দিনাজপুরে বন্যায় ১৪ জনের মুত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৩ আগস্ট ২০১৭, ২৩:২৫ | প্রকাশিত : ১৩ আগস্ট ২০১৭, ২১:৫৬

দিনাজপুরে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বন্যায় গত ২৪ ঘণ্টায় একই পরিবারের তিন শিশুসহ ১৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে পানিতে ডুবে নয়জন, দেয়াল চাপায় দুইজন এবং সাপে কেটে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। বাঁধ রক্ষা ও বানভাসী মানুষকে উদ্ধারে কাজ করছে সেনাবাহিনী ও বিজিবি।

দিনাজপুর জেলা প্রশাসক মীর খায়রুল আলম জানান, শনিবার সন্ধ্যা থেকে রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় পানিতে ডুবে, দেয়াল চাপায় এবং সাপে কেটে ১৪ জনের মুত্যু হয়েছে।

এর মধ্যে রবিবার বিকালে কাহারোল উপজেলার ঈশ্বরগ্রামে ভেলা উল্টে একই পরিবারের তিন শিশুসহ চারজনের মৃত্যু হয়। নিহতরা ঈশ্বরগ্রাম থেকে কলার ভেলায় চড়ে পার্শ্ববর্তী বিরল উপজেলার হাসিলা গ্রামে যাচ্ছিলেন। নিহতরা হলেন বিরল উপজেলার হাসিলা গ্রামের আবদুর রহমানের মেয়ে চুমকি (১৩), শহিদ আলী (১০) ও সিয়াদ (৭) এবং প্রতিবেশী সাঈদ হোসেনের ছেলে সিহাদ (৭)।

এছাড়া সন্ধ্যায় কাহারোল উপজেলার পল্লীতে দেয়ালচাপায় আরোদা রানী দাস (৫০) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়। তার নাম আরোদা রানী দাস। কাহারোল উপজেলার ৬নং রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের নয়াবাদ দাসপাড়া গ্রামের সুধীর চন্দ্র দাসের স্ত্রী তিনি।

তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কাহারোল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনসুর আলী সরকার।

দিনাজপুর শহরের দক্ষিণ বালুবাড়ী এলাকার আবদুল হাকিমের ছেলে সাইফুল ইসলাম বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যান। বালুবাড়ী ঢিবিপাড়া এলাকার এনামুল হকের ছেলে মেহেদী হাসান খালে পড়ে মারা যান। সদর উপজেলার মির্জাপুর এলাকার আবদুল গফফারের ছেলে আবু নাইমও (১৩) বন্যার পানিতে পড়ে মারা যান। সদর উপজেলার দরবারপুর গ্রামের মেহের আলীর ছেলে চাঁন মিয়া (৫৫) আতঙ্কে পানিতে পড়ে যান।

বিরল উপজেলার মালঝাড় এলাকার বাবলু রায়ের স্ত্রী দিপালী রায় (৩২) নিজ বাসায় সাপের কামড়ে মারা যান। এছাড়া আরও একজন সাপের কামড়ে ও দুইজন পানিতে ডুবে মারা যান। তাদের নামপরিচয় জানা যায়নি।

এদিকে দিনাজপুরে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করায় গৃহহীন হয়ে পড়েছে জেলার প্রায় সাত লাখ মানুষ। জেলার দুই হাজার ৯৩০টি শিক্ষা প্রতষ্ঠানের অধিকাংশই বানভাসী মানুষের আশ্রয়কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বন্ধ রয়েছে শিক্ষা কার্যক্রম।

পানির তোড়ে শহরের মাহুতপাড়া তুঁতবাগান এলাকায় দিনাজপুর শহররক্ষা বাঁধের ৫০ মিটার ভেঙে গেছে। এছাড়াও দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন স্থানে নদীর বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

দিনাজপুর শহররক্ষা বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় সেই বাঁধ সংস্কারে সেনাবাহিনী ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়। মেজর তৌহিদের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর ৬৬ পদাতিক ডিভিশনের ৫২ জন সদস্য বাঁধ সংস্কার ও বানভাসী মানুষকে উদ্ধারের কাজ শুরু করেছে।

বন্যায় দিনাজপুরের অধিকাংশ সড়ক ও মহাসড়ক পানির নীচে তলিয়ে যাওয়ায় দিনাজপুর জেলার সঙ্গে বিভিন্ন উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। হিলি স্থলবন্দর পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় শনিবার থেকে বন্ধ রয়েছে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম। পাবর্তীপুর-পঞ্চগড় রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

দিনাজপুর জেলা প্রশাসক মীর খায়রুল আলম জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যা দুর্গতদের জন্য ইতোমধ্যেই এক লাখ ১০ হাজার টাকা এবং ৬৭ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও বন্যার্তদের জন্য ৫০ লাখ টাকা এবং ৩০০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ চেয়ে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

ঢাকাটাইমস/১৩আগস্ট/জেডএ/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :