দুর্যোগের কারণে ২০ লাখ টন কম উৎপাদন: খাদ্যমন্ত্রী
হাওরে ফসলহানির পর খাদ্যমন্ত্রীসহ সরকারের তরফে বলা হয়েছিল এর কোনো প্রভাব পড়বে না দেশের বাজারে। কেননা পর্যাপ্ত খাদ্যশস্য মজুদ রয়েছে সরকারের গুদামে। কিন্তু এখন চালের বাজারে মূল্যবৃদ্ধির অস্থিরতার ফলে সরকার চাল আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে। খাদ্যমন্ত্রী বলছেন, চলতি বছরের বোরো মওসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ২০ লাখ টন ধান কম উৎপাদন হয়েছে।
একই সঙ্গে খাদ্যমন্ত্রী চালের বাজারের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য ব্যবসায়ী ও চালকল মালিকদের দুষছেন। তারা নাকি চালের বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেছেন। দুষছেন গণমাধ্যমকেও।
এবার বোরো মওসুমে এক কোটি ৯১ লাখ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছিল জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, কিন্তু কয়েকটি কারণে উৎপাদন কম হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে হাওরে ফসলহানি, কয়েক জেলায় ধানক্ষেতে ব্লাস্ট রোগের আক্রমণ এবং অতিবৃষ্টি। মূলত এই তিন কারণে উৎপাদন ১৫-২০ লাখ টন কম হয় বলে মনে করছেন তিনি।
দেশে এরই মধ্যে চালের দাম রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে। মোটা চাল কিছুদিন আগেও কেজিপ্রতি ৩৫ টাকার মতো ছিল, তার দাম এখন কমবেশি ৪৮ টাকা। ফলে নিম্ন আয়ের মানুষ সংকটে পড়েছে বেশি। আর চালের দাম নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। খাদ্যমন্ত্রী অবশ্য এই পরিস্থিতির জন্য মূলত দায়ী করছেন চালের ব্যবসায়ীদের।
তিনি বলেন, ধানের উৎপাদন কম হওয়ার সুযোগ নিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী আর মিল মালিক যোগসাজশ করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে হঠাৎ চালের দাম বাড়িয়েছে। বাংলাদেশে সবচেয়ে কম দামি মোটা চালও এখন কিনতে হচ্ছে কেজিপ্রতি ৪৮ টাকায়।
চাল নিয়ে উদ্বেগের বিষয়টিতে গণমাধ্যমকেও দুষেছেন খাদ্যমন্ত্রী। এ ব্যাপারে তার বক্তব্য, সঠিক সংবাদ পরিবেশন করা ভালো, তবে অতিরঞ্জন অনেক সময় আতঙ্ক সৃষ্টি করে। খাদ্যমন্ত্রী জানান, সরকারের পক্ষ থেকে চালকলের মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে পরিস্থিতি সামাল দিতে এবং দাম কমাতে তাদের চাপও দেয়া হয়েছে। তবে সরকার পরিস্থিতি সামাল দিতে মূলত নির্ভর করছে আমদানির ওপর।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, সাম্প্রতিক ভিয়েতনাম সফরের সময় তিনি সেখান থেকে চার লাখ টন চাল আমদানির বিষয় চূড়ান্ত করেছেন। এ ছাড়া, থাইল্যান্ড ও ভারত থেকেও চাল আমদানির চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, সরকার চাইছে সব মিলিয়ে ১০ লাখ টন চাল আমদানি করতে।
বাংলাদেশের মানুষের মূল খাদ্য ভাত, আর তাই চালের দাম সব সময় একটি রাজনৈতিক স্পর্শকাতর বিষয়। তবে চালের দাম সরকারের জন্য 'রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ' হবে না বলেই বিশ্বাস মন্ত্রী কামরুল ইসলামের। তিনি বলেন, ‘সংকট আছে আমি স্বীকার করি। তবে আমরা যদি আমদানি করে পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে না পারতাম তাহলে সংকটটা সৃষ্টি হতো তিন-চার মাস পরে। এখন যে সংকট সেটা কৃত্রিম।’
সংবাদ সূত্র: বিবিসি বাংলা।
(ঢাকাটাইমস/১৬জুন/এমএম/মোআ)
মন্তব্য করুন