দরপত্র ছাড়াই জেলা পরিষদের গাছ কর্তন!
দরপত্র আহবান ছাড়াই গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নের নতুনবাজার এলাকায় জেলা পরিষদের গাছ ও গাছের ডালপালা কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে জেলা পরিষদের দুই নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আলতাব হোসেনের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে আলতাব হোসেনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি প্রথমে ধোপাডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যানের কথা বললেও পরে বলেন, জেলা পরিষদে নিলামের কাগজ আছে।
আর জেলা পরিষদের সহকারী প্রকৌশলী সিদ্দিকুর রহমান তিন দিন ধরে কাগজ দিতে তালবাহানা করছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, জেলা পরিষদের দুই নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আলতাব হোসেন গাইবান্ধা-সুন্দরগঞ্জ সড়কের নতুনবাজার এলাকায় একটি গাছের ডাল কেটে স্থানীয় মমতাজ আলীর কাছে ছয় হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন। ওই বাজারের ব্যবসায়ী আবদুল মজিদের দোকান ঘরের উপর থেকে একটি গাছের ডাল কাটার জন্য নিয়েছেন আট হাজার টাকা ও তারই কাছে আবার সেই গাছের ডাল বিক্রি করেছেন নয় হাজার টাকায়। এছাড়া ধোপাডাঙ্গা-নলডাঙ্গা সড়কের উত্তর ধোপাডাঙ্গা গ্রামে রাস্তার পাশের একটি গাছ বিক্রি করেছেন স্থানীয় ছেলেদের কাছে। যার অনুমানিক মূল্য ১ লক্ষ টাকা। সেসব ডালপালা রাস্তার পাশেই পড়ে রয়েছে।
মমতাজ আলী বলেন, জেলা পরিষদের সদস্য আলতাব হোসেনের কাছ থেকে ছয় হাজার টাকায় গাছের ডালগুলো কিনেছি। আলতাব হোসেন নিজে উপস্থিত থেকে গাছের ডালগুলো কেটে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন। তার কাছে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের অনুমতিপত্র আছে বলে জানান তিনি।
ধোপাডাঙ্গা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান বলেন, জীবিত গাছ বা ডালপালা কাটার কোনো অনুমতি নেই। অনুমতি ছাড়াই জেলা পরিষদের লক্ষাধিক টাকার গাছ ও ডালপালা কেটে ফেলা হয়েছে। এতে জেলা পরিষদ রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাড. মো. মোখলেছুর রহমান রাজু বলেন, গাছের ডাল কেটে ফেলার জন্য গাইবান্ধা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর একটি আবেদনে শুধুমাত্র আমি সুপারিশ করেছি। এর বাইরে আমার কিছু জানা নেই।
জেলা পরিষদের দুই নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আলতাব হোসেন বলেন, ওই সব গাছের ডাল কেটে ফেলার জন্য ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের অনুমতি রয়েছে।
জেলা পরিষদের গাছ চেয়ারম্যান কাটার অনুমতি দিতে পারে না তাকে এমন কথা বলার পর তিনি নিলামের কাগজ জেলা পরিষদে আছে বলে জানান।
এ বিষয়ে ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাড. মো. মোখলেছুর রহমান রাজু বলেন, জেলা পরিষদের গাছ ও গাছের ডাল কাটার অনুমতি দেয়ার এখতিয়ার আমার নেই।
এসব বিষয়ে গাইবান্ধা জেলা পরিষদের সহকারী প্রকৌশলী সিদ্দিকুর রহমানের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, বিষয়টি অফিসের ফাইল না দেখে আমি কিছুই বলতে পারব না।
গাইবান্ধা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমানের নিকট ২-৩ বার তার মুঠোফোনে ফোন করলে তিনি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
(ঢাকাটাইমস/১২জুন/প্রতিনিধি/এলএ)
মন্তব্য করুন