চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচন

শাহাদাতের হাতেই যাচ্ছে ধানের শীষ!

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২০:০৫

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এরই মধ্যে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টিও নিজেদের প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। তবে দেশের অর্থনীতির প্রাণভোমরা হিসেবে খ্যাত এই সিটিতে এখনো প্রার্থী ঠিক করতে পারেনি বিএনপি।

সদ্য সমাপ্ত ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বড় ধাক্কা খেয়েছে বিএনপি। যদিও চট্টগ্রাম সিটিতে বিএনপির অতীত অভিজ্ঞতা অনেকটাই সুখকর। বেশ কয়েকবার বিএনপির মেয়ররা চট্টগ্রামে কর্তৃত্ব করেছেন। ২০১৫ সালের নির্বাচন বাদে অন্য নির্বাচনে দলটির প্রার্থীরা ভোটে মোটামুটি সফল হয়েছেন। পরাজিত হলেও ভয় ছড়িয়েছেন প্রতিপক্ষ শিবিরে।

বিএনপির চট্টগ্রাম নগরের নেতাকর্মীরা বলছেন, এবার যেকোনো উপায়ে চট্টগ্রাম সিটি পুনরুদ্ধার করতে চান তারা। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব চট্টগ্রামে এখনো প্রার্থী ঠিক করতে পারেনি। তবে সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাঠঘাট চষে বেড়াচ্ছেন। যিনিই মনোনয়ন পান প্রতিপক্ষকে কঠিন চ্যালেঞ্জ জানাতে নেতাকর্মীরা প্রস্তুত।

আগামী ২৯ মার্চ চট্টগ্রাম সিটিতে ভোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেখ তারিখ ২৭ ফেব্রুয়ারি আর মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ১ মার্চ। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ৯ মার্চ।

গুরুত্বপূর্ণ এই নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সংসদে বিরোধী দল এরই মধ্যে নিজ নিজ দলের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। বন্দরনগরীর নৌকার মাঝির টিকিট পেয়েছেন পরীক্ষিত নেতা নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম। আর নগর কমিটির আহ্বায়ক সোলায়মান শেঠকে প্রার্থী করেছে জাতীয় পার্টি।

বিএনপি এখনো প্রার্থী চূড়ান্ত করতে না পারলেও আলোচনায় ঘুরেফিরে আসছে চার-পাঁচজনের নাম। রাজনৈতিক ও সামাজিক অনুষ্ঠানগুলোতে দীর্ঘদিন ধরে তারা নিজেদের ব্যস্ত রেখে সক্রিয়তা দেখিয়ে আসছেন। দলীয় মনোনয়ন পেলে বিজয় এনে দিতে চেষ্টা করবেন বলে আভাস ইঙ্গিতও দিচ্ছেন।

মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীদের তথ্যমতে, দলের প্রার্থী হিসেবে যে কজনের নাম জোরোশোরে উচ্চারিত হচ্ছে তাদের মধ্যে এগিয়ে রয়েছেন নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন। এরপরই আলোচনায় রয়েছেন সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর। পিছিয়ে নেই সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এরশাদউল্লাহ ও নগর কমিটির বর্তমান যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও চসিকের সাবেক কাউন্সিলর নিয়াজ মোহাম্মদ খানও।

এই কজনের বাইরে জাসদের মাইনুদ্দিন খান বাদলের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিপুল ভোটে পরাজিত নগর বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আবু সুফিয়ানের নামও জোরোশোরে উচ্চারিত হচ্ছে। তবে চট্টগ্রাম-৮ আসনের নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তোলা সুফিয়ান সিটি নির্বাচনে তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছেন না বলেই তার অনুসারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।

জানা যায়, প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে থাকা ডা. শাহাদাত হোসেন মেয়র পদে নির্বাচন করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে কাজ করছেন। এমনকি চট্টগ্রামের কর্তৃত্ব দলকে ফিরিয়ে দিতে তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের পদও ছেড়েছেন। রাজনীতির মাঠেও সবচেয়ে সক্রিয় তিনি। যেকোনো বিপদে আপদে সহজেই তার দেখা পান নেতাকর্মীরা। এসব কারণে তার দিকে দলীয় হাইকমান্ডের সুনজর রয়েছে।

গত মঙ্গলবার মহানগর বিএনপির এক প্রতিনিধিসভা শেষে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ডা. শাহাদাত হোসেনের সঙ্গে কথাও বলেছেন। পাশাপাশি আবুল হাশেম বক্করের সঙ্গেও কথা বলেন ফখরুল। সম্ভাব্য এই দুই প্রার্থীই নির্বাচনে নিজেদের আগ্রহের কথা মহাসচিবকে জানান। তবে দল থেকে যাকেই মনোনয়ন দেয়া হোক ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার কথাও বলেছেন তারা।

ডা. শাহাদাত ৩০ ডিসেম্বরের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি-বাকলিয়া) আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেন। সেসময় তিনি কারাগারে ছিলেন। তবে বিপুল ভোটে হেরে যান সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে বর্তমান শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের কাছে।

অন্যদিকে নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর এখন পর্যন্ত জাতীয় কিংবা স্থানীয় কোনো নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ পাননি। এবার সেই সুযোগ নিয়ে নির্বাচনে লড়তে জোরেশোরেই মাঠে নেমেছেন এই নেতা।

নগর বিএনপির নেতাদের সঙ্গে আলাপে জানা গেছে, আসন্ন নির্বাচনে মেয়র পদের প্রার্থী ছাড়াও ৪১টি সাধারণ ওয়ার্ড ও ১৫টি সংরক্ষিত নারী আসনে কাউন্সিলর পদে প্রার্থী দিবে বিএনপি। এজন্য মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে দলটি। দলের পক্ষ থেকে কাউন্সিলর পদে সম্ভাব্য প্রার্থীদের একটি তালিকা তৈরির কাজও চলছে।

(ঢাকাটাইমস/১৭ফেব্রুয়ারি/ডিএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :