কবি জসীমউদদীনের ১১৭তম জন্মবার্ষিকী উদযাপিত

বাংলা একাডেমি আজ সকালে একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে কবি জসীমউদদীনের ১১৭তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে একক বক্তৃতানুষ্ঠানের আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ প্রদান করেন একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী। বক্তৃতা করেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ-এর উপাচার্য অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ। সভাপতিত্ব করেন জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।

স্বাগত ভাষণে হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, জসীমউদদীনকে ‘পল্লীকবি’ শিরোনামে যে খণ্ডিত সম্বোধন ও মূল্যায়ন এ দেশে প্রচলিত, আমাদের সে বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। কালজয়ী কবিতায় তিনি নগর-পল্লী, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষ-মহানের কথা বলেছেন। তাঁর প্রকাশভঙ্গি সরল কিন্তু তা আধুনিক কবিতার বৈশিষ্ট্যরহিত নয় বরং আজ কালের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ জসীমউদদীন অনায়াসে বলতে পারেন বাংলা কবিতার আয়তন তিনি সম্প্রসারিত করেছেন।

অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, বঙ্গবন্ধুর জীবনসংগ্রাম আর মহান মুক্তিযুদ্ধ কবি জসীমউদদীনকে মর্মে মর্মে রূপান্তরিত করে দেয়। ফলে পল্লীর যে সহজ জীবনধারা নিয়ে ইতিপূর্বে কাব্য রচনা করেছেন, ভয়াবহ সেই দিনগুলোতে কাব্যে কবি সম্পূর্ণ নতুন রূপ নিয়ে আবির্ভূত হয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধ মানুষকে যে কীভাবে পরিবর্তিত করে দেয়, মানুষের চেতনায় কীভাবে আগুন জ্বালিয়ে দেয়, জসীমউদদীনের ‘মুক্তি-যোদ্ধা’ কবিতা তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ। তিনি বলেন, বাঙালি জাতির দুর্দিনে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ অনুসরণ করে জসীমউদদীন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে যেভাবে কলম ধরেছিলেন, তা রীতিমতো দুঃসাহসের কাজ। রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধার চেয়ে জসীমউদদীনের এই ভূমিকার তাৎপর্য কোনো সূত্রেই অকিঞ্চিৎকর নয়। জসীমউদদীনের সৃষ্টিকর্ম আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সাহিত্যিক দলিল হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে নিরন্তর।

সভাপতির ভাষণে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, কবি জসীমউদদীন রাজনৈতিকভাবে সচেতন মানুষ ছিলেন। পাকিস্তান-পর্বজুড়ে তিনি বাংলা বর্ণমালা ও বানানের বিকৃতি সাধনে অপপ্রচেষ্টার বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালন করেছেন। ১৯৬৯-এর গণআন্দোলন তাকে নিয়ে এসেছে জনতার কাতারে। মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং বঙ্গবন্ধুর প্রসঙ্গ তাঁর কবিতায় উদ্ভাসিত হয়েছে অনন্য শিল্পব্যঞ্জনায়।

(ঢাকাটাইমস/৯জানুয়ারি/এজেড)