ঈদের পাঁচ দিন পরও বাসভাড়া নিয়ে হয়রানি
শেরপুরে ঈদের ছুটিতে বাড়িতে আসা বিভিন্ন শ্রেণিপেশার যাত্রীরা ফের কর্মস্থলে যোগদানের উদ্দেশে ফিরতে গিয়ে বাড়তি বাস ভাড়ার ভোগান্তিতে পড়েছেন। স্থানীয় প্রশাসনের উদাসীনতায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে অভিযোগ যাত্রীদের।
ভুক্তভোগীরা জানান, কোরবানি ঈদের কয়েকদিন আগে থেকেই ঢাকা থেকে ঘরমুখো যাত্রীরা সাধারণ ভাড়া ৩শ’ টাকার স্থলে অতিরিক্ত হিসাবে ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত দিয়ে শেরপুরে আসতে হয়েছে। ঈদের পাঁচ দিন পার হয়ে গেলেও শেরপুর থেকে ঢাকামুখী যাত্রীরা ফের অতিরিক্ত ভাড়ার হয়রানিতে পড়েছেন। এবার শেরপুর থেকে ঢাকা যেতে ভাড়া দিতে হচ্ছে কমপক্ষে ৫শ’ টাকা করে।
যাত্রী তুফা মিয়া, আনিস ও আব্দুস সাকুর বলেন, জেলার পাঁচ উপজেলায় চলাচলরত সিএনজিচালিত অটোরিকশার ভাড়াও দ্বিগুণ গুনতে হচ্ছে। শেরপুর শহর থেকে নকলা উপজেলার সিএনজি অটোরিকশার ভাড়া ৩০ টাকা হলেও ঈদের তিন থেকে ৪ দিন আগ থেকে ৬০ টাকা করে অতিরিক্ত ভাড়া নেয়া হচ্ছে। এছাড়া নালিতাবাড়ী, শ্রীবর্দী, ঝিনাইগাতী উপজেলা ও জেলা সদর থেকে বিভিন্ন রুটে চলাচলরত সিএনজি চালিত এবং অন্যান্য যাত্রীবাহী যানবাহনে ঈদের কথা বলে এখনও অতিরিক্ত হারে ভাড়া আদায় করা হচ্ছে নিরীহ যাত্রী সাধারণের কাছ থেকে।
এছাড়াও শেরপুর-ময়মনসিংহ রুটে আলাদা কোন বাস সার্ভিস না থাকায় শেরপুর থেকে ময়মনসিংহ অভিমুখের যাত্রীরা পড়েছেন আরো বেকায়দায়। ঢাকামুখী কোন বাসে ময়মনসিংহের যাত্রীদের বাসে উঠানো হচ্ছে না। ফলে ময়মনসিংহের ভাড়া বাসে ৮০ টাকা হলেও ১৫০ থেকে ২০০ টাকায় বাসে এবং সিএনজি অটোরিকশার ভাড়া ১০০ টাকা হলেও যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে জনপ্রতি ২০০ টাকা করে। তারপরও নানাভাবে অনুরোধ করে কেবলমাত্র ঢাকাগামী লোকাল সার্ভিস বাসে উঠতে হচ্ছে ময়মনসিংহগামী যাত্রীদের।
ময়মনসিংহের মুমিনুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী শারমিন বলেন, একদিকে অতিরিক্ত ভাড়ায় আদায়- অপরদিকে লোকাল সার্ভিসেও ময়মনসিংহগামী যাত্রীদের বাসে উঠতে না দেয়ার কারণে অনেকেই ৮০ টাকার ভাড়া ২০০ টাকা খরচ করে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় যাচ্ছে। ফলে আমরা শিক্ষার্থীরা পড়েছি সবচেয়ে বেশি বিপদে।
ঢাকাগামী প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরিরত সোবহান মিয়া বলেন, এ অতিরিক্ত ভাড়ার হাত থেকে আমরা যে কবে মুক্তি পাব- জানি না। বাসস্ট্যান্ডে না আসলে বোঝার উপায় নেই যে প্রশাসন আছে কি নাই।
এ ব্যাপারে জেলা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা মালিক ও শ্রমিক সমিতি যৌথভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি ঈদের পর পাঁচ দিন পর্যন্ত একটু বেশি ভাড়া নেয়া হবে। কারণ ঈদের আগে যেমন শেরপুর থেকে ঢাকামুখী বাস যাত্রীবিহীন চলাচল করেছে। ঠিক তেমনি এখন ঢাকা থেকে শেরপুরমুখী বাস যাত্রীবিহীন চলাচল করতে হচ্ছে। তাই ওই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সামান্য ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে।
অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার কথা স্বীকার করে জেলা বাস কোচ মালিক সমিতির সভাপতি ছানুয়ার হোসেন ছানু বলেন, ঈদের আগে ও পরে ঢাকা এবং শেরপুর থেকে একবারে যাত্রীবিহীন বাস চলাচল করতে হয়। ফলে সে ক্ষতি পোষাতেই ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ অতিরিক্ত ভাড়া নেয়া হবে।
এ সম্পর্কে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এটিএম জিয়াউল ইসলাম বলেন, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়টি আমার জানা নেই। এছাড়া এ ব্যাপারে কেউ কোন অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।
(ঢাকাটাইমস/৭সেপ্টেম্বর/প্রতিনিধি/এলএ)