গাজীপুরে কারখানার কেমিক্যালে ভয়াবহ পরিবেশ দূষণ
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার চকপাড়া এলাকার একটি টিস্যু তৈরির কারখানার তরল বর্জ্যে সয়লাব হয়ে গেছে কয়েকটি গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা। বিষাক্ত কেমিক্যাল মিশ্রিত এ পানি ফসলি জমিতে ঢুকে পড়ায় হুমকির মুখে এখানকার কৃষকরা। বর্জ্যমিশ্রিত পানিতে উৎপাদিত ফসলের মাধ্যমে মানুষের শরীরে ঢুকে পড়ছে বিষাক্ত কেমিক্যাল। এতে নানা রোগ বালাইসহ মানব শরীরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা এলাকাবাসীর।
অব্যাহতভাবে দূষণ ছড়িয়ে পড়ায় মারাত্মক হুমকিতে পড়ছে জনস্বাস্থ্য ও এলাকার পরিবেশ। এলাকাবাসী বারবার প্রতিবাদ করেও পাচ্ছেন না কোনো প্রতিকার।
সরেজমিনে দেখা গেছে, গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার চকপাড়া গ্রামে আট বছর আগে গড়ে তোলা হয় ডাইনামিক পেপার মিলস নামে একটি টিস্যু তৈরির কারখানা। এরইমধ্যে ওই কারখানাটির মালিকানা বদল হয়েছে বেশ কয়েকবার। বর্তমানে ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় ইউনিয়ন পর্যায়ের কয়েকজন নেতা কারখানাটি দেখভাল করছেন। কিন্তু কারখানাটির তরল বর্জ্যে সয়লাব হয়ে গেছে চকপাড়া, বারোতোপাসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা। ড্রেন ও জলাধার দিয়ে দূষিত রাসায়নিক মিশ্রিত রঙিন পানি গিয়ে মিশছে সাধারণ মানুষের জলাভূমিতে। এতে মারাত্মক দুষণের শিকার এখানকার জলাধারগুলো। বর্জ্যমিশ্রিত দুর্গন্ধময় কেমিক্যাল জলাধারের পানিতে মিশে সেখানকার ইকো সিস্টেমে দেখা দিয়েছে বিপর্যয়। জলাধারগুলোর মাছসহ বিভিন্ন প্রাণী এরই মধ্যে বিলুপ্তির পথে। এসব কেমিক্যালমিশ্রিত পানি ঢুকে পড়েছে এলাকার ফসলি জমিতেও। ফলে ব্যাহত হচ্ছে ফসল উৎপাদন। এছাড়া বর্জ্যমিশ্রিত পানিতে উৎপাদিত ফসলের মাধ্যমে মানুষের শরীরে দূষণ ছড়িয়ে পড়ায় মারাত্মক হুমকিতে পড়ছে জনস্বাস্থ্য। ফসলহানী এবং পরিবেশ দুষণরোধে এলাকাবাসী বারবার প্রতিবাদ করেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, কারখানাটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে এর বিষাক্ত বর্জ্যে এলাকাবাসীর বসবাস করাই কঠিন হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন কেমিক্যালমিশ্রিত রঙিন পানি বিস্তীর্ণ এলাকায় প্রবেশ করায় হুমকির মুখে পড়েছে ফসল উৎপাদন। ধানের ক্ষেতসহ বিভিন্ন ফসলি জমি এসব পানিতে দীর্ঘদিন তলিয়ে থাকায় এর দীর্ঘ প্রসারি কুফল দেখা দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসী বারবার প্রতিবাদ করলেও কোনো প্রতিকার পায়নি বলে অভিযোগ তাদের।
কারখানার দূষণ বিষয়ে মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও এবিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে এই কারখানাটির বিষয়ে অবহিত নয় বলে জানিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর। এবিষয়ে গাজীপুরের পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সোনিয়া সুলতানা ঢাকাটাইমসকে জানান, কারখানাটির বিষয়ে তার কাছে কোনো তথ্য নেই।
দূষণ রোধ এবং এলাকার পরিবেশ স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে অবিলম্বে অবৈধ কারখানাটি বন্ধ ঘোষণার দাবি করেছেন স্থানীয়রা।
(ঢাকাটাইমস/২৫এপ্রিল/প্রতিনিধি/জেবি)
মন্তব্য করুন