পলাশের হাটবাজারে নিষিদ্ধ পলিথিনে সয়লাব

এম লুৎফর রহমান, নরসিংদী
 | প্রকাশিত : ০২ মার্চ ২০১৭, ১১:১৫

নরসিংদীর পলাশে পলিথিন ব্যাগ বর্জন করে পরিবেশ বিপর্যয় থেকে রক্ষা করতে অভিযান চলমান থাকলেও উপজেলার গ্রাম-গঞ্জের হাট-বাজারে সর্বত্র এখন নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগে সয়লাব। প্রতিনিয়ত বাজার বহনকারী শপিংব্যাগসহ উপজেলার হাট-বাজারের সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পণ্যসামগ্রীর সঙ্গে নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগ ফ্রি দেয়া হচ্ছে। যত্রতত্র ব্যাগ ফেলে পরিবেশ দূষিত করা হচ্ছে।

রাস্তাঘাট, নদী-নালা, ড্রেন ও মাটির গর্তে বর্ষার পানিতে পলিথিনের আবর্জনা ছড়িয়ে পড়ছে। বন্ধ হচ্ছে ড্রেনের মুখ। পলাশ উপজেলার ছোট বড় হাট-বাজার থেকে শুরু করে পাড়া-মহল্লার স্টেশনারি, মুদি দোকান, ফল ব্যবসায়ীরা প্রত্যেকেই প্রকাশ্যে নিষিদ্ধ পলিথিনের অবাধ ব্যবহার করছে। বাংলাদেশ পরিবেশ অধিদপ্তরের উদ্যোগে সমগ্র বাংলাদেশে পলিথিন শপিংব্যাগবিরোধী অভিযানে কিছুটা কমলেও আবারো শপিংব্যাগসহ উপজেলার হাট-বাজারে সব ধরনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে পণ্যসামগ্রীর সঙ্গে নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা।

পলিথিন শপিংব্যাগের ক্ষতিকারক বিষয়গুলো বিবেচনা করে ২০০২ সালের ৮ এপ্রিল সরকারি সিদ্ধান্তে সর্বপ্রকার পলিথিন শপিংব্যাগ উৎপাদন, আমদানি, বাজারজাতকরণ, বিক্রয়, বিক্রয়ের জন্য প্রদর্শন, মজুত, বিতরণ, বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে পরিবহন ও ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। এ আদেশ জারির পর কিছুদিন পলিথিন শপিংব্যাগের ব্যবহার বন্ধ হয়ে থাকে। কিন্তু আইন বাস্তবায়নে কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ পরিলক্ষিত না হওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থানের মতো নরসিংদীর পলাশ উপজেলার সর্বত্র সর্বপ্রকার পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার হচ্ছে। পলিথিন মাটিতে পচে না, গলে না এবং মাটির উর্বরা শক্তি কমিয়ে দেয়ার ফলে কৃষি জমিতে ফসল হচ্ছে কম।

পলাশ উপজেলার কৃষক আবদুল হাকিম, হাছনআলী, বজলু মিয়া, রশিদ মিয়া, কাঞ্চন মিয়া বলেন, পলিথিনের কারণে যেখানে কানি প্রতি ৩০ মন ধান হতো, এখন ধানের পরিমাণ কমে গেছে অনেক। জমির উর্বরতা বাড়িয়ে ধান, গম, সরিষা, শাক, সবজি ফলন বাড়াতে হলে পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। নয়তো বা দিনে দিনে চাষাবাদী জমি নষ্ট হয়ে অনূর্বর হয়ে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়ে ফলন কমে যাবে। পলিথিন ব্যাগ ড্রেন, নর্দমায় পড়ে পানি নিষ্কাশন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এমনকি ড্রেন বা নালার মুখ বন্ধ হয়ে হাট-বাজারে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে।

অপর দিকে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি পরিবেশ অধিদপ্তরের উদ্যোগে পলাশ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) অমিথ দেবনাথের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ঘোড়াশাল বাজারে ৫টি প্রতিষ্ঠানে নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার করার অপরাধে ৪৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তারপরেও বন্ধ হচ্ছে না পলাশে নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগ।

এসব বিষয়ে পলাশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার জানান, পলিথিন ব্যাগ পরিবেশের জন্য খুবই ক্ষতিকারক। উপজেলার হাট-বাজারে নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যবহার ও বিক্রি না করার জন্য অভিযান চালিয়েছি। আমরা উপজেলার হাট-বাজারগুলোর কমিটির লোকজনকে নিয়ে কয়েকবার মিটিং করেছি, যাতে কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বা কোন দোকানে পলিথিন ব্যাগ বিক্রি ও ব্যবহার না করা হয়।

(ঢাকাটাইমস/২মার্চ/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :