ঠাকুরগাঁওয়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে সেমাই

বদরুল ইসলাম বিপ্লব, ঠাকুরগাঁও
 | প্রকাশিত : ২২ জুন ২০১৭, ১৭:২৬

ঈদকে সামনে রেখে ঠাকুরগাঁওয়ে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে নিম্নমানের লাচ্ছা সেমাই তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। বিষাক্ত পোড়া তেলে ভাজা হচ্ছে এসব সেমাই ও লাচ্ছা খেয়ে সাধারণ মানুষ দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে।

ঠাকুরগাঁও জেলায় প্রায় ২০-২৫টি কারখানায় সেমাই ও লাচ্ছা তৈরি করা হয়। গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে অবাধে মেশানো হচ্ছে আকর্ষণীয় রঙ। বিশেষ ধরনের পোশাক ও গ্লোবস ব্যবহার করে শ্রমিকদের কাজ করার কথা থাকলেও কোথাও তা ব্যবহার করা হয় না। প্রচণ্ড গরমে ঘামে ভরা শরীর নিয়ে লাচ্ছা ভাজানো হচ্ছে। অনেক সময় ঘমাক্ত শরীর থেকে ঘাম চুয়ে পড়লেও শ্রমিকদের কিছুই করার থাকে না।

অভিযোগ রয়েছে, কড়াইয়ের তেল কখনো বদলানো হয় না। একই তেলে বারবার ভাজা হয় সেমাই।

এছাড়াও সেমাই থেকে নিচের ট্রেতে চুঁইয়ে পড়া পোড়া তেল ব্যবহার করা হয় নতুন সেমাই ভাজার কাজে। এখান থেকে প্রতিদিন গড়ে ৪০ থেকে ৫০ খাচা সেমাই জেলা শহরসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়ে থাকে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে নিম্নমানের লাচ্ছা সেমাই প্রস্তুত ও বিক্রির অপরাধে শহরের বিসিক এলাকায় জাহাঙ্গীর খানের কারখানায় ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এদিকে ঠাকুরগাঁও রোড মথুরাপুর এলাকায় জনৈক দুলালের বাড়িতে সেমাই তৈরি করছেন রোড এলাকার ব্যবসায়ী শাহজাহান খান। এখানে বিএসটিআইর অনুমতি ছাড়াই তৈরি হচ্ছে রং-বেরঙের লাচ্ছা সেমাই। নিয়োজিত শ্রমিকদের গায়ে কোন স্বাস্থ্যসম্মত পোশাক নেই। এছাড়াও এসব সেমাই তৈরির কারখানা থেকে পোড়া তেল কখনো ফেলা হয় না। অভিযোগ রয়েছে, বিএসটিআইর ভুয়া নাম্বার ও সিল ব্যবহার করে সেখানে সেমাই প্যাকিং করে বিক্রি করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে কারখানার মালিক শাহজাহান খান বিএসটিআইর লাইসেন্স নেই স্বীকার করে বলেন, কারখানাটি এবারই নতুন। সবেমাত্র ১০-১৫ দিন হলো তাই বিএসটিআইর অনুমতি এখনো পাওয়া যায়নি।

তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে সিভিল সার্জন অফিসের লাইসেন্স নিয়ে লাচ্ছা সেমাই প্রস্তুত করা হচ্ছে। তবে খুব শিগগির বিএসটিআইর লাইসেন্স পাওয়া পাওয়া যাবে।

এ ব্যাপারে সিভিল সার্জন ডা. আবু মো খায়রুল কবির জানান, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে প্রস্তুতকৃত সেমাই স্বস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ। এছাড়াও সেমাইয়ে মেশানো রং মানবদেহের হজমশক্তি নেই। ওই রঙ থেকে গ্যাস্টিক আলসার থেকে ক্যান্সার রোগেও। আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।

অবশ্য সেনেটারি ইন্সপেক্টর আকতার ফারুক জানান, নিম্নমানের প্রস্ততকৃত সেমাই ও লাচ্ছা যাতে অসাধু ব্যবসায়ীরা বিক্রি করতে না পারে সেজন্য ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম ও মনিটরিং অব্যাহত রয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২২জুন/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :