বিদেশি বাণিজ্যিক ঋণ গ্রহণে অধিকতর বিবেচনার তাগিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ৩০ এপ্রিল ২০১৯, ১৯:৪৮

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তৈরি পোশাক, সুয়েটার, ডাইং, নিটিং এবং টেক্সটাইল খাতে বিদেশি বাণিজ্যিক ঋণের অর্ধেকের বেশি। প্রায় ১৬ শতাংশ ঋণ নিয়েছে প্লাস্টিক, সার্ভিস এবং ফার্মাসিটিক্যাল। তৈরি পোশাক খাত রপ্তানির সঙ্গে সম্পর্কিত হওয়ায় বিদেশি ঋণ পরিশোধে ঝুঁকি কম। কিন্তু বিদ্যুৎ খাতের আয় বৈদেশিক মুদ্রায় হয় না। এ কারণে ঋণ পরিশোধের সময় ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। এছাড়া বিদেশি বাণিজ্যিক ঋণে আরও কিছু ঝুঁকি থাকায় আরও অধিকতর বিবেচনার তাগিদ দেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে ‘বিআইবিএম রিসার্চ অ্যালম্যানাক -২০১৯’ অনুষ্ঠানে উপস্থাপিত ‘প্রাইভেট কমার্শিয়াল বোরোইং ফর্ম ফরেন সোর্সেস ইন বাংলাদেশ: অ্যান এনাটমি’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। অনুষ্ঠানে ব্যাংক ও আর্থিক বিষয়ে আরও ১৮টি গবেষণাপত্র প্রকাশ করা হয়। ২০১৮ সালে এসব গবেষণাপত্র আলাদাভাবে সেমিনার, রিসার্চ ওয়ার্কশপ এবং রাউন্ডটেবল ডিসকাশনে উপস্থাপন করা হয়েছিল। ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহী, গবেষকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিদের জন্য সংক্ষিপ্তভাবে এক অনুষ্ঠানে এসব গবেষণাপত্রের প্রাপ্ত ফলাফল ও সুপারিশসমূহ উপস্থাপন করা হয়।

‘বিআইবিএম রিসার্চ অ্যালম্যানাক’ -২০১৯ অনুষ্ঠানের কর্মশালার উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এবং বিআইবিএম নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান এস. এম. মনিরুজ্জামান। সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের ড. মোজাফফর আহমদ চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিআইবিএমের অধ্যাপক এবং পরিচালক (গবেষণা, উন্নয়ন ও পরামর্শ) ড. প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জ্জী। তিনি তার বক্তব্যে ‘বিআইবিএম রিসার্চ অ্যালম্যানাক’ -২০১৯ অনুষ্ঠানের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এবং বিআইবিএম নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান এস. এম. মনিরুজ্জামান বলেন, দেশের টেকসই উন্নয়নে কাজ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিশ্¦ব্যাপী আর্থিক খাতে বিভিন্ন ধরনের ঝুঁকি রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা থাকায় ঝুঁকি অনেক কম। একই সঙ্গে কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং আর্থিক খাত অন্তর্ভুক্তিমূলক হয় সেদিকে নজর দেওয়া হচ্ছে।

তিনটি টেকনিক্যাল সেশনের মাধ্যমে গবেষণাপত্রগুলো উপস্থাপনসহ প্রত্যেকটির ওপর আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

সেশন-১ -এ সেশনের সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএম-এর ড. মোজাফফর আহমদ চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা। তিনি বলেন, ব্যাংকিং এবং আর্থিক খাতের বিভন্ন বিষয়েও বিআইবিএম গবেষণা করছে। যা এ খাতটির লিডারশিপ এবং গভর্নেন্সের উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।

কৃষিব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আলী হোসেন প্রধানিয়া বলেন, বিদেশি ঋণ পরিশোধে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। এজন্য বিদেশি ঋণ গ্রহণে আরও সতর্ক হতে হবে। এমনকি রিজার্ভে চাপ সৃষ্টি হতে পারে।

সেশন-১ এর গবেষণাপত্রের মধ্যে রয়েছে- আইটি সিকিউরিটি অব ব্যাংকস ইন বাংলাদেশ: থ্রেটস অ্যান্ড প্রিপেয়ার্ডনেস; প্রোডাক্ট ডাইভার্সিফিকেশন অব ইসলামিক ব্যাংকস: প্রসপেক্টস অ্যান্ড চ্যালেঞ্জস ইত্যাদি।

টেকনিক্যাল সেশন-২-এর সভাপতিত্ব করেন সোনালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস. এ. চৌধূরী। তিনি ব্যাংকারদের ঋণ প্রদানে আরও সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন।

পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, ব্যাংকারদের প্রশিক্ষণে আরও গুরুত্ব দিতে হবে। এটিকে ব্যয় বিবেচনা না করে বিনিয়োগ ভাবতে হবে বলে মত দেন।

এ সেশনের গুরুত্বপূর্ণ গবেষণাপত্র হচ্ছে- ইন্টারনাল অডিট অ্যান্ড পারফরমেন্স অব ব্যাংকস ইন বাংলাদেশ; মানি লন্ডারিং ভালনারেবিলিটিস ইন পেমেন্ট সিস্টেমস: বাংলাদেশ কনটেক্সট ইত্যাদি।

সেশন-৩- এ সেশনের সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ। এ সেশনের গুরুত্বপূর্ণ গবেষণাপত্র হচ্ছে-ডেভেলপমেন্ট অব বন্ড মার্কেট ইন বাংলাদেশ; কস্ট ফর কমপ্লায়েন্স উইথ রেগুলেশনস ইন ব্যাংকস ইত্যাদি।

(ঢাকাটাইমস/৩০এপ্রিল/আরএ/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

অর্থনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :