সরকারের সবকিছুই কি ভালো?

মহিবুল ইজদানী খান ডাবলু
 | প্রকাশিত : ২৪ জুন ২০১৭, ১৫:২৮

একটানা দুই টার্মে ক্ষমতার আসনে আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে তারা উন্নয়নের মডেল। দলীয় সমর্থকদের মধ্যে শুধু জয় জয়কার। যে দিকে তাকাই সেদিকেই আওয়ামী লীগ। কিন্তু বাস্তব কি? ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের সবকিছুই কি ভালো?

তাদের অনেককে বলতে শুনা যায়, আমাদের কালোকে কালো সাদাকে সাদা বলতে হবে। কিন্তু কই, এখন পর্যন্ত কালোকে কালো বলতে তো দেখলাম না। চারদিকে শুধু প্রশংসা আর প্রশংসা। দেশে সাংবাদিক হত্যা, পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী হত্যা, সামরিক ছাউনির ভেতরে ধর্ষণ, পুলিশ হেফাজতে ধর্ষণ, নিরীহ মানুষ হত্যা, আদিবাসী ও সংখ্যালুঘুদের উপর একের পর এক আক্রমণ, ক্ষমতাসীনদের দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, ঋণ খেলাপিদের শাস্তি না দিয়ে পুনরায় নুতন করে ঋণ দেয়া, কালো টাকা সাদা করার সুযোগ মিথ্যাকে সত্য আর সত্যকে মিথ্যা বলে চালিয়ে দেওয়াসহ আরো কত কিছু ঘটছে যা লিখে শেষ করা যাবে না।

এরপরও বলব, জাতির জনকের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই। তবে এ জন্য প্রয়োজন একশন। আগামী নির্বাচনে জনগণের দৃঢ় আস্থা পেতে হলে শেখ হাসিনাকে উপরোক্ত সমস্যাগুলোর সমাধানে দ্রুত একশনে যেতে হবে। আর বিলম্ব নয়।

বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে নেতার পাশে একসময় চাটুকারদের ভিড় জমেছিল। এরা সবসময় জাতির জনককে ভুল তথ্য সরবরাহ করতেন। বঙ্গবন্ধুর মতো মহান নেতা নিজেও তা বুঝতে পেরেছিলেন। এই কারণে নেতার গাড়ির সামনের সিটে বসা তার নিরাপত্তা অফিসার আমার বাবা আলী মেহেদী খানের কাছ থেকে বাজার দরসহ জনগণের সমস্যার বাস্তবতা তিনি অবহিত হতেন। এসব ঘটনার আসল সাক্ষী বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিগত গাড়ির চালক, যিনি খুব সম্ভবত এখনও জীবিত আছেন। থাকেন ঢাকার ফার্মগেটে।

আজ এতদিন পর আমার কেন জানি না বারবার মনে হচ্ছে জাতির জনকের কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অবস্থা বর্তমানে অনেকটা একইরকম। তিনি চাটুকারদের দ্বারা আবৃত্ত। তবে সেদিন আর এই দিনের মধ্যে পার্থক্য অনেক। বর্তমান অত্যাধুনিক যুগে কারো কোথায় কান না দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ইচ্ছা করলেই কিছু সময়ের জন্য কম্পিউটারের সামনে বসলেই দেশের আসল চিত্র তার সামনে চলে আসবে। হয়তো নেত্রী তা করলেও করতে পারেন। কিন্তু জনগণ সকল অন্যায়ের বিচার না পেয়ে মনের মাঝে একটা চাপা বিক্ষোভ নিয়ে বসে আছে। সময় ও সুযোগ হলে তার বিস্ফোরণ যে কোনো সময় ঘটতে পারে এবং তার সুযোগ নেবে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তি।

আমরা যারা জাতির জনকের আদর্শ আত্মসমালোচনা আত্মসংযম ও আত্মশুদ্ধিতে বিশ্বাসী তারা কখনই চাইব না ধর্মের পতাকা নিয়ে জনগণকে ধোঁকা দিয়ে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের সমর্থকেরা আবার ক্ষমতায় আসুক। সুতরাং সরকারের সবকিছুই যে ভালো নয় তা স্বীকার করতে হবে এবং সমাধানে একশনে নামতে হবে।

জোর যার মুল্লুক তার সেদিন এখন আর নেই। জনগণের আস্থা ও সমর্থনই হলো সবচেয়ে বড় শক্তি। জাতির জনকের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামনে এখন এক কঠিন পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় তাকে জয়লাভ করতেই হবে।

লেখক: সুইডেনে মূলধারার রাজনীতিতে জড়িত

সংবাদটি শেয়ার করুন

মতামত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :