ত্রাণের জন্য প্রখর রোদে চার ঘণ্টা!

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা এলাকার ৫৫০ জনকে ত্রাণ দিতে জড়ো করা হয় জেলা সদরের নিয়াজ মুহম্মদ স্টেডিয়ামে। ত্রাণ বিতরণের সময় দেয়া হয় সকাল ১০টায়। স্বাভাবিকভাবে কিছু সময় আগে আসার চেষ্টা থাকে মানুষের। অনেকে সকাল ৮টায় এসেছেন। কিন্তু অতিথি আসতে দেরি হওয়ায় ত্রাণ পেতে দুপুর প্রায় ১২টা বেজে যায়। টানা চার ঘণ্টা প্রখর রোদে মাঠে বসে অপেক্ষার প্রহর গুনতে হয় ত্রাণ প্রত্যাশীদের। এই সময়ে লাইনে ঘুমিয়ে পড়েন বয়স্ক মানুষদের অনেকে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার ত্রাণ নিতে এসে মঙ্গলবার এভাবে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন কয়েকশ ত্রাণপ্রার্থী মানুষ। রমজান মাস হওয়ায় মানুষের ক্লান্তির মাত্রা ছিল অনেক বেশি। একপর্যায়ে ত্যক্ত-বিরক্ত এসব মানুষ ত্রাণের আশা বাদ দিয়ে বাড়ি চলে যেতে উদ্যত হন। পরে তাদেরকে আবার বসানো হয়। কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে ত্রাণ দেয়ার এই আয়োজনে অতিথির আগমনে দেরি হওয়ায় ত্রাণ প্রত্যাশীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। অনেকে রোজা রেখে প্রচন্ড রোদে বসে অপেক্ষা করতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা।
ত্রাণ নিতে আসা প্রসন্ন দাস জানান, সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে ত্রাণ নিতে তিনি স্টেডিয়ামের গেইটে আসেন। তাকে মাঠে প্রবেশ করতে দেয়া হয় ১০টায়। আর ত্রাণ মিলে সোয়া ১২টায়। প্রসন্ন বলেন, ত্রাণের অপেক্ষায় বয়স্ক মানুষদের অনেকে ত্রাণের লাইনে ঘুমিয়ে পড়েন।
প্রসন্ন ৯টা ৪০ মিনিটে এলেও ত্রাণ প্রার্থীদের অনেকে সকাল ৮টার মধ্যে চলে আসেন। ত্রাণ নিতে আসা আমিন ও হোসনা জানান, তাদের অনেক কষ্ট হয়েছে। অনেক কাজ ফেলে রোদে বসে থাকতে হয়েছে। দুপুর সোয়া ১২টায় জেলার ত্রাণ তদারকির দায়িত্বে নিয়োজিত বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান (সচিব) তপন কান্তি ঘোষ সেখানে এসে ত্রাণ বিতরণ করেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে সেখানে ছিলেন জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান, পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান, পৌরসভার মেয়র নায়ার কবির, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার।মেয়র নায়ার কবির ত্রাণ দিতে বিলম্ব হওয়ার কথা স্বীকার করে জানান, ত্রাণ প্রার্থীরা সকাল ৯টায় চলে এসেছেন। আর সচিব সাহেব ঢাকা থেকে এসেছেন সাড়ে ১০টায়। উনি আমাদেরকে নিয়ে আবার একটু মতবিনিময় করেছেন। পরিচিত হয়েছেন। উনি সেখানে যেতে যেতে সাড়ে ১১টা বেজেছে। এই জন্যে কিছু লোক উঠে গিয়েছিলো। পরে আবার তাদেরকে বসানো হয়। তিনি বলেন, সচিব জাস্ট উদ্বোধন করেছেন। পরে আমরা সবাইকে দিয়ে দিয়েছি।
পৌর কর্তৃপক্ষ জানায়, বিভিন্ন শ্রেণির সাড়ে ৫০০ পরিবারের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর খাদ্য সহায়তা হিসেবে ১০ কেজি করে চাল দেয়া হয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/২৮এপ্রিল/কেএম)

মন্তব্য করুন