খানাখন্দে ভরা রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়ক
রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। এতে চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। রাজবাড়ী-খুলনা মহাসড়কের গোয়ালন্দ মোড় থেকে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া সড়কের কুষ্টিয়া শহর পর্যন্ত আঞ্চলিক মহাসড়কের দৈর্ঘ্য ৭২ কিলোমিটার। এর মধ্যে গোয়ালন্দ মোড় থেকে পাংশা উপজেলার মাছপাড়া ইউনিয়নের শিয়ালডাঙ্গী পর্যন্ত ৪৫ কিলোমিটার রাজবাড়ী জেলায় পড়েছে।
গত ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকটি অংশে প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা মেরামত করা হয়।
এছাড়া নিয়মিত সংস্কারের অংশ হিসেবে প্রায়ই বালু ও ইট ফেলা হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, গোয়ালন্দ মোড় থেকে মাদ্রাসা সেতু পর্যন্ত, ফেলুর দোকান, কল্যাণপুর ব্র্যাক কার্যালয় থেকে নতুন রাস্তা, রাজবাড়ী জুট মিল এলাকা, আহ্লাদিপুর সেতু, শ্রীপুর টার্মিনাল, শ্রীপুর বাজার, সদর উপজেলা পরিষদ গেট, বড়পুল বসুন্ধরা সিনেমা হল থেকে রাজবাড়ী স্টেডিয়াম, নতুন বাজার বাসস্ট্যান্ড, বাগমারা মোড়ের আগে, চন্দনী সেতুসহ বিভিন্ন এলাকায় রাস্তার পিচ-খোয়া উঠে গেছে। কোথাও কোথাও বড় আকারের গর্ত তৈরি হয়েছে। রাস্তার অনেক স্থানে পিচ জমে উঁচু টিবির মতো তৈরি হয়েছে। বৃষ্টি হলে গর্তে পানি জমে। এসব গর্তের ওপর দিয়ে গাড়ি চলার সময় পানি ছিটকে পথচারীদের কাপড় নষ্ট হচ্ছে।
কুষ্টিয়ার থেকে ঢাকাগামী ট্রাকচালক মকবুল জানান, পদ্মা সেতুর পাথর ও খোয়া নেয়ার জন্য দশ চাক্কার ট্রাক প্রতিদিন একশ’টি এ রাস্তায় চলে। অথচ দশ চাক্কার ৭০-৮০ টন লোডের ট্রাক এ রাস্তায় চলার উপযোগী না। ফলে গত ৩-৪ বছর ধরে রাজবাড়ী-কৃষ্টিয়া সড়কের এ হাল হয়েছে।
অপর ট্রাকচালক মনিরুল ইসলাম খান বলেন, গোয়ালন্দ মোড় থেকে রাস্তার বেহাল দশা। ভাঙা রাস্তায় সময় বেশি লাগে। আবার মাঝেমধ্যে বিভিন্ন যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে সময় ও টাকা দুটোই বেশি ব্যয় হচ্ছে।
পথচারী আলমগীর হোসেন বলেন, প্রায়দিনই রাস্তায় কোনো না কোনো যানবাহন নষ্ট হচ্ছে। মাঝেমধ্যে ট্রাকের যন্ত্রাংশ ভেঙে পড়ে থাকে। এই পথে যানবাহনে যাতায়াত করলে কোমর ব্যথা হয়ে যায়। কিন্তু এদিকে নজর দেয়ার কেউ নেই।
সওজ রাজবাড়ীর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী শাহরিয়ার রুমী বলেন, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ মোড় থেকে পাংশা উপজেলার শিয়ালডাঙ্গী পর্যন্ত রাস্তা প্রশস্ত করা হবে। এ বিষয়ে প্রায় ৩৯২ কোটি টাকার একটি বড় প্রকল্প মন্ত্রণালয় থেকে পাস করা হয়েছে। এখন দরপত্র আহ্বানের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তবে এ কাজ শুরু হতে কমপক্ষে এক বছর সময় লাগবে। আবার বেশিও লাগতে পারে।
তিনি বলেন, প্রকল্পটির আওতায় শহরের পৌর এলাকায় চার লেনবিশিষ্ট রাস্তা করা হবে। কাজটি শেষ হলে আর কোনো সমস্যা থাকবে না। এ কারণে এ সড়কে এখন আর কোনো প্রকল্প গ্রহণ করা যাবে না। তবে ঈদে মানুষের দুর্ভোগ কিছুটা লাঘব করার জন্য আপাতত জেলা পর্যায় থেকে সংস্কার কাজ করা হচ্ছে। এতে সাময়িকভাবে সমস্যার সমাধান হবে।
রাস্তার বেহাল দশার কথা স্বীকার করে রাজবাড়ী-১ আসনের সাংসদ কাজী কেরামত আলী বলেন, রাস্তা নিয়ে আর বেশি দিন রাজবাড়ীবাসীকে দুর্ভোগ পোহাতে হবে না। কয়েক মাসের মধ্যে রাস্তার উন্নয়ন করার পাশাপাশি শহর এলাকার শোভা বাড়ানো হবে।
(ঢাকাটাইমস/১১জুন/প্রতিনিধি/এলএ)
মন্তব্য করুন