১০ বছর আগের সিনেমায় করোনার পূর্বাভাস!

বিনোদন ডেস্ক
| আপডেট : ১১ মার্চ ২০২০, ১৪:০৯ | প্রকাশিত : ১১ মার্চ ২০২০, ১৩:৫৪

চীন থেকে একটি ভয়াবহ এবং রহস্যময় ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে, এরকম গল্প নিয়ে ২০১১ সালে মুক্তি পাওয়া চলচ্চিত্রটি মোটামুটি সফলতা পেয়েছিল। কিন্তু ২০২০ সালে এসে সেটি ‘হিট’ হয়ে ওঠে। চলচ্চিত্রটির গল্প আর বর্তমান বাস্তবতার সঙ্গে অবিশ্বাস্য মিল ধরা পড়েছে।

২০১১ সালে মুক্তি পাওয়া ‘কনটেজিয়ন’ নামের সেই সিনেমাটিকে কোনোভাবেই ব্লকবাস্টার বা ব্যবসাসফল বলা যাবে না। যদিও বেশ কয়েকজন তারকাকে নিয়ে সিনেমাটি তৈরি হয়েছিল। তাদের মধ্যে রয়েছেন ম্যাট ডেমন, গিনেথ প্যালট্রো, জুডি ল, কেট উইনস্লেট এবং মাইকেল ডগলাস। তার পরেও সেটি ওই বছরের ব্যবসায়ের দিক থেকে ৬১তম হয়েছিল।

কিন্তু ১০ বছরের মাথায় সবাইকে অবাক করে দিয়ে ফিরে এসেছে ‘কনটেজিয়ন’। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাপল আইটিউন স্টোরে সবচেয়ে বেশি ডাউনলোড হওয়া ছবির তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে সিনেমাটি। সেই সঙ্গে গুগল সার্চের তালিকায় শীর্ষে সিনেমাটির নাম খোঁজার প্রবণতাও বাড়ছে।

‘কনটেজিয়ন’ সিনেমাটি তৈরি করেছে ওয়ার্নার ব্রাদারস। তারা বলছে, চীনে যখন প্রথম করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়, তখন বিশ্বের জনপ্রিয় চলচ্চিত্রের তালিকায় এটির অবস্থান ছিল ২৭০তম। মাত্র তিন মাসের মাথায় ‘কনটেজিয়ন’-এর জায়গা হয়েছে নবম অবস্থানে। তার সামনে রয়েছে শুধুমাত্র হ্যারি পটার সিরিজের আটটি চলচ্চিত্র।

এর একমাত্র কারণ হলো করোনাভাইরাস। প্রায় এক দশক আগে তৈরি সিনেমাটির কাহিনির সঙ্গে বর্তমান করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের অনেক মিল রয়েছে। সেখানে একজন নারী ব্যবসায়ী একটি রহস্যময় এবং মারাত্মক ভাইরাসে মারা যান। চীনে একটি সফরের সময় তিনি ওই ভাইরাসে আক্রান্ত হন। কিন্তু সেই সময় পর্যন্ত ওই ভাইরাসের ব্যাপারে কোনো সতর্কতা জারি করা হয়নি।

দর্শকরা বলছেন, বর্তমান বাস্তব জীবনের ভাইরাস সংক্রমণ যেমন চীন থেকে শুরু হয়েছিল, তেমনি চলচ্চিত্রটির এরকম কাহিনির মিলের কারণেই সেটির জনপ্রিয়তা বেড়েছে। আগ্রহ আরও বেড়েছে গিনেথ প্যালট্রোর ইনস্টাগ্রাম পোস্টের কারণেও। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দেয়ার সময় বিমানে বসে তিনি মুখে মাস্ক পরা এটি ছবি পোস্ট করেন। সেখানে লেখেন, ‘নিরাপদ থাকবেন। করমর্দন করবেন না। নিয়মিত হাত ধোবেন।’

প্যালট্রো অভিনীত চরিত্রটি এমইভি-ওয়ান নামের একটি ভাইরাসে আক্রান্ত হয় হংকংয়ের একজন বাবুর্চির সঙ্গে করমর্দনের মাধ্যমে, যিনি একটি শুকর জবাই করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ওই শুকরটি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিল বাদুরের মাধ্যমে। এরপর দেশে ফিরে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। কিছুদিন পর মারা যান। এরপর তার ছেলেরও একই রোগে মৃত্যু হয়।

কল্পিত এবং বাস্তব ভাইরাস, উভয়ের ক্ষেত্রেই ফুসফুসের সংক্রমণ ঘটে। তবে চলচ্চিত্রের কল্পিত এমইভি-ওয়ান ভাইরাসের ধারণাটি এসেছিল বাস্তবের আরেকটি ভাইরাস নিপাহ থেকে, যা অবশ্য করোনাভাইরাস গোত্রের নয়। কল্পিত ভাইরাসের চেয়ে অবশ্য বাস্তব ভাইরাস কম প্রাণঘাতী। চলচ্চিত্রে মৃত্যুহার বলা হয় ২৫%, তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে মৃত্যুহার ৩.৪%।

‘কনটেজিয়ন’ চলচ্চিত্রে দেখা যায়, এমইভি-ওয়ান ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একমাসের মধ্যেই বিশ্বে দুই কোটি ৬০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। তবে চীনে তিন মাস আগে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঘটনার পর এখন পর্যন্ত সারা বিশ্বে মৃত্যুর সংখ্যা পাঁচ হাজারের কম। তাই ওই চলচ্চিত্রের সঙ্গে শুধুমাত্র তুলনা করা যায় ১৯১৮-১৯২০ সাল নাগাদ বিস্তার হওয়া স্প্যানিশ ফ্লুর সঙ্গে, যাতে পাঁচ কোটি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। সূত্র: বিবিসি বাংলা

ঢাকাটাইমস/১১মার্চ/এএইচ

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিনোদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বিনোদন এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :