ভালো ফলাফলেও হাসি নেই প্রতিবন্ধী জাকারিয়ার পরিবারে

সাগর হোসেন তামিম, মাদারীপুর
| আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০১৭, ২০:০৬ | প্রকাশিত : ৩০ ডিসেম্বর ২০১৭, ২০:০২

প্রতিবন্ধিতা দমাতে পারেনি মাদারীপুরের জাকারিয়াকে। এবারের জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ভালো ফলাফল অর্জন করেও হাসি নেই পরিবারটির। আগামীর আলোকিত পথ গড়ার প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে দরিদ্রতা। এছাড়া জাকারিয়ার পরিবারে রয়েছে আরো তিনজন শারীরিক প্রতিবন্ধী।

সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার শিরখাড়া ইউনিয়নের কুচিয়ামাড়া গ্রামের বাবুল হাওলাদারের বড় ছেলে এ.কে.এস. ডি. আদেল উদ্দিন হাওলাদার স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র জাকারিয়া হাওলাদার শারীরিক প্রতিবন্ধী। এবারের জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। শনিবার ফলাফল দিলে সে জিপিএ-৩.৩৬ পেয়ে উর্ত্তীণ হয়েছে। আগামী দিনে পড়াশোনা নিয়ে চরম অনিশ্চয়তা রয়েছে।

জাকারিয়া বলেন, হাঁটতে না পারায় স্কুলে যেতে খুব সমস্যা হয়। কিন্তু পড়াশোনার প্রতি আমার প্রবল ইচ্ছে ও আগ্রহ। নিজের পায়ে দাঁড়াতে না পারলেও পড়াশোনা করে ভালো কোন কাজ করে নিজে স্বাবলম্বী হতে চাই। আমার তিন ভাই-বোনই শারীরিক প্রতিবন্ধী। এমনকি আমার বাবাও শারীরিক প্রতিবন্ধী। তাদের সংসারে খাবারটুকুই যোগার করাই কষ্টকর। তবু শারীরিক প্রতিবন্ধী তিন ভাই-বোনই পড়াশোনা করছে। আমি সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গৃহকর্তা বাবুল হাওলাদার ও তার তিন সন্তানই শারীরিক প্রতিবন্ধী। জেলা শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরের শিরখাড়া ইউনিয়নের কুচিয়ামাড়া গ্রামে পরিবারটির বসবাস। বাবুল হাওলাদার সংসার চালাতে ঢাকা শহরে চেয়ে-নিন্তে আয় করেন। তা দিয়েই কোনরকম খেয়ে না খেয়ে চলে পরিবারটি। ছোট খুপড়ি ঘরে বাবুলের স্ত্রী ও চার সন্তান থাকে। এর মধ্যে দুই ছেলে ও এক মেয়ে শারিরীক প্রতিবন্ধী। এদের হাত-পা কোমর চিকন হয়ে বাঁকা। ফলে হাঁটা-চলা করতে পারে না। এরমধ্যে বড় সন্তান জাকারিয়া স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণির পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করেছে। বাকি দুজন পড়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। তাদের মা হুইলচেয়ারে করে বিদ্যালয়ে নেয়া-আনা করেন। আর্থিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ায় এদের শিক্ষাসহ জীবন ধারণ করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তাই সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার দাবি বাবুলে স্ত্রী জোসনা বেগমের। হুইলচেয়ার ছাড়া কোথাও যাওয়া আসা করতে পারে না এরা। শুধু বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসা ছাড়া বাকি সময় ছোট খুড়রি ঘরে বসে থাকতে হয়। এদের শিক্ষাজীবন নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে তাদের আত্মীয়-স্বজন।

আর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্ম সহযোগিতার আশ্বাস দেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সৈয়দ ফারুক আহম্মদ। তিনি সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহবান জানান। তাই সমাজের বিত্তশালীরা এসব অসহায় পরিবারটির পাশে দাঁড়ালে এরাও সমাজের বোঝা না হয়ে সম্পদ হতে পারে। তাই সবাইকে এগিয়ে আসার আহবান এই পরিবারের।

(ঢাকাটাইমস/৩০ডিসেম্বর/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :