সিনেমার চেয়েও রঙিন কমল হাসানের জীবন

বিনোদন ডেস্ক
 | প্রকাশিত : ১৪ এপ্রিল ২০২০, ১৬:১৮

অভিনেতা, পরিচালক, চিত্রনাট্যকার, প্রযোজক, গায়ক এবং গীতিকার। বলিউড ও তামিল ইন্ডাস্ট্রিতে বহু পরিচয় কমল হাসানের। কাজের মতো বর্ণময় তার ব্যক্তিগত জীবনও। ঘনিষ্ঠ এবং অন্তরঙ্গ হয়েছেন একাধিক নারীর সঙ্গে। কিন্তু ৬৫ বসন্ত পেরিয়েও এখনও একা এই রাজনীতিক তথা বলিষ্ঠ অভিনেতা।

অতীতের নায়িকা শ্রীবিদ্যা, নৃত্যশিল্পী বাণী গণপতি, অভিনেত্রী সারিকা থেকে সিমরন বাগ্গা অথবা গৌতমী- বিভিন্ন সময়ে কমল হাসান ঘনিষ্ঠ হয়েছেন এদের সঙ্গে। এর মধ্যে বিয়ে করেছিলেন বাণী এবং সারিকাকে। এক সাক্ষাৎকারে কমল বলেছিলেন, তিনি বিয়েতে বিশ্বাস করেন না। প্রেমিকার সামাজিক পরিচিতির কথা ভেবেই তিনি দুটি বিয়ে করেছিলেন।

সত্তরের দশক কমল হাসানের কেরিয়ারের সূত্রপাতের সময়। সে সময় নায়িকা শ্রীবিদ্যার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়েছিলেন তিনি। দুজনে বেশ কিছু ছবিতে একসঙ্গে অভিনয় করেছেন। কিন্তু দুই পরিবারের সম্মতি সত্ত্বেও বেশি দিন স্থায়ী হয়নি তাদের সম্পর্ক। শ্রীবিদ্যা সম্পর্ক ভেঙে চলে গিয়েছিলেন। ১৯৭৬ সালে শ্রীবিদ্যা বিয়ে করেন মালয়লম ছবির পরিচালক জর্জ থমাসকে। চার বছর পরে তাদের বিচ্ছেদ হয়।

২০০৬ সালে শ্রীবিদ্যা যখন হাসপাতালে মৃত্যুশয্যায়, তখন কমল হাসান তার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। সে বছরই অক্টোবর মাসে প্রয়াত হন ক্যানসার আক্রান্ত শ্রীবিদ্যা। দুই বছর পরে মুক্তি পাওয়া মালয়ালম ছবি ‘থিরাক্কথা’ ছিল কমল হাসান ও শ্রীবিদ্যার সম্পর্কের উপর ভিত্তি করে নির্মিত।

শ্রীবিদ্যার সঙ্গে বিচ্ছেদের পরে কমল হাসান প্রেমে পড়েন নৃত্যশিল্পী বাণী গণপতির। দুই বছর পরে তারা বিয়ে করেন। কমল চেয়েছিলেন লিভ ইন সম্পর্কে থাকতে। কিন্তু বাণী সেই প্রস্তাবে রাজি ছিলেন না। বিয়ের পর ১০ বছর সংসার করেন এই জুটি। তারপর ডিভোর্স।

কমল ও বাণীর দাম্পত্য কেন ভেঙেছিল, তা স্পষ্ট করে জানা যায় না। অনেকেই বলেন, তাদের মাঝে সারিকা চলে এসেছিলেন। তার প্রেমে পড়েই নাকি বাণীর থেকে দূরে সরে গিয়েছিলেন কমল। তবে এও শোনা যায়, বাণী নিঃসন্তান ছিলেন বলে তাদের দাম্পত্যে ফাটল ধরে।

কমল হাসানের সঙ্গে সারিকার সম্পর্ক সে সময় ছিল দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রির সব থেকে চর্চিত বিষয়। দুজনের কেউ তাদের প্রেম লুকিয়ে রাখেননি। বাণীর সঙ্গে বিচ্ছেদের আগেই সারিকার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন কমল। ১৯৮৮ সালে তাদের বিয়ে হয়। তখন তাদের বড় মেয়ে শ্রুতির বয়স দুই বছর। ১৯৯৯ সালে জন্ম হয় ছোট মেয়ে অক্ষরার।

কমল-সারিকার ১৬ বছরের দাম্পত্য ভেঙে যায় ২০০৪ সালে। তার দুই বছর আগে সারিকা বিবাহবিচ্ছেদ চেয়ে আবেদন করেছিলেন। শোনা যায়, কমল হাসান একইসঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়েছিলেন নায়িকা সিমরন বাগ্গা এবং সারিকার ঘনিষ্ঠ বান্ধবী গৌতমীর সঙ্গে।

এই পরিস্থিতিতে সারিকা হতাশার জেরে আত্মঘাতীও হতে চেয়েছিলেন। ২০০১ সালে একটি ছবির শুটিংয়ের সময় বয়সে ২২ বছরের ছোট সিমরনের সঙ্গে কমল হাসানের সম্পর্ক নিয়ে গুঞ্জন ওঠে। তবে তাদের সম্পর্ক বেশি দিন টেকেনি। ২০০৩ সালে সিমরন বিয়ে করেন তার ছোটবেলার বন্ধু দীপককে।

এরপর কমল হাসান দীর্ঘদিন গৌতমীর সঙ্গে লিভ ইন সম্পর্কে ছিলেন। তার আগে গৌতমীর প্রথম স্বামী ছিলেন শিল্পপতি সন্দীপ ভাটিয়া। ১৩ বছর পরে ২০১৬ সালে ভেঙে যায় তাদের সম্পর্ক। বিচ্ছেদ প্রসঙ্গে গৌতমী বলেছিলেন, এই সিদ্ধান্ত নিতে তার হৃদয় ভেঙে গিয়েছিল। কারণ তাদের বিয়ে না হলেও তিনি সম্পর্কের প্রতি কমিটেড ছিলেন বলে জানান।

কেন তিনি সম্পর্ক থেকে সরে এলেন, গৌতমী তার সব কারণ প্রকাশ করেননি। ইন্ডাস্ট্রিতে গুঞ্জন, তাদের সম্পর্ক ভাঙার পেছনে দায়ী ছিলেন কমল হাসানের মেয়ে অভিনেত্রী শ্রুতি হাসান। বাবার এই সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি শ্রুতি। কিন্তু গৌতমী কোনোদিন শ্রুতি বা অক্ষরাকে নিয়ে কোনো অভিযোগ করেননি।

সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পরেও গৌতমীর পাশে ছিলেন কমল হাসান। তাদের বিচ্ছেদের আগেই ধরা পড়ে, গৌতমী ক্যানসার-আক্রান্ত। ক্যানসারের বিরুদ্ধে তার লড়াইয়ের শরিক ছিলেন কমল হাসান।

ঢাকাটাইমস/১৪এপ্রিল/এএইচ

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিনোদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :