এবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের বছর?

এম গোলাম মোস্তফা, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ০৮:২৬

গত বছর গ্রীষ্মে অস্বাভাবিক গরমে পুড়েছে দেশ। বর্ষা, শরতেও ভ্যাপসা গরমা ছিল সহ্যের অতীত। তারচেয়ে বড় কথা, চলতি বছর শীত মৌসুমটাও ছিল অস্বাভাবিক উষ্ণ। সেভাবে ঠান্ডা পড়েছে বলতে গেলে এক সপ্তাহের মতো। এর মধ্যে এসেছে বসন্ত, সঙ্গে সঙ্গেই উধাও শীতকাল।

এবারের গ্রীষ্মও কি তবে গতবারের মতই পোড়াবে মানুষকে? এরই মধ্যে বলাবলি হচ্ছে বিষয়টি নিয়ে। তবে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, এল নিনোর প্রভাবে গত বছর তীব্র গরম থাকলেও সেই প্রভাব কেটেছে চলতি ফেব্রুয়ারি মাসে। এই মাসের গড় তাপমাত্রা এখন পর্যন্ত গত বছরের চেয়ে কিছুটা কম। তার আগের ছয় মাসের তামপাত্রা ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে এক থেকে কখনও আড়াই ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি।

এবার গ্রীষ্ম কেমন যাবে সে বিষয়ে পূর্বাভাস দিতে দিতে মার্চের শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ। তবে এখন পর্যন্ত যতটা আভাস মিলছে, তাতে ২০১৭ সালটা হতে পারে দুর্যোগপূর্ণ। অতিবৃষ্টি, বন্যা, ঝুর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস আঘাত হানতে পারে দেশে।

এই আবহাওয়াবিদ জানান, প্রশান্ত মহাসাগরে উপরিভাগের পানির তাপমাত্রার পর্যায়ক্রমিক পরিবর্তন এল নিনোর প্রভাবে গোটা ২০১৬ সালে বাংলাদেশের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় গড় তাপমাত্রা ০.৯২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। ভারতেও এটা বেশি ছিল স্বাভাবিকের তুলনায় ০.৯১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি।

এই আবহাওয়াবিদ জানান, এল নিনো দেখা দিলে এর প্রভাবে বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ার লক্ষণ দেখা দেয় এবং আবহাওয়ার নিয়মিত ধরণগুলোতে পরিবর্তন দেখা দেয়। এল নিনোর কোন নির্দিষ্ট সময় নেই, তবে প্রতি তিন থেকে আট বছরের মধ্যে এটি দেখা যায়। সাধারণত ক্রান্তীয় অঞ্চলের দেশগুলো এল নিনোতে বেশি আক্রান্ত হয়। ২০১৫ সালে শুরু হওয়া এল নিনো ২০১৬ সালে পর্যন্ত স্থায়ী ছিল।

বজলুর রশিদ জানান, প্রশান্ত মহাসাগরের তাপমাত্রা প্রশমিত হয়ে এসেছে। এ থেকে আভাস মিলছে এল নিনোর অবসান ঘটেছে। তবে আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লা নিনা অর্থাৎ এল নিনোর সম্পূর্ণ বিপরীত স্বভাবের আবহাওয়ার ধারা গড়ে ওঠার ৭৫% সম্ভাবনা রয়েছে। এটি হলে এবারের গ্রীষ্মে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টি, ঝড়, বন্যা, সাইক্লোন দেখা দিতে পারে।

লা নিনা সবশেষ এসেছিল ২০১০ সালে এবং তা ২০১২ সাল পর্যন্ত স্থায়ী হয়। ওই সময় থাইল্যান্ডে স্বাভাবিকের চেয়ে তিনগুণ বৃষ্টি হয়। দেশের ৭৬ ভাগ বন্যা কবলিত হয়ে পড়ে। এতে ৮১৫ জন মানুষের প্রাণহানির পাশাপাশি দেশের চার হাজার কোটি ডলারের ক্ষয়ক্ষতি ঘটে। ২০১০ সালে অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডে বন্যা দেখা দেয় এবং ৩৩ জন মানুষের মৃত্যু এবং বিপুল সম্পদের ক্ষতি হয়।

আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ ঢাকাটাইমসকে বলেন, গত বছরের তুলনায় তাপমাত্রা এখনও স্বাভাবিকের তুলনায় কাছাকাছি অবস্থান করছে। সারা দেশে তাপমাত্রা চট্টগ্রামে স্বাভাবিকের তুলনায় কম আছে এবং রাজশাহী রংপুরে বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ২০১৫-১৬ সালে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি ছিল।

গত বছরের তুলনায় ফেব্রুয়ারি মাসে তাপমাত্রা একটু কম লক্ষ্য করা যাচ্ছে জানিয়ে এ আবহাওয়াবিদ বলেন, স্বাভাবিকের তুলনায় ফেব্রুয়ারি মাসের তাপমাত্রা একটু কম। কিন্তু ডিসেম্বর জানুয়ারিতে গত বছরের তুলনায় এক থেকে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বেশি ছিল।

বজলুর রশিদ বলেন, ‘এ বছর শীতের তীব্রতা তেমন একটা ছিল না। সচরাচর শীতকালে আমরা সাইক্লোন দেখি না। তবে এ বছর শীত কালেও সাইক্লোন হয়েছে। এর প্রভাবে সমুদ্রে তাপমাত্রা বেশি ছিল। আর এ কারণেই শীতের তীব্রতা ছিল না।’

(ঢাকাটাইমস/১৯ফেব্রুয়ারি/জিএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

রপ্তানি করে পাটকে আরও উচ্চতায় নিতে হবে: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী

স্যাটেলাইট প্রযুক্তিতে শিক্ষাথীদের দক্ষতা অর্জনে সহযোগিতায় আগ্রহী ফ্রান্স: পলক

আবারও দেশের সাত জেলার ওপর বইছে মৃদু তাপপ্রবাহ

‘স্বপ্নজয়ী মা’ সম্মাননা পেলেন ১১ জন

হিন্দাল শারক্বীয়ার তিন সদস্য গ্রেপ্তার, নিখোঁজরা কি আছে এই তালিকায়?

লু’র সফরে ভিসানীতি ও র‍্যাবের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আলোচনা হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

কুতুবদিয়ায় নোঙর করেছে এমভি আবদুল্লাহ

আসন্ন বাজেটে সামাজিক সুরক্ষায় উপকারভোগীর সংখ্যা বাড়ছে: অর্থ প্রতিমন্ত্রী

বলিপাড়া-রুমা সীমান্ত পরিদর্শন করলেন বিজিবি মহাপরিচালক

দেশে বজ্রপাত নিরোধযন্ত্র স্থাপনে সহায়তা করতে চায় ফ্রান্স

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :