ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বরিশলে শারীরিক প্রতিবন্ধী হামলা মামলার আসামি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০৬ নভেম্বর ২০১৯, ২২:২৮
অ- অ+

শারীরিক প্রতিবন্ধী আবুল মিয়া। বয়স পঞ্চাশ। পায়ে সমস্যার কারণে চলার শক্তি না থাকলেও হামলা-মারধরের অভিযোগে করা এক মামলার আসামি তিনি। এখন পুলিশের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধিত ও ভাতাভোগী এই প্রতিবন্ধী।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বাসুদেব ইউনিয়নের বরিশল গ্রামে পূর্বশত্রুতার জেরে করা ওই মামলায় আরও অনেক নিরপরাধ লোকজনকে আসামি করার অভিযোগ উঠেছে।

কাজল বেগম নামের এক অন্তঃসত্ত্বার পেটে লোহার রড দিয়ে আঘাত করে গর্ভের চার মাসের সন্তান নষ্ট করার অভিযোগ এনে মামলাটি করেন তার স্বামী মো. সালমান মিয়া। গত ১ নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় করা মামলায় কাজলের বাবার বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগও আনা হয়। আসামি করা হয় ১৪ জনকে ।

মামলায় ঘটনার তারিখ উল্লেখ করা হয় ২৭ অক্টোবর। এলাকার লোকজন জানান, ওই দিন তুচ্ছ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি সালিশের মাধ্যমে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এরই মধ্যে থানায় মামলা হয়ে যায়।

সরেজমিনে গেলে স্থানীয় সর্দার মো. ইসহাক মিয়া জানান, কাজলের ভাই আলমগীরের ফোনে তাদের বাড়িতে তিনি গিয়েছিলেন। কিন্তু তাকে কেউ হামলার কথা বলেনি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য রমজান আলীও গিয়েছিলেন ঘটনাস্থলে। কারও কাছ থেকে হামলার কোনো সাক্ষ্য পাননি বলে জানান তিনি।

মামলা হওয়ার পর ওই দিন রাতে পুলিশ যায় গ্রামে। তার আগে গ্রেপ্তারের ভয়ে গ্রাম ছাড়েন আসামিরা। এতে বিপাকে পড়েছে অনেকের পরিবার।

মামলার একজন আসামি হারিজ মিয়া। তার স্ত্রী বলেন, ‘আমার স্বামী ব্ল্যাড ক্যান্সারের রোগী। বাড়ির সামনের দোকানটি আয়ের একমাত্র উৎস। দোকান বন্ধ থাকায় সন্তানদের নিয়ে বিপাকে আছি।’

রোশেনা বেগম নামের একজন নারী বলেন, ‘ছেলেদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়ায় কেউ কাজে যেতে পারছে না তারা।’

কুলসুম বেগম নামের একজন নারী বলেন, ‘গ্রামের সিএনজি অটোরিকশাচালক রুবেলের ওপর হামলা হয় কয়েক মাস আগে। ওই সময় রুবেলকে উদ্ধার করায় এ মামলায় আমার চার ছেলেকে আসামি করা হয়েছে। কাজ বন্ধ থাকায় তাদের অভাব-অনটনে দিন কাটছে।’

সরেজমিনে জানা যায়, পূর্ববিরোধের জের এ মামলা। কাজল বেগমের বাবা আরব আলীর সঙ্গে একই গ্রামের হোসেন মিয়ার বিরোধ রয়েছে। এর জেরে হোসেন মিয়া ও তার ছেলে রুবেলকে মামলার আসামি করা হয়। গত ২১ সেপ্টেম্বর সিএনজি অটোরিকশাচালক মো. রুবেল মিয়াকে বেদম মারধর করে গ্রামের আবদুল খালেকের ছেলে নূর মিয়ার ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা। আহত রুবেলকে হাসপাতালে নিয়ে যেতেও বাধা দেয় তারা। এ ঘটনায় মামলা করতে গেলে এজাহারে নূরু আর তার ভাই মানিকের নাম থাকায় পুলিশ মামলা নেয়নি। পরে ২৬ তারিখ মামলা হয় বলে জানান রুবেলের মামা মো. মোনায়েম।

বিরোধের জের ধরেই সর্বশেষ মামলাটি হয় বলে জানান গ্রামের অনেকে। মামলা-মোকদ্দমা দিয়ে গ্রামের লোকজনকে হয়রানি করার অভিযোগ আছে নূরু মিয়ার বিরুদ্ধে। তবে নূরু মিয়া এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এসব ঘটনার সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

কাজল বেগমের স্বামী সোলায়মান মিয়ার মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহম্মদ সেলিম উদ্দিন জানান, ঘটনার তদন্ত চলছে।

(ঢাকাটাইমস/৬নভেম্বর/মোআ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
টয়োটার ব্যবসা হারাচ্ছে নাভানা?
সারজিস বনাম নওশাদ: ভোটে কার পাল্লা ভারি?
মনোহরদীতে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে ছাত্রদল নেতা গণধোলাইয়ের শিকার
গণভবন জয় করেছি, এবার জাতীয় সংসদও জয় করব: নাহিদ
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা