বাংলাদেশের মুসলিম নারী : আইনগত মর্যাদা ও উত্তরাধিকার

মাহমুদা খান মলি
| আপডেট : ০৮ মার্চ ২০১৭, ১৬:৩৩ | প্রকাশিত : ০৮ মার্চ ২০১৭, ১৬:৩১

আর্থ-সামাজিক এবং তথ্য প্রযুক্তির যুগে নারীর সমান অংশগ্রহণের বিষয়টি নারী অগ্রগতির জন্য একটি কেন্দ্রীয় বিষয়। উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় নারীকে সম্পৃক্তকরণের মূল হাতিয়ার হচ্ছে নারীর আইনগত মর্যাদা ও উত্তরাধিকার ভোগ। নারী ছাড়া এ সমাজ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ অচল।

মানব জাতির শুরু থেকে আমরা যে নারীকে পুরুষের জীবন সঙ্গিনীরূপে দেখতে পাচ্ছি, এ বিশ্বোত্তর কালের সেই সঙ্গিনীকে মানুষ অমর্যাদা করবে এ হতেই পারে না। যে পৃথিবীতে আমরা বাস করছি এটাও বেহেস্তেরই প্রতিকৃতি।

এ পৃথিবীর নেয়ামত উপভোগ করার যে সুযোগ আমাদের হচ্ছে তাও তো নারীর দ্বারাই সম্ভব হয়েছে। তাই নারী বিশ্ব মানবের পৃথিবীতে আনয়নকারিনীর মর্যাদার পাত্রী। বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় এমন একটি অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে যেখানে মানুষ নিজে স্বার্থসিদ্ধির জন্য সর্বক্ষেত্রেই বৈষম্যের সৃষ্টি করেছে।

নারী ও পুরুষ অভিন্ন মানব সমাজের দুটি অপরিহার্য অঙ্গ। নর-নারী মিলেই মানব সমাজ পরিপূর্ণ হয়। পুরুষ মানবতার একাংশের প্রতিনিধি। অপর অংশের প্রতিনিধিত্ব করে নারী। নারী সমাজকে বাদ দিয়ে মানব সমাজ কল্পনাই করা যায় না। আল্লাহ তায়ালা রহমত ও দানের ব্যাপারে যেমন তার সৃষ্টির মধ্যে কোন পার্থক্য করেননি, তেমনি তার বিধানে নারী-পুরুষের অধিকার ও মর্যাদার মধ্যেও কোন তারতম্য রাখেননি।

মানবজাতির হেদায়াতের জন্য আল্লাহ-তায়ালার মনোনীত জীবন বিধান হলো ইসলাম। ইসলাম একমাত্র পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা। ইসলামের বিধান নারী পুরুষ সকলের জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য। ইসলামী বিধান নারী-পুরুষ সকলের অধিকার ও মর্যাদা সমানভাবে নিশ্চিত করেছে। ইসলামের আবির্ভাবের পূর্বে নারী জাতি তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিল। ইসলামের আগমনের মাধ্যমে নারী তার হারানো অধিকার ও মর্যাদা ফিরে পায়। ইসলাম চৌদ্দশত বছর পূর্বে নারীকে যে সকল অধিকার ও মর্যাদা দিয়েছে তা মহান আল্লাহর দেয়া বৈধ অধিকার, বিনা আন্দোলনে এবং বিভিন্ন অঙ্গনে, জীবনের সর্বক্ষেত্রে।

ধর্মীয় অধিকার, সামাজিক অধিকার, পারিবারিক অধিকার, রাজনৈতিক অধিকার, অর্থনৈতিক অধিকার, আইনগত অধিকারসহ সকল বিষয়ে ইসলাম নারীকে ন্যায্য অধিকার দিয়েছে। শুধু তাই নয়, ইসলামের স্বর্ণযুগে নারীরা তাদের প্রতিভা বিকাশের পূর্ণ সুযোগ পেয়েছিল। ইসলাম সে যুগে নারী জাতিকে তার যথাযোগ্য অধিকার দিয়েছে।

ইসলামের আবির্ভাবে নারী পেয়েছে ধর্মে-কর্মে, শিক্ষা-দীক্ষায় পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে পুরুষের ন্যায় ন্যায্য অধিকার। নারী জাতির অধিকার, মর্যাদা ও স্বাধীনতার বিবরণ দিয়ে পবিত্র কোরআরনের পূর্ণ একটি সূরা (আন নিসা) তার জ্বলন্ত উদাহরণ। ইসলামের দেয়া নারীর এসকল অধিকার থেকে যদি কোন নারী বঞ্চিত থাকে, তবে তার জন্য সংশ্লিষ্ট মুসলিম সমাজ দায়ী, ইসলাম নয়।

ইসলাম নারী জাতিকে শারীরিক বৈশিষ্ট্যের কারণে ক্ষেত্রবিশেষ ছাড়া পুরুষের সমান অধিকার দিয়েছে। মানুষ হিসেবে নারী চিন্তায় ও কর্মে ভোগ করবে যুক্তিপূর্ণ স্বাধীনতা। শত শত বছরের ইসলামী বিধানকে আধুনিকতার নামে সেকেলে মনে করছে। আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থায় ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক না হওয়ায় পাশ্চাত্যের প্রপাগন্ডায় মুসলিম সমাজের একটি অংশ জঘন্য অশ্লীলতার দিকে ধাবিত হচ্ছে। তাদের ধারণা ইসলাম তাদেরকে ঠকিয়েছে। পর্দার নামে তাদেরকে ঘরের মধ্যে আবদ্ধ করে রেখেছে।

ইসলামী শিক্ষার অভাবে আজ তারা পথভ্রষ্ট হচ্ছে। মূলত: তাদের এ ধারণা বর্তমান মুসলিম সমাজের ইসলাম বিমুখ সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার কাঠামো থেকে তৈরি হয়েছে। কেননা ইসলাম নারীর যে অধিকার ও মর্যাদা দিয়েছে মুসলিম সমাজ ও রাষ্ট্রে তা অহরহ লঙ্ঘিত হচ্ছে। ইসলামী বিধান নারীকে কি কি অধিকার ও মর্যাদা দিয়েছে এ বিষয়ে সবাইকে সজাগ করানোর জন্যই এ গবেষণা কর্ম।

‘বাংলাদেশের মুসলিম নারীর আইনগত মর্যাদা ও উত্তরাধিকার’ শীর্ষক গবেষণাকর্ম থেকে যদি বর্তমান বিশ্বের ধর্ম-বর্ণ, দলমত নির্বিশেষে সকল মানব সমাজ বিশেষ করে নারী সমাজ সামান্যতম উপকৃত হন এবং ইসলামী ব্যবস্থার শ্রেষ্ঠত্ব সম্পর্কে নূন্যতম জ্ঞানার্জন করতে পারেন তাহলে নিজেকে সার্থক মনে করব।

ইসলামী ব্যবস্থা আজ থেকে প্রায় সাড়ে চৌদ্দশ বছর আগে, যখন সারা পৃথিবীর কোন অংশে নারীর উত্তরাধিকার তেমনভাবে স্বীকৃত হয়নি, সেই সময়ে নারীদের উত্তরাধিকারের অধিকার ঘোষণা করেছে। আল্লাহ-তায়ালা বলেন, ‘পিতামাতা এবং আত্মীয়-স্বজনের পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে পুরুষের অংশ আছে এবং পিতামাতা ও আত্মীয় স্বজনের পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে নারীরও অংশ আছে, উহা অল্পই হউক অথবা বেশিই হউক, এক নির্ধারিত অংশ।’

বস্তুত নারীর কল্যাণে ইসলামী ব্যবস্থার শ্রেষ্ঠতম অবদান হচ্ছে উত্তরাধিকারের স্বীকৃতি। কন্যা, স্ত্রী এবং মাতারূপে তারা সব সময় ‘মীরাস’ পায়। কোন সময়ই তারা বঞ্চিত হয় না। অবশ্য বিশেষ কারণে পুত্রের তুলনায় কন্যার এবং স্বামীর তুলনায় স্ত্রীর এবং ভাইয়ের তুলনায় ভগ্নীর অংশ কম নির্ধারিত হয়েছে। কন্যা হওয়ার কারণে সে যুগে তাদের জীবন্ত পুঁতে ফেলা হত। সে যুগে ইসলাম নারীর জন্য যে সম্মান ও মর্যাদার কথা ঘোষণা করেছে তা ইসলামী ব্যবস্থার সর্বকাল উপযোগিতার এক অপূর্ব নিদর্শন। ইসলাম ঘোষণা করেছে যে, ‘মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত।’

এ দুনিয়ায় এমন আর কেউ নেই যার মর্যাদা মায়ের সমকক্ষ। সন্তানগণ যাতে তাদের মায়ের উপর যত্নবান হন সেজন্য আল-কোরআন স্মরণ করিয়ে দিয়েছে তাদের সেই অসহায় দিনের কথা, যখন তারা শিশু ছিল। আল্লাহ-তায়ালা বলেন, ‘আমি মানুষকে তাহার মাতা-পিতার প্রতি সদয় ব্যবহারের নির্দেশ দিয়াছি। তাহার জননী তাহাকে গর্ভে ধারণ করিতে ও তাহার স্তন্য ছাড়াইতে লাগে ত্রিশ মাস।’

ইসলাম অবরোধ প্রথাকে সমর্থন করেনি। ইসলামে নারী এবং পুরুষদের প্রতিও নির্দেশ আছে তার দৃষ্টিকে সংযত করতে এবং এমনভাবে নিজেকে উন্মুক্ত না করতে যাতে একে অপরের প্রতি প্রলুব্ধ হয়। অবশ্য এ নির্দেশের অর্থ এ নয় যে, নারী শুধু ঘরের চার দেয়ালের মধ্যেই আবদ্ধ থাকবে। কেননা আবদ্ধতার মধ্যে দৃষ্টি সংযত করার কোন প্রয়োজন নেই। একজন অবরুদ্ধ নারীর পুরুষকে উত্তেজিত করার অবকাশই বা কোথায়?

ইসলামী জীবন ব্যবস্থায় অবরোধ নেই, কিন্তু শালীনতা রক্ষার নির্দেশ আছে। সুন্দর, শালীন এবং সংযত জীবন যাপন করার জন্য ইসলাম বারবার তাগিদ দিয়েছে। ইসলামী ব্যবস্থায় বিবাহ একটি পবিত্র চুক্তি। নর ও নারীর মিলনে তাদের দাম্পত্য জীবন সুন্দর হোক, মধুময় হোক, ইসলামী ব্যবস্থার এটাই কাম্য। কিন্তু মধুময়তার পরিবর্তে যদি নিদারুন তিক্ততা নেমে আসে নর নারীর জীবনে, তবে সেই বিবাহ বিচ্ছিন্ন হওয়া উচিত।

ইসলাম তাই বিবাহ বিচ্ছেদের বিধানও দিয়েছে। স্বামী স্ত্রীকে তালাক দিতে পারে, কিন্তু সে অধিকার তাকে প্রয়োগ করতে হবে সংযত ও সুচিন্তিত বিবেচনায়, ক্ষণিক উত্তেজনায় নয়। আর তালাক দিলেই স্বামীর সব দায়িত্ব শেষ হয়ে যাবে না, তাকে শোধ করতে হবে দেনমোহর এবং দিতে হবে ইদ্দতকালীন ঘোরপোষ। তালাক দেবার পরও স্ত্রীর সাথে সদ্ব্যবহার করতে হবে, আল-কোরআন এ কড়া নির্দেশও দিয়েছে। স্ত্রীরও অধিকার আছে বিবাহ ভঙ্গ করার, সে যা পেয়েছে তার বিনিময়ে সে বিবাহ ভঙ্গ করতে পারে।

একজন নারী সব সময় কারো না কারো নিয়ন্ত্রণে থাকে। যেমন জন্মের পর পিতা-মাতার, বিবাহের পর স্বামীর এবং স্বামীর মৃত্যুর পর সন্তানের উপর নির্ভরশীল হয়ে একজন নারীকে দিন যাপন করতে হয়। এ নির্ভরশীলতার কারণে তারা নিয়ন্ত্রিত। আর তাদের সম্পত্তি যাদের কাছে থাকে তাদের হাতে চলে যায়। যদি কোনো লোক একমাত্র মেয়ে কিংবা অধিক মেয়ে রেখে মারা যায় এবং ব্যক্তির কোনো পুত্র সন্তান না থাকে তাহলে ঐ ব্যক্তির সকল সম্পত্তির মালিক হবে মেয়েরা। নারীরা মা, স্ত্রী এবং মেয়ে হিসেবে সম্পত্তি লাভ করলেও সম্পত্তি ভোগের ক্ষেত্রে আমরা এক বিরাট বৈষম্য দেখতে পাই। এ বৈষম্যের বিচারকদের অভিমত হচ্ছে- একজন নারী বিভিন্ন উৎস হতে সম্পত্তি লাভ করে। ফলে তাদের সম্পত্তির অংশ কম হয় না।

এছাড়া একজন নারীর ভরণ-পোষণের দায়িত্ব তার নিজের নয়। সে অন্যের দ্বারা পোষিত হচ্ছে। সময়ের আবর্তে আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে। প্রায়ই দেখা যাচ্ছে- নারীদের আইনগত যে সুযোগ রয়েছে তারা সেটি ভোগ করতে পারছে না। ইসলাম সম্পত্তিতে নারীদের যে অধিকার প্রদান করেছে তা নানা কারণে ভোগ করতে পারে না। এ ক্ষেত্রে নারীদের বিশেষত: নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণীর অসচেতনতা এবং গবেষণা কাজের প্রতি তাদের নেতিবাচক মনোভাব, তাদের কুসংস্কারাচ্ছন্নতা ও সন্দেহ প্রবণতা, উত্তরাধিকার, যৌতুক ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে সংকোচবোধ ও আশঙ্কা এবং অজ্ঞতা তাদের মধ্যে পরিলক্ষিত হয়।

নারীদের ইতিহাসে বিংশ শতাব্দীর অভিজ্ঞতা পূর্ববর্তী ইতিহাসের চেয়ে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমর্ধী। বর্তমান শতাব্দীতে বিভিন্ন দেশে নারী আন্দোলনই শুধু জোরদার হয়ে ওঠেনি, প্রশ্ন উঠেছে, বিংশ শতাব্দীতে নারীদের মর্যাদা কি সত্যি সত্যি বেড়েছে? ইসলাম নারীদের জন্য যে, অধিকার ও মর্যাদা নির্ধারণ করেছে তা নারী পুরষের সমঅধিকারের তুলনায় অনেক অনেক বেশি কল্যাণকর ও মঙ্গলজনক। সমাজ সংগঠন পুরুষ জাতি নিজেদের ক্ষমতাধর প্রমাণের লক্ষ্যে নিজেদের অংশের কর্তৃত্ব প্রদর্শন করতে যতটা উৎসাহী ভূমিকা পালন করে; নারীর প্রতি তার দায়িত্ব পালনে তার চেয়ে বেশীই অবহেলা করে থাকে। যার ফলে একদিকে নারী যেমন তার ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে অপরদিকে তেমনি পুরষের অযাচিত কর্তৃত্বে কোনঠাসা হয়ে পড়েছে।

বাংলাদেশের সামাজিক অবস্থা ও তাতে নারীর অবস্থান সম্পর্কে আলোচনা যথার্থ অর্থেই নেতিবাচক। সমাজ ব্যবস্থা ও পরিবেশগত কারণে যুগ যুগ ধরে আমাদের দেশে নারীদের প্রতি বৈষম্য চলে আসছে। দৈহিক কারণ তো রয়েছেই। পুরুষ সমাজের চিরাচারিত দৃষ্টিভঙ্গি ও সমাজের সার্বিক অস্থিতিশীলতার জন্য অবজ্ঞা অবহেলা ও নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছে নারীরা।

পত্রিকার পাতা অথবা টিভি খুললেই আমরা দেখতে পাই নারী নির্যাতনের ও নারী বৈষম্যের করুণ চিত্র। যৌতুক, বাল্যবিবাহ, ধর্ষণ, বহুবিবাহ, বিবাহ বিচ্ছেদ, নারী পাচার অকালে গর্ভধারণ ইত্যাদি মানবসৃষ্ট সামাজিক অভিশাপকে বয়ে বেড়াতে হচ্ছে নারী সমাজকেই।

একটি দেশ তখনই সুশাসন প্রতিষ্ঠায় কার্যকরী ভূমিকা পালনে সক্ষম হবে, যখন দক্ষ ও জবাবদিহিতামূলক সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি উক্ত সরকার ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠানের নারী পুরুষের সমতাভিত্তিক অংশগ্রহণ ও কার্যকর প্রতিনিধিত্ব করা সম্ভব হবে। কেননা একটি দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী তথা নারী সমাজকে সুবিধা বঞ্চিত রেখে দেশের সুষম উন্নয়ন সম্ভব নয়। মোট কথা একটি দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে হলে দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠীর চাহিদা, আশা-আকাঙ্খা, মনোভাবের প্রতিফলন, সমাজ তথা রাষ্ট্রের পরিকল্পনা, উন্নয়ন কৌশল নির্মাণ সিদ্ধান্তে অংশগ্রহণ থাকা একান্ত বাঞ্চনীয়।

মাহমুদা খান মলি : শিক্ষক, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ঢাকাটাইমস/০৮মার্চ/টিএমএইচ

সংবাদটি শেয়ার করুন

ইসলাম বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :