‘খাদ্যে ভেজালকারীরা জরিমানা নিয়ে আর প্রশ্ন তুলতে পারবে না’

খাদ্যে ভেজাল দেয়া প্রতিষ্ঠানগুলো নানা গড়মসি করত। এমনকি খাদ্যে ভেজালের জন্য জরিমানা করায় সরকারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার নজির রয়েছে। তবে এখন থেকে খাদ্য পণ্যের মান যাচাইয়ে সিটি করপোরেশনের নিজস্ব ল্যাব পেল। ফলে খাদ্যে ভেজালকারীরা জরিমানা নিয়ে আর প্রশ্ন তুলতে পারবে না বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।

বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরের বঙ্গবাজারে আধুনিক খাদ্য পরীক্ষাগার উদ্বোধনের পরে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।

মেয়র বলেন, 'আগে যখন বিভিন্ন কোম্পানির ভেজাল পণ্যের ওপর জরিমানা করা হতো, তখন তারা সরকারের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দিত। তাদের যুক্তি ছিল, আমরা তাদের খাদ্যসামগ্রীর যথাযথ মান পরীক্ষা করেছি কিনা বা করলেও পরীক্ষায় তার সঠিক প্রতিফলন হয়েছে কিনা? ফলে এরকম অনেকগুলো মামলা এখনো ঝুলে আছে। কিন্তু আজকের এই ল্যাবের উদ্বোধনের ফলে এখন থেকে খাদ্যে ভেজালকারীরা তাদের মানহীন পণ্যের বিরুদ্ধে আরোপিত জরিমানা নিয়ে আর কোন ধরণের প্রশ্ন উত্থাপন করতে পারবে না।'

মেয়র তাপস বলেন, 'এই ল্যাবটা আন্তর্জাতিকভাবে অ্যাক্রিডিটেড ল্যাব৷ ফলে এখন থেকে আমরা যেকোনো পণ্যের মান সঠিকভাবে নিরূপণ করতে পারব এবং ভেজাল পণ্যের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারব। তাই ঢাকাবাসীর জনস্বাস্থ্য তথা স্বাস্থ্যকর খাদ্য নিশ্চিত করতে এই আধুনিক খাদ্য পরীক্ষাগারটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।'

ঢাকা দক্ষিণের মেয়র আরও বলেন, যেকোনো খাদ্যসামগ্রীর মাণ নির্ণয়ের জন্য সিটি করপোরেশনকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু খাদ্যসামগ্রীর মাণ নির্ণয়ে আমাদের স্বয়ং-সম্পূর্ণতা ছিল না। আজকের এই ল্যাবের শুভ উদ্বোধনের মাধ্যমে আমরা মাণ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করলাম।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, 'চিকিৎসাবিজ্ঞান বলছে, মানুষের ইমিউনিটি বাড়লে, ভাইরাস সহজেই তাকে কাবু করতে পারে না। আর মানুষের ইমিউনিটি নির্ভর করে ফুড-সাইকেলের ওপর। খাদ্য ভেজাল থাকলে মানুষ সহজেই ছোট-খাটো ভাইরাসে আক্রান্ত হয়।

মন্ত্রী উদাহরণ দিয়ে বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে অধিকাংশ মানুষ প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়ায় তাদের ইমিউনিটি ফল করেছিলো (কমে গিয়েছিলো)। ফলে যুদ্ধের চাইতেও যুদ্ধপরবর্তী সময়ে ছোট-খাটো ভাইরাসের আক্রমণে অনেক বেশি মানুষ মারা গিয়েছিল।'

এ সময় অন্যদের মধ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, ডিএসসিসি'র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ্ মো. ইমদাদুল হক, ডিএসসিসি'র প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (ডা.) শরীফ আহমেদ বক্তব্য দেন। ডিএসসিসি সচিব আকরামুজ্জামানসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য যে এডিবির অর্থায়নে স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতায় 'আরবান পাবলিক এন্ড এনভায়রনমেন্টাল হেলথ সেক্টর ডেভেলপমেন্ট' প্রকল্পের অধীনে ৭টি সিটি করপোরেশনে এই আধুনিক খাদ্য পরীক্ষাগার নির্মাণ করা হচ্ছে। আজকে উদ্বোধন হওয়া আধুনিক পরীক্ষাগারটি তারই একটি।

ঢাকাটাইমস/০২জুলাই/কারই/এমআর