চলছে স্বর্ণকর মেলা

বন্ড সুবিধা পাবেন স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা: এনবিআর চেয়ারম্যান

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৩ জুন ২০১৯, ১৮:০৬

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন , যারা রপ্তানির উদ্দেশে স্বর্ণ আমদানি করবেন তাদের বন্ড সুবিধা দেয়া হবে।

রাবিবার রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে তিন দিনব্যাপী স্বর্ণমেলার উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা জানান।

এনবিআর সদস্য (আয়কর) কানন কুমার রায়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির (বাজুস) সভাপতি গঙ্গাচরণ মালাকার, সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগারওয়ালাসহ স্বর্ণ ব্যবসায়ী ও রাজস্ব কর্মকর্তারা।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, তৈরি পোশাক ও চামড়া শিল্পের মতো যারা স্বর্ণের কাঁচামাল রপ্তানির উদ্দেশে আমদানি করবে তাদের বন্ড সুবিধা দেয়া হবে। যারা বন্ড সুবিধা পাবেন তাদের আমদানি করা সব স্বর্ণ রফতানি করতে হবে। বন্ড সুবিধায় আনা স্বর্ণ খোলাবাজারে বিক্রি করা যাবে না।

সাধারণ মানুষ বিদেশ থেকে সর্বোচ্চ ১০০ গ্রাম স্বর্ণ আমদানি করতে পারবেন। এর চেয়ে বেশি আনলে তা বাজেয়াপ্ত করা হবে। তবে বিদেশ থেকে স্বর্ণালংকার আমদানি করতে পারবে না বলে জানান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। তিনি বলেন, স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের লাইসেন্স দিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে পাঁচ লাখ টাকা নিতে বলেছি। আর এ লাইসেন্স তিন বছর পরপর নবায়নের জন্য এক লাখ টাকার নেয়ার কথা এনবিআর থেকে বলা হয়েছে। এটিই চূড়ান্ত হবে।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, স্বর্ণ চোরাচালানের সঙ্গে মধ্যবিত্ত ব্যবসায়ীরা জড়িত নন। চোরাচালানে একটি বিশেষ গোষ্ঠী রয়েছে। যারা এখন আর সুবিধা করতে পারবেন না।

এনবিআর সদস্য (আয়কর) কানন কুমার রায় বলেন, এসআরও ৩০ জুন পর্যন্ত মেয়াদ। পরবর্তী সময়ে এ ধরনের এসআরও হবে কি না- তা আমি জানি না। তাই এ সময় অপ্রদর্শিত স্বর্ণ ঘোষণা দিয়ে বৈধ করবেন। আর এ সুযোগ নিয়ে যারা স্বর্ণ বৈধ করবেন না তাদের জন্য ভালো কোনো বার্তা আমরা দিতে পারব না।

রাবিবার ২৩ জুন শুরু হওয়া এ মেলা চলবে ২৫ জুন (মঙ্গলবার) পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে এই মেলা। বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির (বাজুস) ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) যৌথভাবে এই মেলার আয়োজন করেছে। মেলায় প্রতি ভরি ডায়মন্ড ৬ হাজার টাকা, স্বর্ণ এক হাজার টাকা ও রুপার জন্য ৫০ টাকা কর প্রদান করে অবৈধ সোনা, রুপা বৈধ করার সুযোগ রয়েছে। একই দিনে বিভাগীয় শহরগুলোতেও দুই দিনব্যাপী স্বর্ণকর মেলা শুরু হয়েছে।

তবে এটি স্বর্ণ বা গয়না প্রদর্শনের মেলা নয়, স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের কাছে ঘোষণার বাইরে যে স্বর্ণ মজুত আছে, তা ঘোষণার জন্য এই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। গত ২৮ মে দেশের সোনা ব্যবসায়ী ও স্বর্ণালংকার প্রস্তুতকারীদের কাছে অঘোষিত বা অবৈধভাবে থাকা সোনার মজুত ঘোষণায় আনার সুযোগ দিয়েছে এনবিআর। এই সুযোগ ৩০ জুন পর্যন্ত থাকবে। তবে সোনা ব্যবসায়ীরা যাতে সহজেই এই সুযোগ নিতে পারেন, সে জন্য এই অভিনব মেলার আয়োজন করা হয়েছে। তিন দিনের এই মেলায় সোনা ব্যবসায়ীরা নির্দিষ্ট ফরম পূরণ করে পে–অর্ডারের মাধ্যমে কর দিতে পারবেন। এভাবে মেলায় এসেও ‘কালো’ সোনা ‘সাদা’ করা যাবে।

কোম্পানি করদাতার ক্ষেত্রে কোম্পানির মুখ্য কর্মকর্তা, ফার্মের ক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনা অংশীদার ও ব্যক্তিমালিকানাধীন করদাতাদের ক্ষেত্রে করদাতাকে নির্দিষ্ট ফরমে সই করতে হবে। ফরমে ঘোষিত মজুতের বিবরণ ও করের তথ্য থাকতে হবে। কোনো করদাতা যদি হালনাগাদ রিটার্ন দাখিল না করেন, তাহলে সর্বশেষ করবর্ষের দাখিলকৃত রিটার্নে থাকা সমাপনী মজুত ঘোষণা দিতে হবে। যদি কোনো করদাতা কখনোই রিটার্ন দাখিল না করে থাকেন, তাহলে কোনো সমাপনী মজুত থাকবে না, বরং পুরো মজুতই ঘোষণার আওতায় আসবে।

ঢাকা সিটি করপোরেশনের করদাতারা কর অঞ্চল-১–এর বুথে ঘোষিত মজুতের বিপরীতে কর দেবেন। এ ছাড়া বাকি জেলার যাঁরা সোনার মজুত সাদা করবেন, তাঁদের জন্য পৃথক বুথ থাকবে। পে–অর্ডার করার জন্য মেলায় বিভিন্ন ব্যাংকের বুথ থাকবে। এদিকে আগামী জুলাই মাস থেকে কালো বা অবৈধ সোনার মজুত খোঁজার অভিযান শুরু হবে বলে এনবিআর সূত্রে জানা গেছে।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ৩ অক্টোবর স্বর্ণ নীতিমালা অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। একই সঙ্গে ব্যাগেজ রুলের আওতায় শুল্ক দিয়ে স্বর্ণ আমদানির সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। এই মেলার মাধ্যমে হিসাবের বাইরে থাকা স্বর্ণ বৈধতার আওতায় আসবে বলে আশা করছেন ব্যবসায়ীরা।

ঢাকাটাইমস/২৩জুন/জেআর/আরএ

সংবাদটি শেয়ার করুন

অর্থনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

অর্থনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :