পরিবেশবান্ধব পর্যটন শিল্পের বিকাশে কমিশন গঠনের আহ্বান এবি পার্টির
পরিবেশবান্ধব পর্যটন শিল্পের বিকাশে অবিলম্বে কমিশন গঠন করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি। পরিবেশবান্ধব পর্যটন শিল্পের বিকাশ দরকার। তবে পরিবেশের দোহাই দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবার কোনো সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন দলটির যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ।
শনিবার ‘পরিবেশবান্ধব পর্যটন খাত বিনির্মাণে করণীয়’ বিষয়ে এবি পার্টি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
পর্যটন খাতের বিদ্যমান পরিস্থিতি নিয়ে ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, ‘সমুদ্র সৈকত ঘিরে পর্যটন অবকাঠামো উন্নয়নে পর্যটন, কর্মসংস্থান, পরিবেশবান্ধব জ্বালানি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সাশ্রয়, মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে আনা এবং প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য উপযোগী করে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। সমুদ্র সৈকতকে দ্বিখণ্ডিত না করে প্রাণ, প্রকৃতি, পরিবেশবান্ধব জিরো কার্বন নীতিমালা অনুযায়ী বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, অপসারণ, যত্রতত্র পার্কিং, বর্জ্য ফেলাকে নিরুৎসাহিত করতে হবে এবং বিকল্প ব্যবস্থাপনার আয়োজন করতে হবে।’
এ বি পার্টির নেতা আরও বলেন, দেশের বিশাল জনগোষ্ঠীর লক্ষ লক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবার সুযোগ তৈরি করতে হবে, এই পর্যটন শিল্পের বিকাশ নিশ্চিত করে নবায়নযোগ্য জ্বালানি কেন্দ্র স্থাপন করা তথা বায়ু বিদ্যুৎ, পানি বিদ্যুৎ, সোলার প্যানেল বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র করতে উৎসাহিতকরণ বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট হিসেবে কাজ করে সেভাবে আমাদের দেশেও তাকে উৎসাহিত করতে হবে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক চার লেনের কাজ দ্রুত সময়ে শুরু করতে। ঢাকা-কক্সবাজার এ ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে। কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দ্রুত সময়ে চালু করতে হবে।
‘১২০ কিলোমিটার সমুদ্র সৈকতের পুরো অংশ ব্যবহার উপযোগী করে পর্যটকদের জন্য খুলে দিতে হবে; সমুদ্র সৈকত থেকে ঝুপড়ি দোকান, হকার, এবং ভিক্ষুক মুক্ত করতে হবে। দৃষ্টিনন্দন ও সময়োপযোগী বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে স্থাপনা তৈরি করতে কাউকে যথাযথ ভূমিকা নিতে হবে; সকাল বেলা সমুদ্রে গোসলের পর বিকাল বেলার বিনোদনের উপকরণসহ সুযোগ তৈরি করতে হবে; শিশু পার্ক, আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল, শপিংমল স্থাপনে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে উৎসাহী করতে হবে; পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন করতে হলে সবার আগে পর্যটন প্রেমী, সেবার মনমানসিকতা সম্পন্ন একদল মানুষ তৈরি করতে হবে অন্ধকার ও অপরিষ্কার সৈকতকে আলোকিত ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন সৈকতকে করতে সরকারি বেসরকারি সংস্থার সহযোগিতা দরকার।’
ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, ‘বিদ্যমান বাস্তবতা ও নিরাপত্তার বিষয়টি সামনে রেখে তিনটি পার্বত্য জেলায় পর্যটন শিল্পের বিকাশে কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। প্রাণ ও প্রাকৃতিক বিশেষজ্ঞ, পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের নিয়ে সেন্টমার্টিনে পর্যটকদের ভ্রমণ এবং অবস্থানের বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। সিলেট, কুয়াকাটা, পার্বত্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজারে দেশীয় পর্যটক এর পাশাপাশি বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে নানাবিধ প্রকল্প নিয়ে কাজ করতে। বিদেশি পর্যটকদের জন্য আলাদা জোন করে, তাদের নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক মানের সুযোগ সুবিধার নিশ্চিত করতে হবে। দেশি-বিদেশি প্রচার প্রচারণায় পর্যটন এলাকাগুলোকে সুন্দরভাবে তুলে ধরতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পর্যটন শিল্পের সাথে জড়িত ব্যবসায়ীদের নিয়ে একটি জাতীয় পরিচালনা কমিটি গঠন করে যাবতীয় কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে হবে; সংশ্লিষ্ট লোকজনকে প্রশিক্ষণ দিয়ে এই খাতের যোগ্য ও দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে সিনিয়র সহকারী সদস্য সচিব আব্দুল বাসেত মারজান, মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আলতাফ হোসাইন, যুবপার্টির আহ্বায়ক শাহাদাতুল্লাহ টুটুল, সহকারী সদস্য সচিব সারোয়ার সাঈদ ও মেহেদী হাসান চৌধুরী পলাশ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টি ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক গাজী নাসির, মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব সেলিম খান, দক্ষিণের যুগ্ম সদস্য সচিব আহমাদ বারকাজ নাসির, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হালিম নান্নু, যুবপার্টির প্রচার সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন রমিজ, মহানগর উত্তরের যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুর রব জামিল, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এনামুল হক, আমেনা বেগম সহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
(ঢাকাটাইমস/২৩নভেম্বর/এমআর)
মন্তব্য করুন