গাছে গাছে আমের মুকুল, ছড়াচ্ছে ঘ্রাণ

জহুরুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
 | প্রকাশিত : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১০:৩০

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার আমবাগানগুলো ভরে গেছে মুকুলে, প্রকৃতিতে যা যোগ করেছে নতুন মাত্রা। সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে ফুটেছে আমচাষিদের সোনালী স্বপ্ন। বসন্ত আসতেই বাতাসে মুকুলের মন মাতানো গন্ধে ভরে উঠেছে প্রকৃতি। মধুমাসের বার্তা শোনাচ্ছে এসব আমের মুকুল। মুকুলে গাছ ভরে যাওয়ায় জেলার আমচাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মৌসুমে যে মুকুল ধরেছে তাতে আমের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছেন আমচাষি ও বাগান মালিকরা।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের একাধিক আমবাগান ঘুরে দেখা গেছে, বাগানের সারি সারি গাছে সবুজ পাতার মাঝে আমের মুকুল ফুটতে শুরু করেছে। চারদিকে ছড়াচ্ছে সেই মুকুলের সুবাসিত ঘ্রাণ। বেশি মুকুল ফুটেছে ছোট ও মাঝারি আকারের গাছগুলোতে। গত সপ্তাহ থেকে গাছে মুকুল আসা শুরু হয়েছে। গাছের পুরো মুকুল ফুটতে আরও কয়েক সপ্তাহ লাগবে বলে জানান বাগান মালিকরা।

কয়েকজন বাগান মালিক জানান, গতবছর স্মরণকালের সবচেয়ে কম দামে বিক্রি হয়েছে আম। ফলে মোটা অংকের লোকসান গুণতে হয়েছে আমচাষি ও ব্যবসায়ীদের। তবে এবার সেই ক্ষতি পুষিয়ে উঠবে বলে আশা চাষিদের। তাই লাভবান হওয়ার আশায় বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা।

কৃষি বিভাগ ও আমচাষিরা বলছেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারও আমের ভালো ফলন হবে। মুকুল আসার আগে থেকেই গাছের পরিচর্যা করছেন বাগানের মালিক ও চাষিরা। কৃষি বিভাগের পরামর্শ মোতাবেক বিভিন্ন ধরনের কীটনাশকও ব্যবহার করছেন তারা।

জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে প্রায় সব জাতের আমের উৎপাদন হচ্ছে। লাভজনক হওয়ায় প্রতি বছর কৃষিজমিতে বাড়ছে আমের আবাদ। আ¤্রপালি, ফজলি, খিরসাপাত, ল্যাংড়া, রাজভোগ ও গোপালভোগসহ বিভিন্ন জাতের আমের বাগান গড়ে উঠেছে আমের রাজধানী হিসেবে খ্যাত এই জেলায়।

সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নের পলশা গ্রামের বাগান মালিক মো. আবু জানান, সপ্তাহখানেক আগে থেকে তার বাগানের আম গাছে মুকুল আসা শুরু হয়েছে। মুকুল আসার পর থেকেই গাছের প্রাথমিক পরিচর্যা শুরু করেছেন তিনি। মুকুলকে রোগ বালাইয়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় বালাইনাশক স্প্রে করছেন। বর্তমানে আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। এই অবস্থা থাকলে এবার আমের বাম্পার ফলনে আশাবাদী তিনি।

গোমস্তাপুর উপজেলার আম ব্যবসায়ী মামুন বিশ্বাস জানান, গত বছর আমের বাজার মন্দা হওয়ায় লোকসান গুণতে হয়েছে তাদের। তবে এবার লাভ হবে বলে আশায় আছেন তারা।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. মঞ্জুরুল হুদা বলেন, উপজেলা কৃষি অফিস থেকে পাওয়া তথ্যমতে জেলার ৩০ শতাংশ আম গাছে মুকুল এসেছে। এ বছর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৭৫ হাজার টন। চাঁপাইনবাবগঞ্জে আমবাগান আছে ২৬ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে, আর আম গাছ আছে প্রায় ২০ লাখ।

আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম জানান, গত সপ্তাহ থেকে গাছে আমের মুকুল আসতে শুরু করেছে। মূলত আবহাওয়াগত কারণে দেশীয় জাতের গাছে আগাম মুকুল আসতে শুরু করেছে। এ বছর শীতের তীব্রতা ও স্থায়িত্ব কম থাকায় গাছে গাছে মুকুল আসতে শুরু করেছে। এবার শীত কম হওয়ায় আমের রোগবালাই গত বছরের তুলনায় কম হবে বলে মনে করেন তিনি।

ঢাকা টাইমস/১৮ফেব্রুয়ারি/প্রতিনিধি/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :