করোনা সন্দেহে কেউ আসেনি, বিনাচিকিৎসায় দিনমুজুরের মৃত্যু

ফরিদপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১১ এপ্রিল ২০২০, ১৪:১০ | প্রকাশিত : ১১ এপ্রিল ২০২০, ১৪:০২

ফরিদপুরে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে রাস্তার ধারে সারাদিন কাতরানোর পরেও করোনা সন্দেহে তার সাহায্যে এগিয়ে আসেনি কেউ। খবর পেয়ে প্রশাসনের লোকজন দীর্ঘসময় পর তাকে উদ্ধার করে গভীর রাতে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। তবে তার আগেই তার মৃত্যু হয়। মর্মান্তিক এ ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলায়। আর মৃত ব্যক্তির নাম আব্দুস সামাদ মন্ডল (৪৮)। তার বাড়ি যশোরের খাজুরা এলাকায়।

শনিবার সকাল ১০টার দিকে আব্দুস সামাদের মরদেহ ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের লাশ ঘরে রাখা ছিল। তার দাফনের জন্য এখনো কোনো স্বজনের খোঁজ মেলেনি।

মধুখালী উপজেলার কামারখালী বাজারের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী জানান, আব্দুস সামাদ মন্ডল কামারখালীতে এসেছিলেন দিনমুজুরের কাজ করতে। জ্বরে আক্রান্ত হওয়ায় তিনি একটি ভ্যানযোগে হাসপাতালে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে ফরিদপুর-খুলনা মহাসড়কের মাঝিবাড়িতে একটি জুট মিলের সামনে তাকে রাস্তার পাশে একটি গর্তের ধারে ফেলে রেখে যায় ওই ভ্যানচালক।

এভাবে সারাদিন ওই গর্তের ধারেই পড়ে ছিল মুমূর্ষ আব্দুস সামাদ। ওই পথ দিয়ে অনেকেই যাতায়াত করলেও কেউ তার সাহায্যে এগিয়ে আসেনি করোনা আক্রান্ত সন্দেহে। খবর পেয়ে সন্ধ্যার দিকে সেখানে যান মধুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানা পুলিশ।

মধুখালী থানার ওসি আমিনুর রহমান বলেন, লোকটি ভ্যানযোগে হাসপাতালে আসার পথে তাকে করোনা রোগী সন্দেহে পথে ফেলে যায় ভ্যানচালক। এরপর সে একটি গর্তেই পড়ে থাকে। দীর্ঘ সময় এভাবে থাকার পর রাত ৯টার দিকে আমরা ওই রোগীকে ফরিদপুর থেকে আসা বিশেষ অ্যাম্বুলেন্সযোগে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠাই।

মধুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোস্তফা মানোয়ার জানান, অসুস্থ ওই ব্যক্তি জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন বলে তাকে ফরিদপুর মেডিকেলে নেয়ার জন্য একটি অ্যাম্বেুলেন্স চেয়ে পাঠাই। তবে ফরিদপুর থেকে ওই অ্যাম্বুলেন্স আসতে অনেক রাত হয়ে যায়।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. রেজা বলেন, আব্দুস সামাদকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্সে নেয়ার সুযোগ ছিল না সতর্কতার কারণে। তাহলে হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স ১৪ দিন সাধারণ রোগী বহন করতে পারতো না।

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জুয়েল জানান, রাত পৌনে ১১টার দিকে ওই রোগীকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে হাসপাতালে আনা হয়। পরীক্ষা করে তাকে মৃত পাই।

ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, ওই রোগীকে করোনা সন্দেহে কেউ উদ্ধারে এগিয়ে আসেনি বলে জেনেছি। সেখানেই তিনি মারা যান। এ বিষয়ে তিনি বিস্তারিত কিছু জানেন না।

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. সাইফুর রহমান বলেন, রাতেই আমরা ওই মৃত ব্যক্তির শরীরের বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করি। শনিবার সকালে এসব নমুনা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১১এপ্রিল/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :