যুদণ্ড
ঢাকার আশুলিয়ায় আশা এনজিওর কিস্তির টাকা আদায় করতে গিয়ে সিনিয়র লোন অফিসার মোছা. সাবিনা ইয়াসমিনকে হত্যার মামলায় দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন আদালত।
সোমবার ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক নাসরিন জাহান এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে আরেক আসামির ৭ বছরের কারাদণ্ড এবং অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় অপর ৮ আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি হলেন— মোসা. রাজিয়া খাতুন ও মো. আশরাফুল ইসলাম মানিক।
মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ডে করা হয়। এছাড়া তথ্য গোপন করে মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার অপরাধের জন্য তাদের প্রত্যেককে সাত বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ দশ হাজার করে টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও পাঁচ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত । একই দণ্ডে দণ্ডিত ও অর্থদণ্ড করা হয়েছে মো. মোসলেম মিয়াকেও।
রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
এছাড়াও অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় খালাস পাওয়া আসামিরা হলেন- মোসা. নার্গিস, মো. বিজয় আহমেদ পাপ্পু, জুয়েল রানা, শাকিল, মনির হোসেন, আসলাম, আকাশ ও সুজন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, আসামি আশরাফুল ইসলাম মানিক ও মোসলেম আশা সমিতি থেকে কিস্তি নিয়ে নিয়মিত পরিশোধ করতে পারেন না। এজন্য তাদের কাছে আশুলিয়া থানাধীন বিকেএসপি ব্রাঞ্চ শাখার সিনিয়র লোন অফিসার সাবিনা ইয়াসমিন কিস্তি চাইতে যান। এ বিষয়ে আগেই আসামিরা সাবিনাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। একইসঙ্গে তার কাছে থাকা সমিতির বিভিন্ন সদস্যদের আদায়কৃত টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করে।
২০১৭ সালের ১৪ অক্টোবর দুপুর দেড়টার দিকে আশা কর্মী সাবিনা ঢাকার আশুলিয়ার কবিরপুর দেওয়ানপাড়ায় কিস্তি আনতে গেলে আসামি মোসলেম, তার স্ত্রী রাজিয়া, আশরাফুল ইসলাম মানিক এবং তার স্ত্রী নার্গিস ভিকটিমকে বাসার ভিতরে কৌশলে টেনে নিয়ে যায়। তারা সকলে মিলে ভিকটিমকে শ্বাসরোধে নির্মমভাবে হত্যা করে লাশ গুম করে।
এ ঘটনার দুইদিন পর ১৬ অক্টোবর আশুলিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন আশা এনজিওর বিকেএসপি শাখার ব্রাঞ্চ ম্যানেজার আব্দুল মজিদ। মামলাটি তদন্ত শেষে ১১ জনকে অভিযুক্ত করে ২০১৮ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক মো. আশরাফুল আলম। পরের বছরের ২৬ মে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু করেন আদালত। মামলার বিচার চলাকালে আদালত ১৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। অন্যদিকে আসামিপক্ষে ৬ জন সাফাই সাক্ষ্য দেন।(ঢাকাটাইমস/২৫নভেম্বর/আরজেড/এমআর)
মন্তব্য করুন