ঠাকুরগাঁওয়ে ১২ ঘণ্টা লোডশেডিং, জনজীবন বিপর্যস্ত

বদরুল ইসলাম বিপ্লব, ঠাকুরগাঁও থেকে
  প্রকাশিত : ০৭ জুন ২০১৭, ১৭:০০
অ- অ+

তীব্র লোডশেডিং আর তাপদাহের কারণে অতিরিক্ত গরমে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে। দিনে ও রাতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায় সাধারণ মানুষ পড়েছে চরম বিপাকে। বিশেষ করে অতিরিক্ত গরমে রোজাদাররা দুর্ভোগে পড়েছেন।

ঠাকুরগাঁওয়ে গত এক সপ্তাহ ধরে তীব্র তাপদাহ চলছে। দিনের বেলা সর্বোচ্চ ৩৬-৩৮ ডিগ্রি তাপমাত্রা ওঠানামা করছে। তাপদাহের কারণে খেটে খাওয়া মানুষজন দুপুর বেলায় গাছ তলায় কিংবা বাসাবাড়িতে অবস্থান করছেন।

এ অবস্থায় শিশু ও বৃদ্ধরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে গড়ে প্রতিদিন শতাধিক শিশু ভর্তি হচ্ছে। হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. শাহজাহান নেওয়াজ জানান, অতিরিক্ত গরমে ও ঘামের কারণে শিশুরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। তিনি সন্তানদের রক্ষায় অভিভাবকদের সচেতন হয়ে ভেজা কাপড় দিয়ে বারবার শরীর মুছে দেয়ার এবং ঘাম শরীরে না শুকানোর পরামর্শ দিয়েছেন।

বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, চাহিদার তুলনায় প্রাপ্তি কম থাকায় সবাইকে বিদ্যুৎসেবা দেয়া যাচ্ছে না। সেজন্য লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। তিনি আরও জানান, তারাবির নামাজের সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

এদিকে বিদ্যুতের ভেলকিবাজির কারণে খেটে খাওয়া মানুষের জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। গরমে খেটে খাওয়া মানুষজন রোজা থাকতে কষ্ট হচ্ছে। এছাড়াও শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীরা বিদ্যুতের আসা যাওয়া খেলায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। শিক্ষার্থীরা অতিরিক্ত তাপদাহের কারণে লেখাপড়ার টেবিলে মনোনিবেশ করতে পারছেন না।

গরমের মাত্রা বাড়ার সাথে সাথে পাল্টা দিয়ে বাড়ছে লোডশেডিংয়ের মাত্রা। গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টাই বিদ্যুৎ থাকছে না। এ অবস্থা শুধু পৌরশহরেই নয়, অন্যান্য চার উপজেলাতেও। উপজেলা বা গ্রাম পর্যায়ে এ অবস্থা আরও ভয়াবহ। সেখানে সর্বোচ্চ আধা ঘণ্টাও বিদ্যুৎ স্থায়ী হয় না। ঘনঘন লোডশেডিংয়ের কারণে বৈদ্যুতিক বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অফিস আদালতেও এর প্রভাব পড়েছে। বিদ্যুতের অভাবে কম্পিউটার থেকে সামান্য একটা দরখাস্তও বের করা যাচ্ছে না। শহরের স্কুল কলেজে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

গ্রাহকদের অভিযোগ বিদ্যুতের তীব্র লোডশেডিংয়ের কারণে কোনো কাজই ঠিকমতো করা যাচ্ছে না।

ঠাকুরগাঁও কালেক্টরেট স্কুলে একাধিক শিক্ষার্থী জানান, সন্ধায় যে সময় লেখাপড়ার সময়, সে সময় বিদ্যুৎ থাকে না। তার ওপর অতিরিক্ত গরমে কাহিল হয়ে পড়েছে জনজীবন।

এ ব্যাপারে পিডিবি তথা বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী অরুনাংশু চন্দ্র সেন ঢাকাটাইমসকে জানান, মূল গ্রিড থেকে পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তিনি জানান, মূল গ্রিডে কাজ চলছে। মাস দুয়েকের মধ্যে সমস্যা সমাধান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

অপরদিকে ঠাকুরগাঁও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহা ব্যবস্থাপক মো. ইনছের আলী ঢাকাটাইমসকে জানান, সম্প্রতি কালবৈশাখী ঝড়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে বিদ্যুৎ টাওয়ার ভেঙে যায়। সেটি মেরামত কাজ শেষ হলে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হবে।

প্রসঙ্গত, ঠাকুরগাঁও জেলায় এক লাখ ৬৬ হাজার ৩৩১ গ্রাহকের নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে পল্লী বিদ্যুতের ৩৮ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ১৭ মেগাওয়াট। এছাড়াও জেলা শহরে বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের ২৭ হাজার গ্রাহকের নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে ১২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ চাহিদার বিপরীতে পাওয়া যাচ্ছে সাড়ে পাঁচ মেগাওয়াট। অর্থাৎ সারা জেলায় বিদুতের চাহিদা ৫০ মেগাওয়াট আর পাওয়া যাচ্ছে অর্ধেকরও কম অর্থাৎ ২২ মেগাওয়াট।

(ঢাকাটাইমস/০৭জুন/প্রতিনিধি/জেবি)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
জুলাই-আগস্টে সহিংসতার ছবি-ভিডিও আপলোডের আহ্বান পুলিশের
চিতায় যাওয়ার আগে উৎসব মুখর নির্বাচন দেখে যেতে চাই: গয়েশ্বর 
ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার শহীদুল্লাহ্ আটক
সোনালী কাবিন পদক ঘোষণা, ১৫-১৭ ফেব্রুয়ারি কবি আল মাহমুদ স্মরণোৎসব
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা