শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষে রণক্ষেত্র টঙ্গী, আহত অর্ধশত

ফাইল ছবি

গাজীপুরের টঙ্গী বিসিক শিল্প এলাকায় বেতন ও ঈদ বোনাসের দাবিতে বিক্ষোভ করার সময় শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে আট পুলিশ সদস্যসহ অর্ধশত শ্রমিক আহত হয়েছেন। আহত শ্রমিকদের মধ্যে আটজনকে টঙ্গী সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রাত ১২টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আরও অর্ধশতাধিক শ্রমিককে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছে টঙ্গী সরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

ক্যাপরি অ্যাপারেলস লিমিটেড ও মেহেরুন্নেছা গার্মেন্টস নামে একই ব্যক্তির মালিকানাধীন দুটি পোশাক কারখানায় বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাসের দাবিতে বিক্ষোভ করার সময় বুধবার রাত আটটার দিকে এই সংঘর্ষ হয়। শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় বিসিক শিল্প এলাকা।

প্রতিবছর ঈদের সময় এই প্রতিষ্ঠান দুটিতে শ্রমিকদের বেতন ও বোনাস নিয়ে ঝামেলা হয় বলে আহত বেশ কয়েকজন শ্রমিক জানান।

তারা বলেন, গত মে মাসের বেতন এখনও পরিশোধ করেনি কারখানা কর্তৃপক্ষ। সোমবার মে ও জুন মাসের বেতন ও ঈদ বোনাস পরিশোধের কথা থাকলেও কর্তৃপক্ষ তা পরিশোধ করেনি। সর্বশেষ বুধবার দিনভর শ্রমিকদের অপেক্ষায় রেখে কারখানার মালিকপক্ষ ও কর্মকর্তারা চলে গেলে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে শ্রমিকরা। প্রতিষ্ঠান দুটির প্রায় আড়াই হাজার শ্রমিক বিসিক প্রধান সড়কের ওপর অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে।

সন্ধ্যার পর পুলিশ গিয়ে শ্রমিকদেরকে রাস্তা থেকে সরে যেতে অনুরোধ করে। এ সময় শ্রমিকরা দুই মাসের বেতন ও ঈদ বোনাস পরিশোধ না করা পর্যন্ত সড়ক ছাড়বে না বলে ঘোষণা দেয়। এর একপর্যায়ে রাত আটটার দিকে পুলিশ শ্রমিকদের ওপর লাঠিচার্জ শুরু করে। এতে পুলিশ-শ্রমিক ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় টঙ্গী বিসিক রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। একপর্যায়ে পুলিশ আন্দোলনরত শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ব্যবহার করে। এতে প্রায় অর্ধ শতাধিক শ্রমিক আহত হন। আহতদের মধ্যে অধিকাংশই নারী পোশাক শ্রমিক।

টঙ্গী শিল্প পুলিশের ইনচার্জ আবু রায়হান সোহেল বলেন, শ্রমিকরা আমাদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করলে আমরা আত্মরক্ষার্থে এক রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস ও সাত রাউন্ড রাবার বুলেট ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করি।

এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠান দুটির মালিক মো. মোজাম্মেল হকের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি বিজিএমই’র একজন সদস্য। আমি শ্রমিকদের কষ্ট বুঝি তাই তাদের পাওনা পরিশোধের আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

ঢাকাটাইমস/২২জুন/আইআর/এমআর